সম্ভাবনাময় ফল ড্রাগন । অতি সম্প্রিতি বাংলাদেশে এই ফলটি চায়াবাদ শুরু হয়েছে । এটি ক্যাকটাস গোত্রের একটি ফল । ড্রাগন ফলের গাছ লতানো ইউফোরবিয়া গোত্রের ক্যাকটাসের মতো; কিন্তু এর কোনো পাতা নেই। ড্রাগন ফলের উৎপত্তিস্থল সেন্ট্রাল আমেরিকা। ড্রাগন ফল প্রচুর আলো পছন্দ করে। এ ফলটির জন্য শুষ্ক ট্রপিক্যাল আবহাওয়া প্রয়োজন। মধ্যম বৃষ্টিপাত এ ফলের জন্য ভালো। উপযুক্ত বৃষ্টিপাতে ফুল ঝরে পড়ে এবং ফলের পচন দেখা দেয়। প্রায় সব ধরনের মাটিতেই ড্রাগন ফল চাষ করা যায়। তবে পানি জমে না এমন উঁচু জমিতে এ ফলের চাষ করা ভালো। উচ্চ জৈব পদার্থসমৃদ্ধ বেলে-দোঁআশ মাটিই এ ফল চাষের জন্য উত্তম।
চাষাবাদ প্রক্রিয়া :জমি ভালোভাবে চাষ দিয়ে গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ৩ মিটার এবং সারি থেকে সারির দূরত্ব ৩ মিটার দিয়ে এ গাছ লাগানো উত্তম। তবে অবস্থাভেদে দূরত্ব কম বা বেশি দেওয়া যেতে পারে । ফলের চারা রোপণের জন্য ২০-৩০ দিন আগে প্রতি গর্তে ৪০ কেজি পচা গোবর, ৫০ গ্রাম ইউরিয়া, টিএসপি ও এমপি ১০০ গ্রাম করে এবং জিপসাম, বোরাক্স ও জিঙ্ক সালফেট ১০ গ্রাম করে দিয়ে গর্তের মাটি ওপরে-নিচে ভালোভাবে মিশিয়ে রেখে দিতে হবে। সার দেওয়ার ২০ থেকে ৩০ দিন পর গাছ লাগানো যাবে। এর পর প্রতিবছরে গাছের জন্য ৪০ কেজি পচা গোবর ঠিক রেখে ইউরিয়া ৫০ গ্রাম, টিএসপি ও এমপি ১০০ গ্রাম করে এবং জিপসাম, বোরাক্স ও জিঙ্ক সালফেট ১০ গ্রাম করে বৃদ্ধিহারে প্রয়োগ করতে হবে। ক্যাকটাস গোত্রের গাছ বিধায় বছরের যেকোনো সময়ই লাগানো যায়; তবে এপ্রিল-সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে লাগানো ভালো।
পরিচর্যা : চারা লাগানোর পর খুঁটি বা পিলার পুঁতে দিয়ে ড্রাগন ফল গাছ বেঁধে দিতে হবে। কেননা ড্রাগনের গাছের কান্ড লতানো প্রকৃতির। ড্রাগন ফল গাছ অতিরিক্ত পানি সহ্য করতে পারে না এবং এ ফল চাষে পানি খুব কম লাগে। শুষ্ক মৌসুমে অবশ্যই সেচ ও বর্ষা মৌসুমে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
জাত : ড্রাগন ফল আছে দুই রকমের টক স্বাদের ও মিষ্টি স্বাদের। মিষ্টি স্বাদের ফলবিশিষ্ট ড্রাগন ফলের আবার তিনটি প্রজাতি রয়েছে : লাল ড্রাগন ফল বা পিটাইয়া। এ প্রজাতির গাছের ফলের খোসার রঙ লাল, শাঁস সাদা। এ প্রজাতির ফলই বেশি দেখা যায়।