৩৮ তম বিসিএস প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা প্রস্তুতি
ভূ -রাজনীতি/অর্থনীতি
যুক্তরাষ্ট্র-চীন মুখোমুখি
.
বিরোধপূর্ণ দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে ফের মুখোমুখি যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। সাগরে বেইজিংকে চেপে ধরতে সামরিক শক্তি দেখাচ্ছে ওয়াশিংটন। গত ৫ মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো দক্ষিণ চীন সাগরে রণতরী নিয়ে অবতরণ করলেন মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী অ্যাশ কার্টার। এর মাধ্যমে অঞ্চলটিতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা কতটা সেই বার্তাই দেওয়া হলো বেইজিংকে। কারণ, মিত্র ফিলিপাইনও অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা ফিরে আসুক। সঙ্গে ভারত ঘাঁটি খুলে দিয়েছে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমানের জন্য।
এশিয়ায় এক সপ্তাহ ধরে সফর করলেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাশ কার্টার। ভারত ও ফিলিপাইনের সঙ্গে সারলেন দুটি সামরিক চুক্তি। পরিদর্শন করলেন দুটি বিমানবাহী রণতরী। আর এভাবে বেইজিংকে সতর্কবার্তা দেওয়া হলো যে, অত্র অঞ্চলে চীনের উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে প্রতিহত করতে প্রেসিডেন্ট ওবামার প্রশাসন আরও বেশি সামরিক শক্তির ওপর নির্ভর করছে।
মূলত কার্টারের সফরের মাধ্যমে নতুন পেশিশক্তির প্রদর্শন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাজি খেলা। একদিকে এটি বার্তা যে, দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিংয়ের হস্ত প্রসারণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের সঙ্গে আছে। অন্যদিকে চীনা নেতৃত্বকেও ভয় ধরিয়ে দেওয়া যে বেইজিংয়ের উত্থান রোধে ওয়াশিংটন অনেকটাই উদ্যোগী।
দক্ষিণ চীন সাগরসহ ওই অঞ্চলের প্রবাল প্রাচীর ও ভূমির কিছু অংশের মালিকানা দাবি করে চীন। তাই দক্ষিণ সাগরে সামরিক শক্তি সম্প্রসারণসহ চীন একটি কৃত্রিম দ্বীপ নির্মাণ শুরু করেছে। কৃত্রিম দ্বীপে একটি বিমান ঘাঁটি নির্মাণেরও পরিকল্পনা করেছে তারা। তবে এ বিষয়ে ফিলিপাইনের সঙ্গে বিস্তর মতবিরোধ রয়েছে চীনের। মিত্র দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল, তারা যেন দক্ষিণ সাগরে কৃত্রিম দ্বীপ নির্মাণে চীনকে নিবৃত করে। যুক্তরাষ্ট্রেরও অভিযোগ, চীন দক্ষিণ সাগরে সামরিক সম্প্র্রসারণ চালাচ্ছে। ফিলিপাইনের ওই আহ্বানের চেয়ে নিজেদের স্বার্থেই যুক্তরাষ্ট্রের সেনা ও যুদ্ধবিমান ফিলিপাইনের সঙ্গে সাগরে যৌথ মহড়ায় অংশ নেয়।
সম্প্রতি দক্ষিণ সাগরে রণতরী নিয়ে ভ্রমণ করেন চীনের সবর্োচ্চ সামরিক কর্মকর্তা। তিনি স্পার্টা দ্বীপ এলাকা ভ্রমণ করেন বলে বেইজিং খবর প্রকাশের এক সপ্তাহ পর গত শুক্রবার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী কার্টার মার্কিন সামরিক শক্তির প্রদর্শন হিসেবে একটি নিমিৎজ শ্রেণীর পরমাণু শক্তিচালিত হেলিকপ্টারে চড়ে দক্ষিণ চীন সাগরে রণতরীতে নামেন। ওই রণতরী চীনের দাবিকৃত জলসীমা ঘেঁষে চলছিল। এর আগে ফিলিপাইনের সঙ্গে ১১ দিনের যৌথ মহড়া শেষ করে যুক্তরাষ্ট্র। মহড়া শেষে জানানো হয়, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য সেখানে কিছুসংখ্যক মার্কিন সেনা অবস্থান করবে। এক সপ্তাহ আগে কার্টার ভারতীয় রণতরীতে ভ্রমণ করেন। এই প্রথমবারের মতো কোনো মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতীয় রণতরীতে চড়লেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, ভারতের সামরিক প্রযুক্তিতে সহায়তা দেওয়ার।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের এসব কর্মকাণ্ডকে উস্কানি বলে অভিযোগ চীনের। চীনের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিরোধপূর্ণ অঞ্চলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে উত্তেজনা উস্কে দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন বিমানের চলাচল এবং অন্যান্য সামরিক তৎপরতা সমগ্র অঞ্চলকে সামরিকীকরণ করতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়।
তবে এ অভিযোগ নাকচ করে কার্টার বলেন, রণতরীর উপস্থিতিকে উস্কানি হিসেবে দেখা চীনের উচিত হবে না। আমরা এখানে দশকের পর দশক ধরে আছি ।
১৬ এপ্রিল, সমকাল