লিখিত প্রস্তুতি :: আন্তর্জার্তিক বিষয়াবলি (New)
:: সম্ভাব্য প্রশ্ন (বড় / সংক্ষিপ্ত / টিকা)
১। GATT কি? গ্যাট বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার পুর্বসরি – ব্যাখ্যা কর
২। বিশ্ব বাণিজ্য সংগঠন (WTO) এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ হলো উল্লেখ কর
৩। বিশ্ব বাণিজ্য সংগঠন (WTO) এর বাণিজ্য নীতি কি? WTO এর কার্যাবলী আলোচনা কর
৪। স্বল্পোন্নত দেশসমূহ ও WTO এবং উন্নত বিশ্ব ও WTO এর মধ্যে সম্পর্ক আলোকপাত কর
৫। WTO এর সাফল্য ও ব্যর্থতা মূল্যায়ণ কর
৬। ট্রিপস চুক্তি (TRIPs) সম্পর্কে যেটি জানুন লিখুন।
৭। গ্যাট চুক্তি (GAAT) সম্পর্কে যেটি জানুন উল্লেখ লিখুন।
৮। প্রিলি, সংক্ষিপ্ত বা
টীকার জন্য সহায়ক কিছু তথ্য
———-
.
:: বিশ্ব বাণিজ্য সংগঠন (WTO)
বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার সচিবালয় জেনেভায় অবস্থিত এবং এর প্রধান একজন মহাপরিচালক।বিভিন্ন ধরনের বিরোধ নিষ্পত্তিতে ও বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার সচিবালয় সহায়তা করে থাকে। তবে সচিবালয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোন ক্ষমতা নেই।WTO এর সবোর্চ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত গ্রহনের দায়িত্ব মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের (Council of Ministers) ওপর ন্যস্ত । সদস্যদের সর্বসম্মতিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন (Council of Ministers) অন্তত দুবছরে একবার মিলিত হয়।
.
:: প্রিলি, সংক্ষিপ্ত বা
টীকার জন্য সহায়ক কিছু তথ্য:
* এটি বিশ্বের বাণিজ্য সংক্রান্ত নীতি প্রবর্তন এবং সদস্য রাষ্ট্র বা পক্ষ সমূহের মধ্যকার মতপার্থক্য দূর করতে সাহায্য করে থাকে
* প্রতিষ্ঠিত হয় = ১ জানুযারী, ১৯৯৫ (প্রতিষ্ঠাকালীন উরুগুয়ে রাউন্ডেই সদস্য হয় = ১২৩)
* বাংলাদেশের সদস্যপদ লাভ = ১০ জানুয়ারী, ১৯৯৫
* বর্তমান মহাপরিচালক = রবার্তো আজেভেদো
* সদর দপ্তর = জেনেভা, সুইজারল্যান্ড
* দাপ্তরিক ভাষা = ৩ টি (ইংরেজী, ফ্রেঞ্চ, স্পেনিশ)
* বর্তমানে মোট সদস্য = ১৬২ টি
* ‘উরুগুয়ে রাউন্ড বাণিজ্য সমঝোতার’ মাধ্যমে বিশ্ব বাণিজ্য সংগঠন (WTO) গঠিত হয়
* উরুগুয়ে রাউন্ডের সংলাপ হয়েছিল = ৮ বত্সর (১৯৮৬-৯৪)
* WTO এর পুর্বসরি = GATT or GATT উত্তরাধিকারী WTO
* GATT WTO তে রূপান্তরিত হয় = ১৯৯৫ সালে
.
.
:: GATT (General Agreement on Tariffs and Trade)
* গ্যাট মূলত কোন বাণিজ্যিক সংগঠন নয়, এটা একটা বাণিজ্যিক চুক্তি।
* ১৯৪৭ সালে জেনেভাতে GATT চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
* উদ্দেশ্য : বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন কর্মসূচী প্রণয়ন করা এবং মুক্তবাজার অর্থনীতিকে গতিশীল করা।
.
.
:: WTO এর পুর্বসরি GATT
২য় বিশ্বযুদ্ব পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রসমূহের পারস্পরিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক নির্ধারণের প্রয়োজন থেকেই GATT জন্মলাভ করে। গ্যাট চুক্তি স্বাক্ষরের পর থেকে চুক্তিটিকে একটি বহুপাক্ষিক বাণিজ্য সংস্থায় রূপান্তর করার প্রয়োজন দেখা দেয়। এ প্রয়োজনেই ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত গ্যাটের কর্তৃত্বকে আরো শক্তিশালী ও সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে চুক্তিটির আলোচনার মাধ্যমে বিশ্ববাণিজ্য সংগঠন (WTO) গঠনের উদ্যোগ শুরু হয়। অবশেষে ১৯৮৬ সালে গ্যাটের উরুগুয়ে রাউন্ড আলোচনার মধ্য দিয়েই চুক্তিটি বিশ্ববাণিজ্য সংস্থায় রূপান্তর লাভ করে। ১৯৯৫ সালের ১ জানুয়ারী GATT আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করে।
.
.
:: লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ হলো-
মূল লক্ষ্য:
* বিশ্ব বাণিজ্যের প্রসার করা
* মুক্ত বাণিজ্যের প্রসার করা
* বাণিজ্যের অ- শুল্ক বাধা সমূহ দূর করা
* বাণিজ্য আলোচনার ফোরাম হিসেবে বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তি করে।
.
পারস্পরিক সহায়তা নীতি:
এ নীতির অর্থ হলো বাণিজ্যের বাধাসমূহ হ্রাস করে বাণিজ্যের ভারসাম্য রক্ষা করা অর্থাৎ এক দেশকে যখন শুল্ক ক্ষেত্রে কোন সুবিধা প্রদান করা হবে তখন সেই দেশেও এর বিনিময়ে সুবিধা প্রদান করবে। এ নীতি যদিও পারস্পরিক লেনদেনের উপর নির্ভরশীল বলে মনে হয় তবুও এটি সবদেশের জন্য সুবিধাজনক নয়। এটা উন্নত দেশের পারস্পরিক বিনিময়ের ক্ষেত্রে যতটুকু সুবিধাজনক অনুন্নত দেশের ক্ষেত্রে ততটুকুই অসুবিধাজনক। যেমন: অনুন্নত দেশসমূহ কাঁচামাল উৎপাদনকারী অপরদিকে উন্নত দেশগুলো তৈরি দ্রব্য উৎপাদনকারী। আবার উন্নত দেশসমূহ তৈরী করে অধিক দামে তৃতীয় বিশ্বে বেশী দামে বিক্রয় করতে পারে। ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য উন্নত দেশগুলো দ্বারা মূল্য নিয়ন্ত্রিত হয়। সুতরাং দেখা যাচ্ছে পারস্পরিক সহায়তা নীতির মাধ্যমে তৃতীয় বিশ্ব প্রকৃতপক্ষে অগ্রসর হতে পারছে না।
.
বৈষম্যমূলক আচরণ না করা:
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নীতির মূল কথা হলো বৈষম্যমূলক নীতি অবলম্বন না করা, আন্তর্জাতিক বিনিময় যেন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতার ওপর নির্ভরশীল না হয়ে পড়ে।
বাণিজ্য বাধা দূর করা: আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যে সকল বাধা রয়েছে সেসব বাধা চিহ্নিত করে অপসারণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা গ্যাটের অন্যতম প্রধান নীতি।
.
শুল্ক কমানো:
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে শুল্ক সংক্রান্ত বাধাসমূহ কমাতে হবে। এক্ষেত্রে সকল দেশের সুবিধা সমান হতে হবে। অর্থাৎ সকল দেশের বাণিজ্য শুল্কের পরিমাণ যেন একই রকম হ্রাস পায়।
.
Most Favoured Nation (MFN):
যুদ্ধোত্তর বিশ্বের গ্যাট আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের দিক নির্দেশকে নীতি হিসাবে Most Favoured Nation (MFN) নীতি প্রবর্তন করে। এ নীতি বিভিন্ন রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে সমতা স্থাপন করে। তাই এই চুক্তি সদস্যভূক্ত নির্দিষ্ট কোনো দেশকে কোনো বিশেষ সুযোগ সুবিধা প্রদান করে না। কেবলমাত্র চুক্তিভূক্ত দেশের সামগ্রীকে একই পর্যায়ে বিবেচনা করে।
.
এছাড়াও আরও কিছু লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য রয়েছে।যেমন-উরুগুয়ে রাউন্ড চুক্তির বিভিন্ন বিষয়ের বাস্তবায়ন কাজে তদারকি করা। অধিকতর ন্যায়ভিত্তিক মুক্ত বাণিজ্যের পরিবেশ সৃষ্টি করা। বাজারগুলোতে ক্রমবর্ধমান প্রবেশাধিকার এবং সম্ভাব্য প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা।
.
.
:: WTO এর কার্যাবলী:
বিশ্ববাণিজ্য সংগঠন WTO ১৯৯৫ সালে কার্যক্রম শুরু করে। WTO ই একমাত্র বিশ্ব সংগঠন যেটি বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয়াবলী আলোচনা করে। শুধু আলোচনাই করে না এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করে। কার্যাবলী সমূহ হচ্ছে, বিভিন্ন দেশের বাণিজ্য চুক্তি পর্যালোচনা করে এবং সেগুলো সংগঠিত করে। সদস্য দেশগুলোর মাঝে বহুপাক্ষিক বাণিজ্য আলোচনা করে, একটি ফোরাম হিসাবে দায়িত্ব পালন করা। রাষ্ট্রসমূহের বাণিজ্য সংক্রান্ত সমস্যাগুলো সমাধান করে থাকে। এ সকল সমস্যা যেন সংঘাতে রূপ না নেয় সে বিষয়ে গুরুত্ব প্রদান করে থাকে। সদস্য রাষ্ট্রসমূহের বাণিজ্য নীতি পর্যালোচনা করে, প্রসারিত করে এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারনে স্বচ্ছতা এবং সহযোগীতা নিশ্চিত করে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য নীতি তৈরী করার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দেশ গুলাকে সাহায্য করে। উন্নয়নশীল, অনুন্নত এবং স্বল্প আয়ের দেশসমূহকে কারিগরি সহায়তা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিয়ম শৃঙ্খলার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে। এছাড়াও অর্থনৈতিক গবেষণা এবং বিশ্লেষনেরও একটা কেন্দ্র হিসাবে কাজ করে। এর মাধ্যমে নিয়মিত বার্ষিক প্রকাশনা এবং গবেষণার রিপোর্টে নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশ্ব বাণিজ্যিক চিত্র তুলে ধরা হয়। অন্যান্য বহুজাতিক অর্থনৈতিক সংগঠন যেমন- বিশ্বব্যাংক, আই.এম.এফ এর সাথে গভীর সহযোগীতার সম্পর্ক রক্ষা করে।
.
.
:: WTO এর বাণিজ্য নীতিঃ
WORLD TRADE ORGANIZATION এর নিজস্ব কিছু বাণিজ্য নীতিমালা আছে। নিম্নে সেগুলো উল্লেখ করা হলো-
.
NON DISCRIMINATION:
WTO এর সদস্য দেশগুলোর মধ্যে ২ টি প্রধাান বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়। প্রথমটি হলো অধিক ক্ষমতাশালী জাতিগুলোর শাসন এবং দ্বিতীয়টি হলো জাতীয় পরামর্শ প্রদান নীতি। নিয়ম আছে যে, সদস্য দেশগুলো কোটামুক্ত, শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা ভোগ করবে। WTO এর MFN (MOST FAVOURED NATIONS) RULE অনুযায়ী যেকোন সদস্য রাষ্ট্র তার ইচ্ছানুযায়ী অন্য যেকোন সদস্য দেশের সাথে বাণিজ্য সুবিধা ভোগ করবে এক্ষেত্রেকোন প্রকার বৈষম্য করা হবে না। WTO এর সকল সদস্য একটি নিশ্চিত ও একই অবস্থান থেকে বাণিজ্য করবে। তাছাড়া পরামর্শ প্রদান নীতির ক্ষেত্রেও দেখা যায় যে, দেশের অভ্যন্তরীণ চিকিৎসা সামগ্রীর ক্ষেত্রে বিদেশী সামগ্রীকে বাজারে ঢুকিয়েছে শুল্ক মুক্তভাবে।
Reciprocity: অধিক ক্ষমতাশালী জাতিগুলোর শাসনের কারণে অবাধ বাণিজ্যের সীমাবদ্ধতা নিয়ে একটি আকাক্সক্ষা প্রতিফলিত হয় । যাতে প্রত্যেক সদস্য রাষ্ট্রের বিশ্ব বাজারে প্রবেশাধিকার অর্জনের ক্ষমতা থাকে। প্রত্যেক সদস্য দেশসমূহ পারস্পারিক সহযোগিতা করবে অর্থ ও প্রযুক্তি দিয়ে । আলোচনার মাধ্যমে অধিকতর ভালো সমাধান ও উপদেশ দিবে।
.
Binding and Enforceable Commitment:
বহুপাক্ষিক বাণিজ্যিক আলোচনার অন্যতম বিষয় ছিলো- বিনা শুল্কে সদস্য দেশসমূহ বাণিজ্য করবে এতে কোন বাঁধা বা সীমাবদ্ধতা থাকবেনা। সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে এমন কোন বিষয় থাকবে না যেটি আপোষ বা আলোচনার মাধ্যমে তার সমাধান করা যাবে না। কোন দেশ যদি ক্ষতিসাধন করে তাহলে ঐ দেশের সম্পূর্ণ ক্ষতি পূরণ দিতে হবে।
.
Transparency:
সদস্য রাষ্ট্রগুলোর বাণিজ্য নীতি স্বচ্ছ থাকবে এবং জবাবদিহিতা থাকবে। প্রত্যেক দেশ তার প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ব্যবসা-বাণিজ্য এগুলো অপরাপর দেশকে প্রভাবিত করবে। WTO বাণিজ্য নীতিমালার মাঝেমাঝে পরিবর্তন সাধন করা হয়। সদস্য দেশগুলোর আলোচনায় বিভিন্ন দেশের বার্ষিক বাণিজ্য প্রতিবেদন দেখা হয় ও ভবিষ্যদ্বানী করা হয় এবং আমদানী-রপ্তানীর দিক তুলে ধরা হয়।
.
WTO বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। এখানে তিন ধরনের দিক নির্দেশনা দেয় আছে। ১. অর্থনীতির বাইরে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি দেশ বার্ষিক কি পরিমাণ লক্ষ্য অর্জন করবে তা ঠিক করা। ২. উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করা। ৩.অর্থনৈতিক কারণে বাণিজ্যিক হস্তক্ষেপের অনুমোদন দেওয়া।
.
.
:: বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার চুক্তিসমূহ:
বিশ্ববাণিজ্য সংগঠন প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রায় ৬০ টিরও অধিক চুক্তি সম্পাদন করেছে। যেটি আন্তর্জাতিক আইনগত দলিলের মর্যাদা পেয়েছে। সদস্য দেশ সমূহকে অবশ্যই উক্ত চুক্তি সমূহে স্বাক্ষর ও অনুমোদন করতে হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য চুক্তি সমূহ হলো: Agreement on Agriculture (AoA), The General Agreement on Trade in Services, Trade-Related Aspects of Intellectual Property Rights Agreement (TRIPs), Agreement on the Application of Sanitary and Phytosanitary Measures, Agreement on Technical Barriers to Trade (TBT)
.
GATS (The General Agreement on Trade in Services):
১৯৮৬ সালে উরুগুয়ে পর্যায়ের পূর্বে সেবা খাত যেমন: জনপ্রশাসন, স্বাস্থ্য, পোস্টাল সার্ভিস, শিক্ষা এ জাতীয় বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অন্তর্ভূক্ত ছিল না। অনেক সেবা আভ্যন্তরীণ হিসাবে বিবেচিত হত যেটি দেশের সীমানার বাইরে যাওয়া কঠিন ছিল। উরুগুয়ে পর্যায়েই বিশ্ববিদ্যালয় সমূহকে আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। পরে ইন্টারনেটের উন্নতির কারণে দূরে শিক্ষা গ্রহণ, প্রকৌশল, স্বাস্থসেবা, স্থাপত্য বিদ্যা ইত্যাদি ক্ষেত্রে সারাবিশ্বব্যাপী একটি নেটওয়ার্কের আওতায় এসে যায়। যার ফলে সেবা খাত সমূহ দ্রুত আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের আওতায় আসে। তারা সিদ্ধান্ত নেয় চার ধরনের দ্রব্যাদি দেশীয় সীমানার বাইরে বাণিজ্যের জন্য অনুমোদন প্রদান করা হয়। যথা:
ধরণ ১: Cross border supply: এ ধরনের সেবা কোন সদস্য দেশের ভূখন্ড হতে অন্য কোন সদস্য দেশের ভূখন্ডে রপ্তানি করতে পারবে। এক্ষেত্রে সেই বিক্রেতাকে ক্রেতা দেশে উপস্থিত না থাকলেও চলবে।
ধরণ ২: Consumption abroad: এ ধরনের সেবা কোন সদস্য দেশের ভূখন্ড হতে অন্য কোন সদস্য ভুক্তা তা ক্রয় করতে পারবে। এক্ষেত্রেও বিক্রেতার উপস্থিতি না থাকলেও চলবে।
ধরণ ৩: Commercial presence: যে সকল দেশে সেবা সমূহ সরবরাহ করবে সেখানে সরবরাহকারীর উপস্থিতি থাকা শর্ত।
ধরণ ৪: Presence of a natural person: একজন সাধারণ ব্যক্তি হিসাবে সরবরাহকারী সরবরাহকৃত দেশের ভূখন্ডে উপস্থিত থাকবে।
সেবার খাত : সেবার খাত হিসাবে বিশ্ববাণিজ্য সংগঠন “” W /120 list”” এর কথা উল্লেখ করে।
.
TRIPs (Trade- Related Aspects of Intellectual Property Rights Agreement):
মেধাস্বত্ব অধিকারের এটি ডওচঙ ও টঘঈঞঅউ এর মত আন্তর্জাতিক ফোরামে বহু বছর ধরে আলোচনা পর্যালোচনা চলছিল। উন্নত দেশ সমূহের চাপের মুখে উরুগুয়ে রাউন্ডে এ এটি গ্যাটের আলোচনায় অন্তর্ভূক্ত হয়। বুুদ্ধিভিত্তিক (Intellectual Property)বলতে বুঝায় কোন ব্যক্তি বা কোম্পানী । উদ্ভাবিত নতুন সামগ্রী, ডিজাইন বা প্রযুক্তি; আর অধিকার বলতে বুঝায় উদ্ভাবনকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের রয়্যালিটি পাবার একচেটিয়া অধিকার। সাধারণত: এই অধিকার প্রদান করা হয় প্যাটেন্ট (প্রযুক্তি বা ডিজাইন উদ্ভাবনকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করা বিশেষ প্রতীক বা চিহ্ন), গ্রন্থস্বত্ব বা ট্রেডমার্ক রেজিস্ট্রেষনের মাধ্যমে। উরুগেুয়ে রাউন্ডে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশসমূহের মেধাস্বত্ব সংক্রান্ত বিষয়ে দুই ধরনের প্রস্তাব ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত উন্নত দেশসমূহের চাপের মুখে তাদের প্রস্তাবটিই পাশ হয়।
.
.
:: উন্নত বিশ্ব ও WTO:
উন্নয়শীল বিশ্বের অনেক বিশেষজ্ঞ সাধারনভাবে এটা ধারনা করে থাকেন যে পুজিবাদি বিশ্ব তথা পশ্চিমা বিশ্ব গোটা বিশ্ববাজার দখলের একটা হীন কৌশল হিসেবে মুক্তবাজার অর্থনীতির তত্ত্ব বাস্তবায়নের লক্ষ্যে GATT বা WTO প্রতিষ্ঠা করেছে। উন্নত দেশসমূহ আধুনিক প্রযুক্তিতে উৎপাদন করে থাকে বলে তাদের দ্রব্যের গুনগত মান যেমন ভাল তেমনি মূল্যে ও প্রতিযোগিতা মূলক। তা সত্ত্বেও সমাজতান্ত্রিক দেশসমূহ অনেক উন্নয়নশীল দেশ সংরক্ষন মূলক নীতি অবলম্বন করে কোন রকম উন্নত বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে ছিল। কিন্তু উন্নত দেশসমূহ বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন আর্ন্তজাতিক সংগঠন কে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে নানা দিক দিয়ে সমাজতান্ত্রিক এবং সংরক্ষন নীতি অবলম্বনকারী উন্নয়নশীল দেশসমূহের ওপর বাজার উন্মুক্ত করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে থাকে। এভাবে অনেক দেশ বলা চলে বাধ্য হয়ে তাদের বাজার উন্মুক্ত করে। ফলে তাদের দেশসমূহে স্থানীয় শিল্পসমূহ ডুবতে বসেছে। এবং দেশের বাজার বিদেশী পণ্যের বাজারে পরিনত হয়েছে। বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার আওতায় যে TRIPS (Trade Related Intellectual Property Rights) চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে তা ও ধনী দেশসমূূহের পক্ষে পক্ষপাতমুলক।এ চুক্তি দরিদ্যের স্বার্থনক্ষার ক্ষেত্রে কোন ভূমিকা রাখেনি। TRIPS এর আওতায় প্যাটেন্ট করা দ্রব্য সামগ্রীর ক্ষেত্রে উৎপাদনকারী অহেতুক অতিমাত্রায় মূল্য নির্ধারন করে থাকেন, তাও সর্ম্পুন্ন উন্নয়নশীল দেশসমূহের ভোক্তাদের প্রতিকূলে।
.
.
:: স্বল্পোন্নত দেশসমূহ ও WTO:
স্বল্পোন্নত দেশসমূহ হচ্ছে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে দূবর্লতম অংশ । ভয়াবহ দারিদ্য, দুবর্ল অর্থনীতি, অনুন্নত প্রতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা এবং মানবসম্পদের অপ্রতুলতা স্বল্পোন্নত দেশের সাধারন চিত্র হিসেবে হিসেবে বিবেচনা করা হয়। WTO চুক্তিসমূহের প্রত্যেকটিতে অবশ্য স্বল্পোন্নত দেশসমূহের জন্য বিশেষ সুবিধা রাখা হয়েছে। বিশেষ সুবিধা হলো: ১.চুক্তি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দীর্ঘ সমূহের সুবিধা প্রদান। ২.এসব দেশের বাণিজ্যিক সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহন। ৩.এসব দেশর WTO সংক্রান্ত কার্যাবলী বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরীতে সাহায্য করা। ৪.কতিপয় বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যহতি প্রদান। ১৯৯৭ সালে Trade Initiatives and technical assistance for least developed countries সংক্রান্ত একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় বাণিজ্যিক ক্ষমতা বৃদ্ধি কল্পে একটি সমন্বিত কাঠামো তৈরি করা হয়। এ উদ্দেশ্য ৬টি আন্তসরকার সংস্থাকে অর্ন্তভূক্ত করা হয়। স্বল্পোন্নত দেশসমূহ সংক্রান্ত সাব কমিটির সহায়তায় Trade and Development সংক্রান্ত কমিটি স্বল্পোন্নত দেশসমূহের প্রয়োজন সমূহ তদারক করে থাকে। এ কমিটির দায়িত্ব হচেছ -চুক্তিসমূহ বাস্তবায়ন, কেীশলগত সহযোগিতা , বিশ্ববানিজ্য সংস্থায় অধিক মাত্রায় অংশগ্রহন নিশ্চিত করা।
.
WTO বিশ্বের দেশগুলোর বানিজ্য স্বার্থ রক্ষায় সম্পূর্নরুপে ব্যর্থ হচেছ । কারন WTO তে অর্ন্তভূক্তিতে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো বিভিন্ন ধরনের চ্যালেজ্ঞের মুখোমুখি হচ্ছে। যেমন-স্বল্পোন্নত দেশসমূহের উৎপাদিত পণ্য সামগ্রীর উৎপাদন ব্যয় তুলনামূলক বেশি হওয়ায় বিদেশী বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা এদের জন্য কঠিন। Agreement on Agriculture (AoA)এ চুক্তিতে আভ্যন্তরীণ ভর্তুকির বিধান থাকায় উন্নত দেশ সমূহ তাদের কৃষি উৎপাদনের জন্য বড় অংকের ভর্তুকি প্রদান করে যেটি উন্নয়নশীল দেশ দিতে পারে নি। উরুগুয়ে রাউন্ড চুক্তির মাধ্যমে স্বল্পোন্নত দেশসমূহের জন্য বাণিজ্য সুবিধা সম্প্রসারনের যে সম্ভাবনা ছিল, সরবরাহ সংক্রান্ত সমস্যা তাকে সম্পূর্নরূপে নষ্ট করে দিয়েছে। ফ্রি লেবার বা দরিদ্র দেশের সুলভ শ্রমিকদের শিল্পোন্নত দেশে যাওয়ার কথা থাকলেও তারা তা করছে না। অবাধ বাণিজ্য থাকায় দেশীয় শিল্প ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ফলে বেকারত্ব ও দারিদ্যতা ভয়াবহ ভাবে বাড়ছে।
.
.
:: স্বল্পোন্নত দেশ হিসাবে বাংলাদেশ ও WTO:
অন্যান্য স্বল্পোন্নত দেশের মত বাংলাদেশের ও প্রধান বৈশিষ্ট্যই হল ভয়াবহ দারিদ্য, দুবর্ল অর্থনীতি, অনুন্নত প্রতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা এবং মানবসম্পদের অপ্রতুলতা । তাই বাংলাদেশ বাণিজ্যিক সুবিধা অজনের লক্ষ্যে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার প্রতিটি সম্মেলনেই তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ঠ দাবিগুলো পেশ করে আসছে। নিুে সেগুলো আলোচনা করা হল।
.
উরুগুয়ে রাউন্ড ও বাংলাদেশ: ১৯৮৬ সালে উরুগুয়েতে ১০৭টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে গ্যাট বৈঠক শুরূ হয়। শেষ পর্যন্ত ১৯৯৩ সালের ১৫ই ডিসেম্বর ৮ম রাউন্ডের চুক্তি হিসেবে ডাংকেল প্রস্তাব গৃহীত হয়। এই প্রস্তাবে ২ হাজার পন্যের শ্রল্ক হ্রাস করার প্রস্তাব করা হয়। তাছাড়া উরুগুয়ে রাউন্ডে আলোচনায় শিল্পজাত পন্যের বাজার উন্মুক্ত করনের এটি বেশি অগ্রগতি সাধিত হয়। আর এই চুক্তির মধ্যে বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ন ছিল টেক্সটাইল ও তৈরী পোষাকের বাজার উদারীকরন সম্পর্কীত Agreement on Textile and Clothing যেটি সংক্ষেপে ATC নামে পরিচিত। ATC অনুসারে ১৯৯৫ থেকে ২০০৫ সালের জানুয়ারীর মধ্যে চারটি পর্যায়ে টেক্সটাইল ও তৈরী পোষাকের উপর Multi Fiber Agreement এর আওতায় নির্ধারিত কোটার অবসান হয়।
.
এই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ বেশ কিছু ক্ষতির সম্মুখিন হয়। চুক্তি বাস্তবায়নের পর ইউরোপের দেশগুলো কোটা তুলে নিলে বাজার উন্মুক্ত হয়ে যাবে। ফলে উন্নত বিশ্বের সাথে প্রতিযোগীতায় টিকতে না পেরে অনেক শিল্প বন্ধ হয়ে যাবে।সেই সাথে দেশের বেকার সমস্য বাড়বে। যেটি অভ্যন্তরীন রাজনৈতিক পরিবেশ অস্থিতিশীল করে তুলবে। চুক্তিতে শিল্পপণ্যের ৪০% শুল্ক হ্রাস করা হয়েছে।শিল্পজাত পন্য রপ্তানীতে সংশ্লিষ্ট দেশ আগের মত আর ভর্তূর্কি পাবেনা। এজন্য উন্নয়নশীল দেশ ৮ বছর ও উন্নত দেশ ২ বছর সময় পাবে। বাড়তি চাপ পড়বে ক্রেতাদের উপর। আবার রপ্তানী তে ভর্তূকি দেয়ার ফলে যাদের রপ্তানী বেড়েছিল তার আর সেই সুযোগ পাবে না। ফলে এসব দেশের রপ্তানী কমে আসবে । সুতরাং বাংলাদেশ আমদানি নির্ভর হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হবে। সেবাখাতে নিয়ন্ত্রন থাকবে না ফলে উন্নত বিশ্বের বিনিয়োগের কাছে স্থানীয় বিনিয়োগ মার খাবে। বানিজ্য সম্পর্কীত মেধাসত্ত্ব বা TRIP চুক্তির ফলে কপিরাইট ট্রেডমার্ক ও পেটেন্ট মালিকানাতে বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশকে মোটা অংকের বিনিময়ে উন্নত প্রযুক্তি কিনতে হবে বহুজাতিক কোম্পানী গুলো থেকে। বানিজ্য সম্পর্কীত বিনিয়োগ ব্যবস্থা বা TRIM চুক্তির ফলে বিদেশী কোম্পানীগুলো দেশীয় কোম্পানীগুলোর মত অবাধ আমদানি রপ্তানী করার সুযোগ পাবে ফলে দেশীয় রপ্তানী গুলো মার খাবে।
.
সুতরাং দেখা যাচ্ছে উরুগুয়ে রাউন্ড চুক্তির ফলে বাংলাদেশ যে টুকু সুবিধা পেয়েছে তার চেয়ে অসুবিধার সম্মুখিন হতে হয়েছে বেশি।
.
.
:: WTO এর সাফল্য ব্যর্থতা:
বিশ্বকে একই ছাতার নিচে এনে ধনী – দরিদ্রের বৈষম্য কমিয়ে অবাধ বাণিজ্য স্থাপনের জন্য সৃষ্ঠি হয়েছিল বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা। অথচ শুরু থেকেই সংস্থার বিভিন্ন সিদ্ধান্ত এক বিতর্কিত করে তুলেছে। এর সাফল্য যেমন আছে তেমনি রয়েছে ব্যর্থতা। তবে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ক্ষেত্রে এর ব্যর্থতাই বেশি। যেমন: বাণিজ্য ক্ষেত্রে বৈষম্য। ভর্তুকি কমানোর কথা থাকলেও কতকগুলো দেশ ভর্তুকি কমাবে বা বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতা সহজ করবে তা এখনো নির্ধারিত হয়নি। WTO এর সিদ্ধান্তই সঠিক এবং প্রত্যেক দেশকে তাই মেনে চলতে হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিচারকের ভূমিকায় দেখা যায়, যেখানে ন্যায়ের পক্ষ থেকে সরে আসে । ভারসাম্যপূর্ণ নীতির অভাব, সময় অপচয়, বুদ্ধিবৃত্তি সংরক্ষন, বিরিয়োগ, সেবা খাতের বাণিজ্য এবং কৃষির সংযুক্তি । অধিকাংশ সম্মেলন সিদ্ধান্ত ছাড়াই সমাপ্ত হয় তবে অন্যান্য সংস্থার তুলনায় WTO ট্যাক্স এবং বাণিজ্যের বিষয়ে কিছুটা সফলতা অর্জন করেছে। যেমন- ভোটের মাধ্যমে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ, কোন দেশের ভেটো প্রদানের ক্ষমতা নেই, স্বল্প ট্যাক্সের মাধ্যমে মুক্ত বাজার বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো ও ভর্তুকি কমানো ,বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতা দূর করার চেষ্টা ইত্যাদি।
.
.
:: মূল্যায়ন:
WTO এর নীতিমালা মূলত বিশ্ব বানিজ্য ব্যবস্থা তদারকির জন্য প্রণীত হয়েছে। WTO বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মুক্তবাজার অর্থনীতি বাস্তবায়নের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রত্যেকটি দেশের ওপর তার একটা প্রতিকূল বা অনুকূল প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ক্ষেত্রে এর প্রতিকূল প্রভাবই বেশি পড়বে। অধিকাংশ স্বল্পোন্নত দেশগুলো উন্নত বিশ্বের চাপে তাদের বাজারসমূহকে পূর্নমাত্রায় উদার করে দিয়েছে। কিন্তু সে অনুযায়ি যথাযথ বিনিময় তারা পায়নি। বিদেশী পন্যসামগ্রী অবাধে প্রবেশ করায় এ দেশগুলোর শিল্প কারখানা একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে বেকারত্ব ও দারিদ্র ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্ব বানিজ্য সংস্থার এ বিরুপ প্রতিক্রিয়া থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য উন্নত দেশসমূহের সাহায্য সহযোগিতার পাশাপাশি স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের দ্রব্যের গুনগত মান বাড়াতে হবে, মানবসম্পদ উন্নয়নে সর্বতোভাবে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। শ্রমিকদের উৎপাদন ক্ষমতা ,ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি পণ্যসামগ্রী বহুমুখীকরন প্রক্রিয়া করতে হবে। আর এসব ব্যবস্থা গ্রহনের উপরই নির্ভর করছে স্বল্পোন্নত দেশসমূহের বিশ্ব প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারা।
.
বিশ্বায়নের প্রেক্ষাপটে আর্ন্তজাতিক বাণিজ্যর গুরুত্ব বিশেষভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই বিশ্ব বাণিজ্যকে শৃঙ্খলিত ও সব রাষ্ট্রের বাণিজ্যিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্যই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বিশ্ব বানিজ্য সংগঠন বা WTO। কিন্তু সংস্থাটি উন্নত বিশ্বের পৃষ্টপোষকতা করায় অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে সংস্থাটি বেশ বিতর্কিত হয়ে পড়েছে।
.