ভালো মার্কসের আত্মকাহিনী প্রসঙ্গঃ বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি

ভালো মার্কসের আত্মকাহিনী
প্রসঙ্গঃ বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি

“”ভাল মার্কসের আত্মকাহিনীঃ প্রসঙ্গ -বাংলা “”শিরোনামে আমার লেখাটা যারা বিভিন্ন পেজ ও গ্রুপে পড়েছেন তাদের জন্য আমার আজকের এ লেখাটা বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি নিয়ে। আগেই বলেছি ভাল মার্কস মানে পাস করা নয়। নিয়োগ পরীক্ষায় ভাল মার্কস মানে আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী থেকে অন্তত ০.৫ মার্কস হলে ও বেশি পাওয়া। কিভাবে আসবে এই মার্কস? অনেকে বলে সব প্রশ্নের উত্তর দিলেই আসবে ভাল মার্কস। কিন্তু এখানে তো যারা পরীক্ষা দিতে যায় তাদের অধিকাংশই প্রায় সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আসে। তাহলে বুঝতে হবে এখানে আপনাকে দেখাতে হবে আপনি অনন্য।

কথায় আছে, “”আগে দর্শনধারী, পরে গুনবিচারী।”” মনে কর আপনি একটা শপিং সেন্টারে গেলেন। সেখানে প্রথমে আপনি একটা কাপড় দেখে ভাল লাগলে তারপর কাপড়ের মান যাচাই করেন? নাকি কাপড়ের মান আগে যাচাই করে তারপর কাপড়টা সুন্দর কি না দেখেন? নিশ্চয় আগে কাপড়টা দেখে ভাল লাগতে হবে,তারপর মান যাচাইয়ের প্রশ্ন। সুন্দরই যদি না লাগল তাহলে আর মান যাচাই করে কি হবে! কেন বললাম কথাটি? আপনার হাতের লেখার প্রতি ইঙ্গিত দিতে। যাদের হাতের লেখা সুন্দর তারা সহজেই শিক্ষকের দৃষ্টি আকর্ষন করতে পারবেন। এটা তাদের প্লাস পয়েন্ট। তবে যারা ভাবছেন তাদের হাতের লেখা সুন্দর না, তাদের দুঃশ্চিন্তার কোন কারণ নেই। পরীক্ষার হাতের লেখা সৌন্দর্যের উপর মার্কস দেয়ার কোন বিধান নেই। যাদের হাতের লেখা একটু অস্পষ্ট তারা চেষ্টা করবেন যথেষ্ট ফাকা জায়গা রেখে লেখার জন্য। আপনার হাতের লেখা খুব সুন্দর না, এটা তেমন কোন সমস্যাই না। বর্তমান যারা সম্মানীত বিসিএস ক্যাডার আছেন তাদের ও অনেকের লেখা খুব যে সুন্দর ছিল তাও না। কিন্তু লেখা কোনভাবেই অস্পষ্ট, অপাঠ্য হওয়া যাবেনা। তবে লেখা শুধু সুন্দর হলেই সব কাজ শেষ নয়,লেখাটা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার মত মার্কস আনতে চাইলে অবশ্যই মানসম্মত হতে হবে।
এবার আসুন আসল জায়গায়। মানসম্মত লেখা মানে কী? যে লেখায় সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সকল উপাদান বিদ্যমান থাকবে। যেমন ধরুন পরীক্ষায় প্রশ্ন আসল- “”নারী নির্যাতন দূরীকরন ও নারীর ক্ষমতায়নে বর্তমানে বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থান মুল্যায়ন কর “” এই প্রশ্নটির উত্তর দিতে গিয়ে একজন অনেক কিছুই লিখে দিল। এক কথায় যত ভালভাল লেখা যায় সব লিখল। কিন্তু কোন তথ্য উপাত্ত দিলনা। অন্যজন লিখতে গিয়ে লেখায় সংবিধান থেকে নারী বিষয়ক অনুচ্ছেদগুলো আনল। সেগুলোর ব্যাখ্যা দিল। বিগত ৫ বছরের নারী নির্যাতনের পরিসংখ্যান দেখিয়ে একটা চার্ট দিল। ৮ মার্চ নারী দিবসে আন্তর্জাতিক জার্নালে নারীবাদী লেখকদের কিছু উক্তি তুলে ধরল। একইভাবে বাংলাদেশে নারী দিবসের ক্রোড়পত্রে প্রকাশিত কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির মতামত তার লেখায় আনল। এরপর নারীর ক্ষমতায়নে বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভায় কতজন নারী মন্ত্রী আছে, সাংবিধানিক কোন কোন পদে নারীদের অবস্থান আছে তাও উল্লেখ করল। এরপর বর্তমান সরকারের নারী বিষয় বিভিন্ন কর্মকান্ড চার্ট আকারে তুলে ধরল। তার সম্পুর্ন লেখার মাঝে এসব উপাদান ছিল। এখন আপনিই বলুন কাকে বেশি মার্কস দিবেন? যার লেখায় চার্ট,আন্তর্জাতিক জার্নালের রেফারেন্স দেয়া উক্তি,দেশীয় বিশিষ্ট ব্যক্তির উক্তি,সংবিধানের সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদ,সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের চার্ট ছিল তাকেই তো বেশি মার্কস দিবেন। আর এ ধরনের লেখাকেই তো মানসম্মত লেখা বলে।সবই তো বুঝা গেল। কিন্তু এত তথ্য পাব কোথায়! এটাই এখন অনেকের প্রশ্ন। অনেক আগে আমার একটা লেখায় বলেছিলাম, যেখানে লেখার কিছু নেই সেখানে সংবিধান আছে। বাংলাদেশ বিষয়াবলি লিখতে গেলে আপনি প্রায় সব জায়গায় সংবিধান আনতে পারবেন। যেকোন টপিক লেখার সময় আপনি সংবিধানের সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদ উল্লেখ কর তাহলে লেখার মানটা অনেক বেড়ে যাবে। তাছাড়া বাকি যত তথ্য, উপাত্ত,ডাটা পরিসংখ্যান লাগবে সব অর্থনৈতিক সমীক্ষার সাহায্য নিন। একটা অর্থনৈতিক সমীক্ষায় আপনার যেকোন বিষয়ে পপরিসংখ্যান, ডাটা দেয়া আছে। এটি প্রতিবছর প্রকাশিত হয়। তাছাড়া যারা নিয়মিত দৈনিক পত্রিকা পড়েন,টার প্রায় প্রতিদিন পত্রিকায় কোন না কোন তথ্য,ডাটা, পরিসংখ্যান ইত্যাদি পেয়ে যাবেন বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীতে লেখার জন্য।
এছাড়া বিভিন্ন কলামিস্টরা যেসব বিষয়ে লিখেন সেখান থেকে তাদের নাম ব্যবহার করে আপনি কারণ ড. শাহদীন মালিক সংবিধান বিশেষজ্ঞ, তিনি যে অর্থনীতি নিয়ে কখনো কলাম লিখবেন না এটা পরীক্ষক ভালোভাবেই জানেন। আর আপনার চাপাবাজি ধরতে পারলে পরীক্ষকের আপনার খাতা সম্পর্কে খুব নেতিবাচক ধারনার জন্ম নিবে। এজন্য আগে থেকেই জেনে রাখুন কোন কলামিস্ট কোন বিষয়ে লিখেন। প্রয়োজনে তাদের নাম এখন থেকেই প্রস্তুত করে রাখুন এবং তাদের নামের পাশে লিখে রাখুন তারা কোন বিষয়ে লিখেন সেটা। এরপর পরীক্ষায় যে বিষয়ে প্রশ্ন লিখতে বলবে আপনি সে বিষয়ের কলামিস্টের নাম উল্লেখ করে উদ্ধৃতি দিতে পারেন।
আর কোন প্রশ্ন অবশ্যই না লিখে আসা যাবে না। প্রতিটি প্রশ্ন অবশ্যই লিখে আসতে হবে। ধরুন আপনি কোন একটা বিষয়ে ১০মার্কসের প্রশ্ন আসল আপনি সেটা সম্পর্কে কিছুই জানেন না এবং আপনি প্রশ্নটা ছেড়ে দিয়ে আসলেন। তাহলে ঐ ১০ মার্কসে আপনি পাচ্ছেন শুন্য। কিন্তু একটু খেয়াল করবেন যদি আপনি ভাসা ভাসা ধারনার উপর অল্প একটু লিখে দিয়ে আসতে পারেন তাহলে শিক্ষক হয়তো খাতাটার ঐ প্রশ্ন দেখে বিরক্ত হবেন,ধরেই নিবেন আপনি এ বিষয়ে তেমন জানেন না। অতঃপর বিরক্ত হয়ে সেখানে ১ মার্কস বসিয়ে দিল। গুরু,আপনার চালাকি তো এখানেই! যেখানে আপনি প্রশ্নটা না লিখে আসতে চেয়েছিলেন,সেখানে শুধু লেখার কারনেই অন্তত সম্মানিত শিক্ষকের বিরক্তিকর ১মার্কস পেলেন। আর এখানে তো প্রতি ০.৫ মার্কসের ও যুদ্ধ করতে হয়। অর্থাৎ অজানা প্রশ্ন লিখে আসলে আপনি অন্তত ০.৫ মার্কস পাওয়ার একটা সুযোগ হলেও সৃষ্টি করে দিয়ে আসতে পারলেন। আর না লিখলে তো সে সুযোগটা ও নাই।
অতএব তৈরী রাখুন নিজেকে,প্রস্তুত কর নিজের অস্ত্র,এগিয়ে যান বিজয়ী বেশে বিজয়ের মঞ্চে।
“”আজকের পরিশ্রম আগামী সফলতার মুল

Leave a Reply

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline