৩৮ তম বিসিএস প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা প্রস্তুতি , পার্ট – ১০

৩৮ তম বিসিএস প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা প্রস্তুতি
বিজ্ঞানের দুই চ্যাপ্টারের প্রশ্ন উত্তর । আলো ও শব্দ ।

অধ্যায় >> আলো

..
১। প্রশ্ন : অালো কি?
আলো এক প্রকার শক্তি। যেটি কোন বস্তু থেকে উৎপন্ন হয়ে শক্তির ক্ষুদ্র প্যাকেট বা গুচ্ছ আকারে সঞ্চালিত হয় এবং আমাদের চোখে পৌছে দর্শনের অনুভুতি জন্মায় । যার ফলে আমরা কোন বস্তু দেখতে পাই । আলোর প্রধান উৎস হল সূর্য ।

২। প্রশ্ন : আলো যে শক্তি প্রমাণ কর ।
আমরা মোট শক্তির পরিমান নিদিষ্ট । যেটি সৃষ্টি বা ধ্বংস করা যায় না শুধুমাত্র একরুপ থেকে অন্য রুপে রুপান্তরিত করা যায় । আলো যে এক প্রকার শক্তি নিচে তার কিছু উদাহারন দেওয়া হল
ক) বৈদ্যুতিক বাল্বে বৈদ্যুতিক শক্তি আলোকশক্তিতে পরিনত হয় ।
খ)ফটো ইলেক্ট্রিক কোষে আলো পডলে বিদ্যুৎ প্রবাহের সৃষ্টি হয় । অর্থাৎ এখানে আলোক শক্তি বিদ্যুৎ শক্তিতে রুপান্তরিত হয়।

৩. প্রশ্ন : আলোর ধর্মাবলী লিখুন।
নিচে আলোর প্রধান প্রধান ধর্মগুলো উল্লেখ করা হল
১. আলো সরলরেখায় চলে
২. আলোর প্রতিফলন, প্রতিসরন, ব্যতিচার, অপবর্তন, সমবর্তন, বিচ্ছুরন, ঘটে
৩. শূন্য মাধ্যমে আলোর গতি সর্বোচ্চ
৪. আলো কখনও তরঙ্গ ও কখনও কণার ন্যায় আচরণ করে
৫. আলো এক প্রকার শক্তি ।
.
.
৪. প্রশ্ন : আলোর প্রতিফলন ও প্রতিসরন ব্যাখ্যা কর
আলোর প্রতিফলন :
আলো যখান কোন কিছুর (মাধ্যমের) উপর পডে তখন কিছু আলো মাধ্যম কর্তৃক বাধা পেয়ে প্রথম মাধ্যমে ফিরে আসে বা বেকে যায় । আলোর এই ফিরে আসা বা বেকে যাবার ধর্মকে আলোর প্রতিফলন বলে । যেমন আয়নার উপর আলো পডলে তা বেকে যায় ( আমরা ছো্ট থাকতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে সুন্দরী মেয়ের মুখে আলো ফেলে মজা করতাম ) । আলো যে কোন তলে প্রতিফলিত হয় । তবে মসৃন তলে বেশী এবং অমসৃন তলে কম প্রতিফলিত হয় ।
পেরিস্কোপ তৈরিতে আলোর প্রতিফলন ব্যবহার করা হয় । সমুদ্রের নিচে সাবমেরিন হতে সমুদ্রের উপরে দেখার জন্য, ভিডের মাঝে খেলা দেখার জন্য পেরিস্কোপ ব্যবহার করা হয়।
আলোর প্রতিসরন : প্রতিসরন অর্থ ভেদ করে যাওয়া বা পার হয়ে যাওয়া । আলো যখন স্বচ্ছ কোন কিছুর উপর পডে তখন কিছু আলো মাধ্যম ভেদ করে চলে যায় । আলোর চলে যাওয়ার এই ঘটনাকে আলোর প্রতিসরন বলে ।
আলোর প্রতিসরনের কারনে পানিতে দাডালে পা খাটো দেখা যায়, পানিতে নৌকার বৈঠা বাকা দেখা যায়, গ্লাসের পানিতে পয়সা রাখলে কিছুটা উপরে দেখা যায় ।
উল্লেখ্য আলো যখন এক মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে যায় তখন সেখানে তিনটি ঘটনা ঘটে যেটি হল প্রতিফলন, প্রতিসরন, বিশোষন । আলোর বিশোষন হল মাধ্যম কর্তৃক কিছু আলো শোষিত হয় ।
.
৫.প্রশ্ন : আলোর বিচ্ছুরন ও বর্ণালি ব্যাখ্যা কর
আমরা জানি সাদা আলো যৌগিক। সাদা আলো যদি প্রিজমে আপতিত হয় তাহলে প্রিজমের মধ্য দিয়ে যাবার সময় সাতটি বর্ণে বিশ্লিষ্ট হয় । একে আলোর বিচ্ছুরন বলে । আর বিচ্ছুরনের ফলে আলো যে সাজানো সাতটি বর্ণে বিশ্লিষ্ট হয় তাকে আলোর বর্ণালি বলে । যেমন সূর্যের আলো প্রিজমের মধ্য দিয়ে যাবার সময় সাতটি বর্ণে বিশ্লিষ্ট হয় চিত্র দিতে পারলে ভাল , পিসিতে আকতে পারি না তাই দিতে পারলাম না বিসিএসের যে কোন বইয়ে পাবেন) । আলোর সাতটি বর্ণ হল বেগুনি, নীল, আসমানি, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল ( সংক্ষেপে বেনীআসহকলা) । রংধনু সৃষ্টির সময় বৃষ্টির ফোটা প্রিজমের কাজ করে । রংধনু সাধারনত সকালে পশ্চিম ও বিকালে পূর্ব আকাশে দেখা যায় ।
কিছু সংঙ্গা যেগুলো উত্তর বুঝতে সহায়তা করবে
আলোর বেগ : কোন মাধ্যমের মধ্য দিয়ে আলো যে বেগে চলে তাকে আলোর বেগ বলে । শূন্য মাধ্যমে আলোর বেগ সর্বোচ্চ । শূন্য মাধ্যমে আলোর বেগ প্রতি সেকেন্ডে ৩ লক্ষ কি.মি. বা ১ লক্ষ ৮৬ হাজার মাইল । আলো এক বছরে যে দুরত্ব অতিক্রম করে তাকে আলোক বর্ষ বলে । আলো যখন এক মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে যায় তখন আলোর গতি কমে যায় । যে মাধ্যমে আলোর বেগ বেশী কমে যায় তাকে ঘন মাধ্যম এবং যে মাধ্যমে আলোর বেগ খুব অল্প পরিমানে কমে যায় তাকে হালকা মাধ্যম বলে । আলোক রশ্মি কোন মাধ্যমে যে কোনে আপতিত হয় তাকে আপতন কোণ এবং আলোক রশ্মি কোন মাধ্যমে যে কোনে প্রতিসরিত হয় তাকে প্রতিসরন কোণ বলে ।
.
.
৬.প্রশ্ন : সংকট কোণ বা ক্রান্তি কোণ কাকে বলে?
নিদিষ্ট বর্ণের কোন আলোক রশ্মি ঘন মাধ্যম হতে হালকা মাধ্যমে যাওয়ার সময় যে আপতন কোণের জন্য প্রতিসরন কোণ ৯০ ডিগ্রী হয় সেই আপতন কোণকে সংকট বা ক্রান্তি কোণ বলে । সংকট কোণ আলোর বর্ণের উপর নির্ভর করে।
যেমন পানির সাপেক্ষে হীরকের ক্রান্তি কোণ ৩৩ ডিগ্রী বলতে বোঝায় হীরক থেকে আলো পানিতে প্রতিসরিত হওয়ার সমায় আপতন কোণ ৩৩ ডিগ্রী হলে পানি বিভেদতল ঘেষে যাবে অর্থাৎ প্রতিসরন কোণ ৯০ ডিগ্রী হবে । ( চিত্র দিতে পারলে ভাল , পিসিতে আকতে পারি না তাই দিতে পারলাম না , ৯ম শ্রেনীর পদার্থ বিজ্ঞানে পাবেন )
.
৭.প্রশ্ন : আলোর পূর্ণ অভ্যন্তরীন প্রতিফলন বলতে কি বুঝ।
আলোক রশ্মি ঘন মাধ্যম হতে হালকা মাধ্যমে যাওয়ার সময় যদি সংকট কোণের চেয়ে বেশী কোণে আপতিত হয় তাহলে আলোক রশ্মি প্রতিসরিত না হয়ে পুনরায় ঘন মাধ্যমে ফিরে আসে । আলোর এই ঘটনাকে পূর্ণ অভ্যন্তরীন প্রতিফলন বলে ( চিত্র দিতে পারলে ভাল , পিসিতে আকতে পারি না তাই দিতে পারলাম না , ৯ম শ্রেনীর পদার্থ বিজ্ঞানে পাবেন )
। পূর্ণ অভ্যন্তরীন প্রতিফলন এর শর্ত দুটি । যথা :
১. আলোক রশ্মি ঘন মাধ্যম হতে হালকা মাধ্যমের বিভেদতলে আপতিত হবে
২. আপতন কোণ সংকট কোণের চেয়ে বড় হবে
পূর্ণ অভ্যন্তরীন প্রতিফলনের কারনে উত্তপ্ত মরু অঞ্চলে দৃষ্টিভ্রম ঘটে, প্রখর রোদে উত্তপ্ত পিচঢালা মসৃন রাজপথ ভেজা ও চকচকে মনে হয় । এদেরকেই মরিচীকা বলে । যে কোন সমালোচনা করতে পারেন
.
৮.প্রশ্ন : সূর্য ধ্বংস হওয়ার কিছুক্ষন পরও সূর্যকে দেখা যাবে?
আমরা জানি কোন বস্তু থেকে আলো এসে যখন আমাদের চোখে পডে তখন আমরা বস্তুটি দেখতে পাই । একই ভাবে সূর্য থেকে নির্গত আলো যখন আমাদের চোখে এসে পডে তখন আমরা সূর্যকে দেখতে পাই । কিন্তু সূর্য থেকে আলো আসতে ৮ মিনিট ২০ সেকেন্ড লাগে । তাই সূর্য ধ্বংস হওয়ার পূর্বে সূর্য থেকে নির্গত সর্বশেষ আলোক রশ্মি আমাদের চোখে আসতে ৮ মিনিট ২০ সেকেন্ড লাগবে । তাই সূর্য ধ্বংস হওয়ার পর ৮ মিনিট ২০ সেকেন্ড পর্যন্ত আমরা সূর্য দেখতে পাব ।
.
৯.প্রশ্ন : রাতে যেসব নক্ষত্র দেখি তাদের অনেকেই হয়ত অনেক আগেই ধ্বংস হয়ে গেছে
পূর্বের প্রশ্নের উত্তরের মত তবে সময় নিদিষ্ট হবে না ।
,
১০.প্রশ্ন : আকাশ নীল দেখায় কেন?
আমরা জানি সূর্যের সাদা আলো সাত রংয়ের সমন্বয়ে গঠিত । এর মধে্য লাল আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশী ফলে বিক্ষেপন কম । আবার বেগুনী আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য কম কিন্তু বিক্ষেপন সবচেয়ে বেশী । ফলে যখন সূর্যের রশ্মি বায়ুমন্ডলের সুক্ষ্ম ধুলিকণা ও বিভিন্ন গ্যাস অনুতে বিশ্লিষ্ট হয় তখন বেগুনি, নীল ও আসমানি আলোর বিক্ষেপন বেশী হয় । যেহেতু নীল আলোর বিক্ষেপন মাঝামাঝি হিসেবে বিক্ষেপিত হয় ফলে আকাশে নীল আলোর প্রাচুর্য থাকে বেশী । ফলে আকাশ নীল দেখায়।
.
১১.প্রশ্ন : সূর্যদয় ও সূর্যাস্তের সময় সূর্য লাল দেখা যায় কেন?
সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সূর্য দিগন্তরেখার কাছে থাকে । ফলে সূর্যরশ্মি পুরু বায়ুস্তর ভেদ করে আমাদের চোখে আসে ।আর এসময় বেগুণী,নীল ও আসমানি আলোর বিক্ষেপন বেশী হওয়ায় তা আমাদের চোখে পৌছে না । কিন্তু লাল আলোর বিক্ষেপন কম হওয়ায় তা বায়ুস্তর ভেদ করে আমাদের চোখে পৌছায় । ফলে সূর্যদয় ও সূর্যাস্তের সময় সূর্য লাল দেখায় ।
.

১২.প্রশ্ন : চাদের আলোতে গাছের সবুজ পাতা কেমন দেখায়?
চাদের আলো সাধারনত হলুদ হয় । আবার গাছের পাতা সবুজ হয় । গাছের সবুজ পাতা সবুজ বর্ণ বাদ দিয়ে অন্য যে কোন বর্ণকে শোষন করবে । ফলে যখন চাদের হলুদ আলো গাছের পাতায় পড়ে তখন গাছের সবুজ পাতা চাদের হলুদ আলোকে শোষন করে।ফলে কোন আলো প্রতিফলিত হয় না ।ফলে চাদের হলুদ আলোতে গাছের পাতা কালো দেখায় ।
উল্লেখ্য যে এক বর্ণ আলো অন্য বর্ণকে শোষন করে । ফলে এক বর্ণর বস্তু অন্য বর্ণের মাঝে কালো দেখায় । যেমন লাল আলো লাল ব্যতীত অন্য যে কোন আলোকে শোষন করবে । ফলে লাল বর্ণের মাঝে অন্য যে কোন বর্ণের বস্তু কালো দেখাবে ।
কোন বস্তু যখন সকল আলো প্রতিফলন করে তখন সেটি সাদা দেখায় আর যখন সকল আলো শোষন করে তখন সেটি কালো দেখায় ।
যেহেতু সাদা আলো সাত বর্ণের সমন্বয়ে গঠিত , অতএব সাদা আলো মৌলিক নয় যৌগিক ।
গাছের পাতায় থাকা ক্লোরোফিল সবুজ বর্ণের হওয়ায় এটি সবুজ ব্যতীত অন্য আলোকে শোষন করে ।ফলে গাছের পাতা সবুজ দেখায় ।
.
১৩. প্রশ্ন : উর্ধ্বাকাশে বিমান বা পাখির ছায়া মাটিতে পডে না কেন?
.
পাখি বা বিমান যখন উর্ধ্বাকাশে উডে তখন সূর্য আলোক উৎস, পাখি বা বিমান আলোক প্রতিবন্ধক, এবং মাটি পর্দা হিসেবে কাজ করে ।আলোক উৎসের চেয়ে প্রতিবন্ধক অতান্ত ক্ষুদ্র হওয়ায় প্রচ্ছায়া হতে উপচ্ছায়া বড হয় । আলোক উৎস হতে প্রতিবন্ধক ও পর্দার দুরত্ব অনেক বেশী হওয়ায় প্রচ্ছায়া মাটিতে পৌছে না । ফলে উর্ধ্বাকাশে বিমান বা পাখির ছায়া মাটিতে পডে না ।
.
১৪.প্রশ্ন : রংধনু সবসময় সূর্যের বিপরীত দিকে গঠিত হয় কেন?

আমরা জানি সূর্যের সাদা আলো সাত রংয়ের সমন্বয়ে ।সূর্যের আলো যখন বৃষ্টির ফোটায় পডে তখন বৃষ্টির ফোটা প্রিজমের ন্যয় কাজ করে সূর্যের আলোকে সাত বর্ণে বিশ্লিষ্ট করে এবং সূর্যের বিপরীত দিকে আকাশে উজ্জল বর্ণের অর্ধ্ববৃত্ত তৈরি হয় । যেটি রংধনু নামে পরিচিত । রংধনু গঠনে যেহেতু সূর্য আলোক উৎস এবং বৃষ্টির ফোটা প্রিজমের সূর্যের বিপরীত দিকের আকাশ পর্দা হিসেবে কাজ করে ফলে রংধনু সবসময় সূর্যের বিপরীত দিকে গঠিত হয় ।
.
১৫.প্রশ্ন : উত্তপ্ত মরুভুমিতে মরিচীকা সৃষ্টির কারন ব্যাখ্যা কর ।
আলোর পূর্ণ অভ্যন্তরীন প্রতিফলনের দরুন উত্তপ্ত মেরু অঞ্চলে বা শীতপ্রধান মেরু অঞ্চলে এক ধরনের দৃষ্টিভ্রম ঘটে যেটি মরিচীকা নামে পরিচিত ।
মরুভুমিতে সূর্যের প্রচন্ড তাপে ভূমি সংলগ্ন বায়ু খুব তাডাতাডি উত্তপ্ত হয় । তাপমাত্রা বেশী হওয়ায় বালি সংলগ্ন বায়ু হালকা হয় ।ফলে ভূপৃষ্ট হতে যত উপরে যাওয়া যায় বায়ুর ঘনত্ব তত বাডতে থাকে । ফলে দুরে কোন গাছ থেকে যখন আলোক রশ্মি পথিকের চোখে এসে পডে তখন তা ঘনতর মাধ্যম হতে হালকা মাধ্যমে প্রবেশ করে । ফলে প্রতিসরিত রশ্মি অভিলম্ব থেকে দুরে সরে যায় । এভাবে দুরে দুরে সরতে সরতে এক সময় আপতন কোণ সংকট কোণ এর চেয়ে বড হয় ।এসময় আলোক রশ্মির পুর্ণ অভ্যান্তরীন প্রতিফলন হয় এবং আলোক রশ্মি উপরে উঠে বাকা পথে পথিকের চোখে পৌছে যেটি পিছন দিকে বাডালে ঐ অবস্থানে গাছটির উল্টো প্রতিবিম্ব দেখাবে । কিন্তু পথিকের চোখে আলোর এ ঘটনা ধরা পডেনা বরং তার কাছে মনে হয় কাছে কোথাও জলাশয় আছে এবং তা থেকে প্রতিফলিত হচ্ছে । পথিকের কাছে এ দুরত্ব সবসময় সমান মনে হয় । একে মরিচীকা বলে ।
.
প্রশ্ন : হীরক উজ্জল দেখায় কেন?
বায়ু সাপেক্ষে হীরকের সংকট কোণ কম ২৪.৪ ডিগ্রী । ফলে হীরকে আলোকরশ্মি সামান্য কোণে আপতিত হলে আপতন কোণ সংকট কোণ অফেক্ষা বড় হয় । ফলে আলোক রশ্মির হ অভ্যান্তরীন প্রতিফলন হয় ।ফলে বেশী পরিমাণ আলোকরশ্মি চোখে পডে এবং হীরক উজ্জল দেখায় ।
কাচ এর সংকট কোণ ৪২ ডিগ্রি অফেক্ষা হীরকের সংকট কোণ ২৪ ডিগ্রী কম হওয়ায় কাচ অফেক্ষা হীরক উজ্জল দেখায় ।

শব্দ অধ্যায়
.
১. শব্দ কী ? শব্দ কিভাবে উৎপন্ন হয়?
উত্তর : শব্দ একধরনের তরঙ্গ বিশেষ, যেটি বস্তুর কম্পনের মাধ্যমে সৃষ্ট হয় এবং জড় মাধ্যমের সাহায্যে প্রবাহিত হয়ে আমাদের কানে পৌঁছায়।
কোন বস্তুর কম্পনের ফলে শব্দ উৎপন্ন হয় । যেমন : যখন স্কুলে ছুটি দেয়া হয় তখনে যে বেল বা ঘন্টা বাজানো হয় তাতে যদি কোন কাঠ বা রাবারের প্যাড দ্বারা আঘাত করা হয় তাহলে ঘন্টাটিতে কম্পন সৃষ্ট হয় এবং শব্দ শোনা যায় । কিন্তু যদি ঘন্টাটিকে হাত দিয়ে ধরা হয় তাহলে ঘন্টাটির কম্পন থেমে যায় । ফলে শব্দ আর শোনা যায় না ।আর এ থেকে প্রমাণ হয় যে বস্তুর কম্পনের ফলেই শব্দ উৎপন্ন হয়।
.
২. ডেসিবেল কী ? মানুষের সহ্য ক্ষমতা কত ডেসিবেল?
ডেসিবল :
শব্দের তীব্রতা পরিমাপেরে একককে ডেসিবেল বলে ।
আর এজন্য যে স্কেল ব্যবহার করা হয় তাকে ডেসিবেল স্কেল বলে । অর্থাৎ মানুষের শ্রুতিযোগ্য শব্দের অতি ক্ষুদ্র পরিবর্তনের পরিমাপ যে স্কেলের সাহায্যে করা হয় তাকে ডেসিবল স্কেল বলে। মানুষ সর্বোচ্চ ১০৫ ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দের তীব্রতা সহ্য করতে পারে । এর চেয়ে বেশি তীব্রতার ক্ষেত্রে মানুষ বধির হতে পারে ।
৩. ৯০ ডেসিবেল বলতে কি বুঝ । বিভিন্ন স্থানে সীকৃত ডেসিবেল কত ?
৯০ ডেসিবেল বলতে বুঝায় কোন শব্দের তীব্রতা অন্য এক শব্দের তীব্রতা অফেক্ষা ৯০*১০঳.০১ গুন বেশি ।অর্থাৎকোন শব্দের তীব্রতা অন্য এক শব্দের তীব্রতা অফেক্ষা ৯০*১০঳.০১ গুন বেশি হলে তাদের তীব্রতার পার্থক্য ৯০ ডিবি ।
এলাকা হিসেবে গ্রহণযোগ্য শব্দের সর্বোচ্চ মাত্রা হল
১। নীরব এলাকা ৪৫ ডেসিবল
২। আবাসিক এলাকা ৫০ ডেসিবল
৩। মিশ্র এলাকা ৬০ ডেসিবল
৪। বাণিজ্যিক এলাকা ৭০ ডেসিবল
৫। শিল্প এলাকা ৭৫ ডেসিবল
.
.
৪. বায়ুর মধ্যে শব্দ কিভাবে সঞ্চালিত হয়?
সংকোচন ও প্রসারনের মাধ্যমে বায়ুর মধ্য দিয়ে শব্দ সঞ্চালিত হয় ।ধরাযাক কোন ঘন্টাকে প্যাড দ্বারা আঘাত করার ফলে ঘন্টাটি ডানে বামে কাপতে থাকে এবং শব্দ উৎপন্ন করে ।ধরাযাক ঘন্টা্টি যখন ডান দিকে যায় তখর সৃষ্ট কম্পন তার ডানদিকের নিকটস্থ বায়ুস্তরকে ধাক্কা দেয় । ফলে বায়ুস্তর সংকোচিত হয় । আবার ঘন্টাটি যখন বাম দিকে যায় তখন ঐ বায়ুস্তরটি প্রসারিত হয় । এভাবে ঘন্টাটির একবার পুর্র্র্নকম্পনে বায়ুস্তর একবার সংকোচন ও একবার প্রসারিত হয় । এভাবে যতক্ষন ঘন্টাটি কাপতে থাকে ততক্ষন বায়ুস্তর সংকোচন ও প্রসারনের মাধ্যমে শব্দ সামনের দিকে সঞ্চালিত হয়ে আমাদের কানে পৌছা । ফলে আমরা শুনতে পাই।
.
.
৫. আকাশে বিদ্যুৎ চমকালে কিছুক্ষন পরে শব্দ শোনা যায় কেন?
মেঘে মেঘে সংঘর্ষের ফলে আকাশে বিদ্যুতের ঝলকানি এবং শব্দ একই সাথে উৎপন্ন হয়। বিদ্যুৎ ঝলকানির গতিবেগ আলোর গতির সমান এবং সেকেন্ডে ৩০০০০০ মিটার। অপরদিকে শব্দের বেগ অনেক কম এবং ০ ডিগ্রী তাপমাত্রায় প্রতি সেকেন্ডে ৩৩২ মিটার। উভয়ের গতিবেগের এ বিশাল ব্যবধানের কারণে বিদ্যুৎ ঝলকানির তুলনায় শব্দ আমাদের নিকট পৌঁছাতে বেশি সময় লাগে। এজন্য বিদ্যুৎ ঝলকানি দেখার কিছুক্ষন পরে মেঘের গর্জনের শব্দ শোনা যায়।
.
৬. বর্ষাকালে জোরে শব্দ শোনা যায় কেন?
বর্ষাকালে দক্ষিন – পশ্চিম দিক থেকে শীতল বাতাস প্রবাহিত হয় । ফলে বাতাসে জলীয় বাস্পের পরিমান বেশি থাকে । আর বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমান বেশী থাকলে বায়ুর ঘনত্ব কমে য়ায় । ফলে শব্দের বেগ বাড়ে। অন্যান্য সময়ের তুলনায় বর্ষাকালে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমান বেশী থাকে। তাই বর্ষাকালে শব্দের বেগ বেশী থাকে। ফলে শব্দ জোরে শোনা যায় । একই কারনে বৃষ্টির পর শব্দ জোরে শোনা যায় ,
.
৭. দিন অফেক্ষা রাতে বেশি দুর থেকে শব্দ শোনা যায় কেন?
দিনের বেলায় তাপমাত্রা বেশি থাকায় বায়ু উপরের দিকে উঠে যায় ফলে ভূ-পৃষ্ট সংলগ্ন বায়ুর চাপ কম থাকে । তাই দিনের বেলায় শব্দ উপরের দিকে উঠে যায় । যার ফলে বেশি দুর থেকে শব্দ শোনা যায় না । কিন্তু রাতের বেলায় তাপমাত্রা কম থাকায় নিচের দিকে বায়ুর চাপ বেশি থাকে ।ফলে শব্দ নিচের দিকে থাকে এবং সামনের দিকে অগ্রসর হয় । ফলে অনেক দুর থেকে শব্দ শোনা যায় ।
কিন্তু দিনের বেলায় বাতাসে তাপমাত্রা বেশি থাকায় বায়ুর ঘনত্ব কম খাকে । তাই শব্দ জোরে শোনা যায় । আবার রাতের বেলায় বাতাসে তাপমাত্রা কম থাকায় বায়ুর ঘনত্ব বেশি থাকায় শব্দ আস্তে শোনা যায় ।
একই কারনে শীতকালের চেয়ে গ্রীষ্মকালে বায়ুতে শব্দের বেগ বেশি।
.
৮. ঝুলন্ত সেতুর উপর দিয়ে যাবার সময় সৈন্যদের প্যারেড করতে মানা করা হয় কেন?
প্রত্যেক বস্তুরই এপকটি নিজস্ব কম্পাঙ্ক আছে। ঝুলন্ত সেতুরও একটি নির্দিষ্ট স্বাভাবিক কম্পাঙ্ক আছে। প্যারেড করার সময় সাধারনত নিয়মিত সময়ের ব্যবধানে পা ফেলা হয়। এতে প্যারেড করার সময় প্যারেড করার একটি কম্পান তৈরি হয়। যদি কোনক্রমে প্যারেড করার কম্পাঙ্ক সেতুটির স্বাভাবিক কম্পাঙ্কের সমান হয়ে যায়, তাহলে ঐ সেতুতে পরবশ কম্পন সৃষ্টি হয় এবং সেতুটি আরও বেশি বিস্তারে দুলতে থাকে। । এভাবে পরবশ কম্পনে দুলতে থাকলে একসময় সেতুটি ভেঙ্গে পড়তে পারে । এ কারণে ঝুলন্ত সেতুর উপর দিয়ে যাওয়ার সময় সৈন্যদের প্যারেড করতে দেয়া হয় না।
.
৯. শ্রা্ব্য্তার পাল্লা কী ? শব্দেত্তর ও শ্রবনোত্তর তরঙ্গ বলতে কি বুঝ ? শ্রবনোত্তর শব্দ তরঙ্গের কয়েকটি ব্যবহার উলে্লখ কর ।
শ্র্রাব্যতার পাল্লা বা সীমা : শব্দের কম্পাংক প্রতি সেকেন্ডে ২০ থেকে ২০০০০ েএর মধ্যে হলেই কেবল আমরা শব্দ শুনতে পাই। শব্দের কম্পাংকের এই পাল্লাকেই শ্রাব্যতার সীমা বা পাল্লা বলে ।
শব্দেতর তরঙ্গ :
যে শব্দ তরঙ্গের কম্পনসংখ্যা প্রতি সেকেন্ডে ২০ বা ২০ এর কম, তাকে শব্দেতর তরঙ্গ বলে।
শব্দোত্তর তরঙ্গ :
যে শব্দ তরঙ্গের কম্পাঙ্ক ২০,০০০ বা তার বেশি তাকে শব্দোত্তর তরঙ্গ বা শ্রবনোত্তর তরঙ্গ বা আলট্রাসনিক তরঙ্গ বলে। প্রাণীবিশেষে শব্দোত্তর তরঙ্গের কম্পাঙ্ক কম বেশি হতে পারে। কুকুর ও বাদুড়ের শ্রাব্যতার ঊর্ধ্বসীমা যথাক্রমে ৩৫,০০০ঐু এবং বাদুড়ের প্রায় ১০০০০০ঐু।
শ্রবনোত্তর তরঙ্গের কয়েকটি ব্যবহার :
সমুদ্রের গভীরতা নির্ণয়, হিমশৈল, ডুবোজাহাজ ইত্যাদির অবস্থান নির্ণয;
ধাতবপিন্ড বা ধাতবপাতে সূক্ষ্মতম ফাটল অনুসন্ধান;
সূক্ষ্ম ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি তৈরি;
ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করা;
রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা।
.
১০. মশা উডার শব্দ শুনতে পাই কিন্তু পাখি উডার শব্দ শুনতে পাই না কেন ?
রাতের বেলায় মশা আমাদের কানের কাছে পোঁ পোঁ শব্দ করে অস্থির করে তুলে আশ্চর্যজনক হলেয সেই শব্দ কিন্তু মশার মুখ থেকে নয় বরং ডানা থেকে আসে। মশা যখন উড়ে তখন মশার পাখার কম্পন প্রতি সেকেন্ডে ২০ থেকে ২০০০০ বারের মধ্যে হয়। তাই আমরা মশার ডানার শব্দ শুনতে পাই। কিন্তু পাখির উড়ার সময় ডানার কম্পন প্রতি সেকেন্ডে ২০ বারের কম ২০ থেকে ২০০০০ হয় না । তাই পাখির উড়ার শব্দ আমরা শুনতে পাই না।
তবে পাখির ডানা ঝাপটানোর শব্দ আমরা শুনতে পাই।
.
১১. মাইক্রোফোন কি ? এটি কিভাবে কাজ করে
মাইক্রোফোন :
যে যন্ত্রের সাহায্যে শব্দ শক্তিকে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত করা হয় তাকে মাইক্রোফোন বলে। অর্থাৎ মাইক্রোফোন হচ্ছে এমন একটি যন্ত্র যেটি শব্দ তরঙ্গকে বিদ্যুৎ তরঙ্গে রূপান্তরিত করে এবং তা বিবর্ধিত দূরবর্তী স্থানে প্রেরণ করে ।
মাইক্রোফোনের সামনে যখন কোন শব্দ করা হয তখন ঐ শব্দের ফলে সৃষ্ট কম্পন মা্ইক্রোফোনের মধ্যস্থিত ডায়াফ্রামের পাতলা ধাতব পাতকে আঘাত করে। ফলে ডায়াফ্রাম কাঁপতে থাকে। ডায়াফ্রামের কম্পন হচ্ছে শব্দ তরঙ্গের অনুরুপ এবং শব্দ তরঙ্গ তখন বৈদ্যুতিক তরঙ্গে রূপান্তরিত হয়। সাধারণত সঙ্গীত, কথা ইত্যাদিকে বিভিন্ন স্থানে প্রেরণ করার উদ্দেশ্যে মাইক্রোফোন ব্যবহৃত হয।
.
১২. লাউড স্পিকার কি ? এটি কিভাবে কাজ করে?
লাউড স্পীকার হচ্ছে এমন একটি যন্ত্র যেটি বিদ্যুৎ শক্তিকে শব্দ শক্তিতে রূপান্তরিত করে।
লাউড স্বীকারে শক্তিশালী স্তায়ী চুম্বক, পোলপিস, পেপার কোণ, ভয়েস কয়েল, স্পাইডার ও ধাতব ফ্রেম থাকে। ভয়েস কয়েলের মধ্যে চুম্বক অবস্থান করে, তাই কয়েলটা সবসময় চৌম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে অবস্থান করে।
যখন অ্যামপ্লিফায়ার থেকে বৈদ্যুতিক তরঙ্গ (অডিও সিগন্যাল) এসে ভয়েস কয়েলে প্রবেশ করে, তখন ভয়েস কয়েল কাঁপতে থাকে। ভয়েস কয়েলের সাথে পেপার কোণ যুক্ত থাকায় পেপার কোণ কাঁপতে থাকে এবং এর সামনের বাতাসও কাঁপতে থাকে। বাতাসের এই কম্পন হচ্ছে মাইক্রোফোনের সামনে সৃষ্ট শব্দের কম্পনের একেবারে অবিকল প্রতিরূপ। অর্থাৎ মাইক্রোফোনের সামনে যে আওয়াজ করা হয়, লাউড স্পীকার থেকে সেই একই আওয়াজ শোনা যায়।
.
১৩. টেপ রেকর্ডার কি ? কিভাবে রেকর্ডিং করা হয়?
টেপ রেকর্ডার তড়িৎ প্রবাহকে চুম্বকক্ষেত্রে রূপান্তর করে এবং রেকর্ডিং মাধ্যমে বিভিন্ন সংকেত বা তথ্য রেকর্ড করে। রেকর্ডিং এর জন্য টেপ রেকর্ডারে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ট্রান্সডিউসার ব্যবহার করা হবে।
যখন কেউ মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলে, তখন শব্দের কম্পন পরিবর্তনশীল ইলেকট্রিক্যাল ইমপালস তৈরি করে যেটি একটি বিবর্ধকের ভিতর দিয়ে পাঠানো হয়। বিবর্ধিত সংকেতকে একটি ইলেকট্রোম্যাগনেট হেড এর নিকট পাঠানো হয। হেড-এ ছোট ছোট বায়ুছিদ্র থাকে। রেকর্ডিং এর সময় টেপের অনুজ্জ্বল পার্শ্বটি হেড এর ছিদ্রের খুব কাছ দিয়ে চলে। এসময় পরিবর্তনশীল ইলেকট্রিক্যাল ইমপালস ছিদ্রপথে চুম্বকক্ষেত্র তৈরি করে যেটি টেপ এর আয়রণ অক্সাইডের সাথে ক্রিয়া করে সিগন্যাল ধারণ করে।
.
১৪. ডপলার ক্রিয়া কী ?
উৎস এবং পর্যবেক্ষকের মধ্যকার আপেক্ষিক গতির কারণে কোন তরঙ্গ-সংকেতের কম্পাঙ্ক পরিবর্তিত হয়ে যাওয়ার ঘটনাকে বলা হয় ডপলার ক্রিয়া ।
,
১৫. স্টেশনের দিকে আসা ও স্টেশন ছেডে যাওয়া ট্রেনের হুইশেলের মধ্যে পার্থক্য কি এবং কেন ?
স্টেশন ছেড়ে যাওয়া ট্রেনের হুইসেলের আওয়াজ অপেক্ষা স্টেশনের দিকে এগিয়ে আসা ট্রেনের হুইসেলের আওয়াজ বেশি হয়। স্টেশন ছেড়ে যাওয়া ট্রেনের ক্ষেত্রে উৎস থেকে স্রোতার মধ্যকার আপেক্ষিক গতি কমতে থাকে বলে শব্দের আপাত কম্পাঙ্ক প্রকৃত কম্পাঙ্কের চেয়ে কম হয। ফলে শব্দ আস্তে হতে থাকে। অন্যদিকে, স্টেশনের দিকে এগিয়ে আসা ট্রেনের ক্ষেত্রে উৎস থেকে স্রোতার মধ্যকার আপেক্ষিক গতি বৃদ্ধি পেতে থাকে বলে শব্দের আপাত কম্পাঙ্ক প্রকৃত কম্পাঙ্কের চেয়ে বেশি হয। ফলে শব্দ জোরে হতে থাকে।
.
১৬. প্রতিধ্বনি কি ? এর সাহা্য্য কিভাবে কুপের গভীরতা (সমুদ্রের গভীরতা) , নিম্মজিত জাহাজ এর অবস্থান নির্ণয় করা যায়?
.
কোন উৎস থেকে সৃষ্ট শব্দ দূরবর্তী কোন প্রতিবন্ধকে বাঁধা পেয়ে উৎসের কাছে ফিরে আসে তখন মূলধ্বনির যে পুনরাবৃত্তি ঘটে তাকে প্রতিধ্বনি বলে। পাহাড়ের পাশে দাড়িয়ে চিৎকার করলে প্রতিধ্বনি শোনা যায়।
কূপের উপরে কোন শব্দ উৎপন্ন করলে সেই শব্দ পানি পৃষ্ঠ থেকে প্রতিফলিত হয়ে ফিরে এলে প্রতিধ্বনি শোনা যায়। এখন শব্দ উৎপন্ন করা ও সেই শব্দের প্রতিধ্বনি শোনার মধ্যবর্তী সময় থামা ঘড়ির সাহায্যে নির্ণয় করা হয। ধরা যাক, কূপের গভীরতা = h ; শব্দ উৎপন্ন করা ও প্রতিধ্বনি শোনার মধ্যবর্তী সময় = t ; শব্দের দ্রুতি= v ; এখন শব্দ উৎপন্ন হওয়ার পর প্রতিফলিত হয়ে শ্রোতার কাছে ফিরে আসতে যেহেতু ২h দূরত্ব অতিক্রম করে। অতএব, 2h = vt বা h = (vt/2)
কূপের গভীরতা ১৬.৬ মিটারের কম হলে প্রতিধ্বনির সাহায্য কুপের গভীরতা নির্ণয় করা সম্ভব নয় ।
ফ্যাদোমিটারের সাহায্যে সমুদ্রের গভীরতা নির্ণয় করা হয়। এই যন্ত্র বাদুরের মত আল্ট্রাসনিক শব্দ তৈরী করে এবং সমুদ্রের তলদেশে বাঁধা পেয়ে ফিরে আসা প্রতিধ্বনির মাধ্যমে গভীরতা পরিমাপ করা হয়।
.
১৭. প্রতিধ্বনি শোনার জন্য নূন্যতম দুরত্ব ও সময়ের পার্থক্য কত? সাধারন ঘরে কথা বলার সময় প্রতিধ্বনি শোনা যায় না কেন ?
শব্দ উৎপন্ন হয়ে আমাদের কানে পৌছার পর ০.১ সেকেন্ড পর্যন্ত প্রভাব থেকে যায় ।তাই প্রতিধ্বনি শোনার জন্য মুলধ্বনি এবং প্রতিধ্বনির সময়ের পার্থক্য ০.১ সেকেন্ড হতে হবে। এর থেকে কম সময় হলে আমাদের মস্তিস্ক মূলধ্বনি এবং প্রতিধ্বনির মধ্যে পার্থক্য বের করতে পারে না। আর শব্দ ০.১ সেকেন্ডে ১৬.৬ মিটার দুরত্ব অতিক্রম করে । তাই প্রতিধ্বনি শোনার জন্য শ্রোতা এবং প্রতিবন্ধকের মাঝে ন্যুনতম ১৬.৬ মিটার দূরত্ব থাকা আবশ্যক। অন্যথায় প্রতিধ্বনি শোনা যায় না । যেহেতু সাধারন ঘরে কথা বলার সময় শব্দের উৎস ও দেয়াল (প্রতিবন্ধক) এর মধ্যবর্তী দুরত্ব ১৬.৬ মিটার এর কম তাই সাধারন ঘরে কথা বলার সময় প্রতিধ্বনি শোনা যায় না ।
,
১৮. হল ঘরে প্রতিধ্বনি শোনা যায় না কেন বা
হল ঘরের ছাদ বাকানো বা দেয়াল নরম আশ যুক্ত করে তৈরী করা হয় কেন?
হল ঘরের ছাদ এবং মঞ্চের পেছনের দেয়াল অবতলে বাঁকানো থাকে। মঞ্চে উপবিষ্ট বক্তার বক্তব্য পেছনের দেয়ালে এবং ছাদে প্রতিফলিত হযে দর্শক ও শ্রোতার নিকট পৌঁছায়। হলঘরের অবশিষ্ট তিন দিকের দেয়ালে শব্দ প্রতিফলিত হয়ে মূল শব্দের সাথে মিশে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে। এ অসুবিধা এড়াতে হলঘরের দেয়াল নরম আঁশযুক্ত যেমন কাপড় প্রভতি দ্বারা আবৃত করা হয়। এতে শব্দ নরম আঁশযুক্ত বস্তু কর্তৃক শোষিত হয় বলে মূল শব্দের সাথে মিশতে পারে না। ফলে বক্তৃতা ভাল শোনা যায়।
.
১৯. বাদুড পথ চলে কিভাবে?
বাদুড় চোখে দেখতে পায় না। তাই পথ চলার জন্য বাদুড় শব্দোত্তর তরঙ্গ ব্যবহার করে। বাদুড় চলার সময় ক্রমাগত বিভিন্ন তরঙ্গের শব্দোত্তর তরঙ্গ সৃষ্টি করে। এ তরঙ্গ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। সামনে যদি কোন প্রতিবন্ধক থাকে, তাহলে তাতে বাধা পেয়ে এ তরঙ্গ প্রতিফলিত হয়ে বাদুড়ের কানে ফিরে আসে। বাদুড় তার সৃষ্ট শব্দোত্তর তরঙ্গ এবং প্রতিধ্বনি শোনার মধ্যকার সময়ের ব্যবধান ও প্রতিফলিত শব্দের প্রকৃতি থেকে প্রতিবন্ধকের অবস্থান এবং আকৃতি সম্পর্কে ধারণা লাভ করে এবং পথ চলার সময় সেই প্রতিবন্ধক পরিহার করে। যে দিকে শব্দোত্তর তরঙ্গের প্রতিধ্বনি শুনতে পারে না, সে দিকে কোন প্রতিবন্ধক নেই বিবেচনা করে বাদুড় সে দিকে চলে। এভাবে বাদুড় পথ চলে ।
.
২০. শব্দ দূষণ কি ? মানব জীবনে শব্দ দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব উল্লেখ কর ।
শব্দ দূষণ
শব্দের আধিক্য আমাদের দেহ ও মনের উপর যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে তাকে পরিবেশের শব্দ দূষণ বলা হয়।
মানব জীবনে শব্দ দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব :
১. মানুষের স্বাভাবিক স্নায়ু সংযোগ ব্যাহত হয়। কাজে মনোযোগ কমে এবং মেজাজ খিটখিটে হয়।
২. পরিপাক যন্ত্রের কাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়, ফলে আলসার ও অন্যান্য আন্ত্রিক পীড়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
৩. শ্রবণ শক্তি ধীরে ধীরে হ্রাস পায়।
.
অতিরিক্ত কিছু তথ্য

.
শুন্য ডিগ্রি তাপমাত্রায় এবং স্বাভাবিক বায়ুচাপে শব্দের বেগ প্রতি সেকেন্ডে ৩৩২ মিটার।
তাপমাত্রা বাড়লে শব্দের বেগ বৃদ্ধি পায়।
প্রতি ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য শব্দের বেগ ০.৬ মিটার/সেকেন্ড বৃদ্ধি পায়।
কঠিন মাধ্যমে শব্দের বেগ বাতাসের থেকে ১৫ গুন বেশী।
বায়ুশুন্য মাধ্যমে শব্দের বেগ শূন্য।
স্বাভাবিক অবস্থায় লোহাতে শব্দের বেগ ৫২২১ মিটার/ সেকেন্ড।
বিশুদ্ধ পানিতে শব্দের বেগ সেকেন্ডে ১৫০০ মিটার।
শব্দের চেয়ে দ্রুতগতিতে যে বিমান চলে তাকে সুপারসনিক বিমান বলে।
কঠিন মাধ্যমে শব্দ সবচেয়ে দ্রুত চলে, তরল মাধ্যমে তার চেয়ে ধীরে চলে।
বায়বীয় মাধ্যমে শব্দের দ্রুটি সবচেয়ে কম এবং শূন্যস্থানে শব্দের বেগ শূন্য।

Leave a Reply

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline