
বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য পূর্ণাঙ্গ মেধাতালিকা প্রকাশ বাধ্যতামূলক করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর!
চলতি বছর প্রতিটি কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তির আগে আবেদকারী শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ক্রমানুসারে পূর্ণাঙ্গ মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হবে।
প্রতিটি কলেজকে মেধাতালিকার ভিত্তিতে ও সরকারের বেঁধে দেয়া নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা নিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে হবে। প্রতিটি কার্যক্রমের কপি স্বাস্থ্য অধিদফতরে পাঠাতে হবে। এর ব্যতয় হলে সংশ্লিষ্ট মেডিকেল কলেজের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পূর্ব ঘোষণা অনুসারে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভর্তির আবেদনের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হলেও গোটা ভর্তিপ্রক্রিয়া স্বচ্ছতার ভিত্তিতে সম্পন্ন করতে আবেদনের সময়সীমা বাড়িয়ে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। ১৩ ডিসেম্বর থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু হবে। ভর্তির শেষ দিন ৭ জানুয়ারি। ১০ জানুয়ারি থেকে এমবিবিএস প্রথমবর্ষের ক্লাস শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের (চিকিৎসা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন) শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো.আবদুর রশীদ এ খবরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বেসরকারি মেডিকেল কলেজে স্বচ্ছতার সঙ্গে ভর্তিপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে এবার কঠোর মনিটরিং করা হবে। মেধাতালিকা অনুসারে শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করা হবে। শুধু তাই নয়, কোনো মেডিকেল কলেজে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নির্ধারিত ভর্তি ফিসহ অন্যান্য খরচ ধরে মোট ১৯ লাখ ৪০ হাজার টাকার অতিরিক্ত নেয়া হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতোপূর্বে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো জাতীয় মেধাতালিকার ভিত্তিতে ১৫ নভেম্বর থেকে শিক্ষার্থী ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, ১৮ নভেম্বর থেকে আবেদনপত্র বিতরণ শুরু, ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত আবেদনপত্র গ্রহণ, ২৮ নভেম্বর প্রাপ্ত সব আবেদনের কোটাভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ এবং ২ ডিসেম্বর থেকে ছাত্রছাত্রী ভর্তি প্রক্রিয়া শুরুর কথা ছিল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ‘গত মাসে একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ওই নির্দেশনা না মেনে সরাসরি শিক্ষার্থী ভর্তি করে। এ সংক্রান্ত অভিযোগ আসলে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়। সার্বিকভাবে ভর্তি প্রক্রিয়া স্বচ্ছ রাখতে তাদের সতর্ক করা হয়। মূলত এ কারণে ভর্তির সময় ১০দিন বাড়ানো হয়েছে।’ এই কর্মকর্তা স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা না মানা ওই কলেজের নাম প্রকাশ করেননি।
বর্তমানে রাজধানীসহ সারাদেশে বেসরকারি ৬৯টি মেডিকেল কলেজে আসন সংখ্যা ছয় হাজার ২৫০টি। গত ৬ অক্টোবর সরকারি ও বেসরকারি উভয় মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। চলতি বছর ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনকারী ৮২ হাজার ৮৫৬ জনের মধ্যে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল ৮০ হাজার ৮১৮ জন।
উল্লেখ্য, ১০০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নপত্রে নেয়া পরীক্ষায় পাস নম্বর ৪০। ৪০ নম্বর পেয়ে সরকারি ও বেসরকারি উভয় মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছেন ৪১ হাজার ১৩২ জন।
ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের তিনদিন পরই জাতীয় মেধাতালিকার ভিত্তিতে ফলাফল প্রকাশিত হয়। সে ফলাফলের ভিত্তিতে সরকারি ৩১টি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হন তিন হাজার ৩১৮ পরীক্ষার্থী। গত ২৬ অক্টোবর সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি শেষ হয়। বর্তমানে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ভর্তি চলছে। সরকারি কলেজে ভর্তির পর ১৩ ডিসেম্বর থেকে বেসরকারিতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে।
আরো পড়ুন: