লিখিত প্রস্তুতি :: বাংলাদেশ বিষয়াবলি – ২

লিখিত প্রস্তুতি :: বাংলাদেশ বিষয়াবলি – ২

প্রশ্ন : বাংলায় কখন মুঘল শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়?
প্রশ্ন : ভাগ কর-শাসন কর নীতি বলতে কী বোঝ?
প্রশ্ন : চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের কুফল বর্ণনা কর।
প্রশ্ন : ‘ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দুঃশাসন বাংলার মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তোলে’ উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।


.
回 প্রশ্ন : বাংলায় কখন মুঘল শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর : সম্রাট আকবর ১৫৭৬ সালে বাংলায় মুঘল শাসন প্রতিষ্ঠা করেন।
.
.
回 প্রশ্ন : ভাগ কর-শাসন কর নীতি বলতে কী বোঝ?
উত্তর : ব্রিটিশ বেনিয়া ও রাজশক্তি নানা কূটকৌশলের মাধ্যমে ভারতীয় উপমহাদেশে দুঃশাসন প্রতিষ্ঠা করে। আর তাদের এসব অপকৌশলের অন্যতম হলো ‘ভাগ কর-শাসন কর’ নীতি। এটি হলো একটি বিশেষ নীতি যার মাধ্যমে চতুর ব্রিটিশ কোম্পানি এ অঞ্চলের হিন্দু ও মুসলমান এই দুই সম্প্র্রদায়ের মানুষের মধ্যে বিবাদ জিইয়ে রেখে কৌশলে উভয় পক্ষকেই শোষণ-নির্যাতন করা। তাদের শাসন-শোষণ দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য হিন্দু-মুসলমানকে ঐক্যবদ্ধ হতে দেয়নি এ নীতির মাধ্যমে।
.
.
回 প্রশ্ন : চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের কুফল বর্ণনা কর।
উত্তর : লর্ড কর্নওয়ালিশ প্রবর্তিত ভূমি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত ‘চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত’ ব্যবহারে ফলাফল ছিল নানামুখী। নিম্নে এ প্রসঙ্গে আলোচনা করা হলো :
প্রথমত : এর ফলে ব্রিটিশ সরকার ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থাকে একটি সুদৃঢ় ভিত্তি প্রদান করে। ফলে তাদের রাজস্ব আদায় ও প্রাপ্তি নিশ্চিত হয়।
দ্বিতীয়ত : ব্রিটিশ সরকার এর মাধ্যমে একদল অনুগত ও বিত্তশালী জমিদার শ্রেণী তৈরি করে।
তৃতীয়ত : এ ব্যবস্থার মাধ্যমে কৌশলে ব্রিটিশ সরকার মুসলমানদের জমিদারি ব্যবস্থা কেড়ে নেয়। ফলে মুসলিম জমিদাররা ভূমিহীনে পরিণত হয়।
চতুর্থত : এর ফলে সরকারের সঙ্গে সাধারণ কৃষকদের যোগাযোগ না থাকায় মধ্যস্বত্বভোগীরা কৃষকদের ওপর অতিরিক্ত করের বোঝা চাপাত এবং নানাভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করত।
পঞ্চমত : সূর্যাস্ত আইনের ফলে অনেকেই জমিদারি হারায় আবার অনেকে সরকারের সঙ্গে যোগসাজশের কারণে জমিদারে পরিণত হয়। ফলে জমিদারি প্রথা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
ষষ্ঠত : চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে অগ্রবর্তী শ্রেণী ইংরেজী শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠলে তারা ক্রমে জাতীয়তাবাদী ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ওঠে।
পরিশেষে বলা যায়, চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে এ উপমহাদেশের অর্থনীতি, রাজনীতি ও সমাজ ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়।
.
.
回 প্রশ্ন : ‘ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দুঃশাসন বাংলার মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তোলে’ অনুচ্ছেদের আলোকে উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : সুচতুর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তৎকালীন জনবহুল ও পশ্চাৎপদ ভারতীয় উপমহাদেশে প্রায় ২০০ বছরের স্থায়ী ঔপনিবেশিক শাসন কায়েম করে। তাদের শাসন-শোষণে এ অঞ্চলের মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। নিচে এ প্রসঙ্গে আলোচনা করা হলো :
.
১। খাজনা :
ব্রিটিশ সরকার কৃষকদের ওপর অতিরিক্ত হারে খাজনা ও কর চাপিয়ে দিত। প্রকৃতিনির্ভর কৃষি ব্যবস্থায় অতিবৃষ্টি বা খরার কারণে ফসলের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হলেও তারা কৃষকদের কোনো ছাড় দিত না, বরং জমিদারি কেড়ে নিত এবং নানাভাবে নির্যাতন করত।
.
২। শিল্প :
ব্রিটিশ সরকার ও বণিক সম্প্র্রদায় তাদের নিজস্ব লাভ ও মুনাফার প্রয়োজনে এখানে অনেক শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠা করলেও এখানকার ঐতিহ্যবাহী শিল্পগুলোকে প্রথমে ধ্বংস করে দেয়।
.
৩। নীল চাষ :
দরিদ্র কৃষকদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন ছিল জমি। এতে তারা কৃষিকাজ করে নানা রকম খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন করে কোনোমতে জীবন চালাত। কিন্তু নীলকর বণিকরা তাদের খাদ্যশস্যের পরিবর্তে নীল চাষে বাধ্য করে। ফলে অনেকের খাদ্য নিরাপত্তা ধ্বংস হয়ে যায়।
.
৪। ভাগ কর-শাসন কর :
ব্রিটিশ বণিকদের ভাগ কর-শাসন কর নীতি ছিল প্রতারণামূলক। তারা এ অঞ্চলে বসবাসরত হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে সাম্প্র্রদায়িক বিভাজন করে নানা সংঘাত ও সংঘর্ষের মাধ্যমে একে একে উভয় সম্প্রদায়কে দুর্বল বা শায়েস্তা করার নীতি গ্রহণ করে।
.
৫। ধর্মীয় আগ্রাসন :
ব্রিটিশ বেনিয়া শক্তি ও রাজশক্তি এ অঞ্চলে তাদের অবস্থান দীর্ঘস্থায়ী ও পাকাপোক্ত করার লক্ষ্যে খ্রিস্টান ধর্ম প্রচারে ব্যাপক অর্থ ও লোকবল নিয়োগ করে দরিদ্র সাধারণ মানুষদের অর্থ সম্পদের লোভ দেখিয়ে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণে উৎসাহিত করত।
.
৬। সাম্প্র্রদায়িক বিবাদ :
ব্রিটিশরা এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হতে দেয়নি। হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়কে নানা কৌশলে একে অপরের বিরুদ্ধে খেপিয়ে রাখত। এতে তারা একদলকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে হাতে রাখত।
.
৭। অর্থ-সম্পদ পাচার :
অর্থলোভী ব্রিটিশ বেনিয়া শক্তি এ দেশের অর্থ ও মূল্যবান খনিজদ্রব্যাদি পাচার করে নিয়ে যেত ব্যাপক মাত্রায়। তাই এ দেশের অর্থনীতি ছিল খুবই দুর্বল।

 

Leave a Reply

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline