লিখিত প্রস্তুতি :: বাংলাদেশ বিষয়াবলি (New)

সম্ভাব্য প্রশ্ন (বড়/সংক্ষিপ্ত/টিকা)
১। ভিশন ২০২১ বা রূপকল্প-২০২১ কী? এর উদ্দেশ্য কি? কি আছে এতে?
২। ভিশন ২০২১ বা রূপকল্প-২০২১ এর ২২টি লক্ষ্যমাত্রা কি কি?
৩। ডিজিটাল বাংলাদেশ বলতে কি বুঝেন? ভিশন ২০২১ এর সাথে এটি কিভাবে সম্পর্কযুক্ত?
৪। ডিজিটাল বাংলাদেশ এর তাৎপর্য কি?
৫। ডিজিটাল বাংলাদেশের বাস্তবায়নের রূপরেখা ও কৌশল বিধৃত কর
৬। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে করণীয় উল্লেখ কর
৭। তথ্যপ্রযুক্তি (ICT), তথ্যপ্রযুক্তি সেবা ও তথ্যপ্রযুক্তি জনবল সৃষ্টির কৌশল এর উপর আলোকপাত কর
.
:: লিখিতর সিলেবাসে উল্লেখকৃত (বাংলাদেশ বিষয়াবলি) :
Economy of Bangladesh particular emphasis on …. Vision- 2021.
Contemporary Communication, ICT, Role of Media; Right to Information (RTI), and E- Governance.


.
:: ভিশন ২০২১ বা রূপকল্প ২০২১ কী?
জাতির জনক ও বাংলাদেশের রূপকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উন্নয়ন দর্শন ছিল অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক মুক্তি-মধ্যস্থতাকারী উন্নয়ন দর্শন, যেটি বিনির্মাণে নিয়ামক ভূমিকায় থাকবে জনগণ। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে সমবায়কে কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেয়ার কথা ভাবছিলেন। আর সে কারণেই দেশকে ২০২১ সালে একটি উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার দেয়ার সুস্পষ্ট অঙ্গীকার নিয়ে ঘোষণা করা হয়েছে রূপকল্প-২০২১।
.
::ভিশন ২০২১ বা রূপকল্প-২০২১ – কেন নেয়া হয়েছে?
দু হাজার একুশ সালে বাংলাদেশ পঞ্চাশ বছরে পা রাখবে। সুবর্ণ জয়ন্তীর এই লগ্নে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশকে আমরা কোন অবস্থানে দেখতে চাই, সেটাই বস্তুত ভিশন ২০২১-এর মূল কথা। নতুন সহস্রাব্দে পদার্পণের পর ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত এক নিরাপদ বিশ্ব গড়ার প্রত্যয়। জাতিসংঘ যেমন মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল (MDGS)-এ ইশতেহার বাস্তবায়নে কাজ করা শুরু করে, বাংলাদেশও তেমনি এই বৈশ্বিক উন্নয়ন-শোভাযাত্রায় সহযাত্রী হিসাবে অংশ নিতে ভিশন ২০২১-এর ব্যানার নিয়ে এগিয়ে আসে।
.
::ভিশন ২০২১ এর উদ্দেশ্য কি?
ভিশন ২০২১-এর প্রধান লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য হলো নির্ধারিত সময়ে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করা যেখানে চরম দারিদ্র্য সম্পূর্ণভাবে বিমোচিত হবে। সেজন্যে একগুচ্ছ সহায়ক কাজ নিশ্চিত করতে হবে। কেমন, গণতন্ত্র ও কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠা করা; ক্ষমতার বিকেন্দ্রিকরণ এবং জনপ্রতিনিধিত্বমূলক রাজনৈতিক অবকাঠামো বিনির্মাণ করা; রাজনৈতিক পক্ষপাতবিবর্জিত আইনের শাসন নিশ্চায়ক সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা; রাজনৈতিক সংস্কৃতির উন্নয়ন করা; দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা; নারীর ক্ষমতায়ন এবং সমঅধিকার নিশ্চিত করা; এমনভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের রূপরেখা প্রণয়ন করা যাতে মৌলিক চাহিদাসমূহ পূরণের নিশ্চয়তা থাকে, জনগণ ও শ্রমশক্তির সুরক্ষার বন্দোবস্ত থাকে, দারিদ্র্য দূরীকরণের ব্যবস্থা থাকে, খাদ্য, পুষ্টি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার ব্যবস্থা থাকে, জ্বালানি ও বিদ্যুতের নিশ্চয়তা থাকে, ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, আবাসন, পরিবেশ, পানিসম্পদের নিরাপত্তা থাকে, এবং সার্বিকভাবে জনজীবন ও সম্পদের সুরক্ষা থাকে; বৈশ্বিক পেক্ষাপটে বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় করা যাতে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত থাকে, জাতীয় সংস্কৃতি ও পররাষ্ট্র নীতি দৃঢ়তর হয়।
.
::ভিশন ২০২১ – কি আছে এতে?
রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের সমবায়কে কাজে লাগিয়ে ২২টি লক্ষ্য অর্জনে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে বর্তমান সরকার। ২২টি লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে- বিকাশমান অর্থনীতি, দারিদ্র্য মুক্তি, অংশীদারিত্বমূলক সহিষ্ণু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, সামাজিক ন্যায়বিচার, নারীর সমঅধিকার, আইনের শাসন, মানবাধিকার, সুশাসন ও দূষণমুক্ত পরিবেশ।
.
:: ভিশন ২০২১ – এর ২২টি লক্ষ্যমাত্রা কি কি?
রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নে যে ২২টি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে :
১। প্রতি গ্রামে সমবায় সমিতি গড়ে সমিতির সদস্যদের সন্তান কিংবা পোষ্যদের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা। এভাবে ২০১০ সালের মধ্যে প্রথিমিক স্তরে ভর্তির হার ১০০ ভাগ নিশ্চিত করা।
২। ২০১০ সালের মধ্যে দেশের সব মানুষের জন্য নিরাপদ সুপেয় পানির ব্যবস্থ্যা করা।
৩। ২০১২ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা।
৪। ২০১৩ সালের মধ্যে প্রতিটি বাড়িকে স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থার আওতায় আনা।
৫। ২০১৩ সালে বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার হবে ৮ শতাংশ। ২০১৭ সালে এই হার ১০ শতাংশে উন্নীত করে অব্যাহত রাখা।
৬। ২০১৩ সালে বিদ্যুতের সরবরাহ হবে ৭ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০১৫ সালে ৮ হাজার মেগাওয়াট। ২০২১ সাল নাগাদ দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা ২০ হাজার মেগাওয়াট ধরে নিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
৭। ২০১৩ সালে পর্যায়ক্রমে স্নাতক পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা।
৮। ২০১৪ সালে নিরক্ষরতামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা।
৯। ২০১৫ সালের মধ্যে সকল মানুষের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করা।
১০। ২০১৫ সালে জাতীয় আয়ের বর্তমান হিস্যা কৃষিতে ২২ শিল্পে ২৮ ও সেবাতে ৫০ শতাংশের পরিবর্তে হবে যথাক্রমে ১৫, ৪০ এবং ৪৫ শতাংশ করা।
১১। ২০২১ সালে বেকারত্বের হার বর্তমান ৪০ থেকে ১৫ শতাংশে নেমে আসবে।
১২। ২০২১ সালে কৃষি খাতে শ্রমশক্তি ৪৮ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়াবে ৩০ শতাংশে।
১৩। ২০১১ সালে শিল্পে শ্রমশক্তি ১৬ থেকে ২৫ শতাংশে এবং সেবা খাতে ৩৬ থেকে ৪৫ শতাংশে উন্নীত হবে।
১৪। ২০২১ সাল নাগাদ বর্তমান দারিদ্র্যের হার ৪৫ থেকে ১৫ শতাংশে নামবে।
১৫। ২০২১ সালে তথ্য প্রযুক্তিতে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে বাংলাদেশ পরিচিতি লাভ করবে।
১৬। ২০২১ সালের মধ্যে দেশের ৮৫ শতাংশ নগরিকের মানসম্পন্ন পুষ্টি চাহিদা পূরণ নিশ্চিত হবে।
১৭। ২০২১ সালের মধ্যে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য প্রতিদিন নূন্যতম ২১২২ কিলোক্যালরির উপর খাদ্য নিশ্চিত করা হবে।
১৮। ২০২১ সালের মধ্যে সকল প্রকার সংক্রামক ব্যাধি সম্পূর্ণ নির্মূল করা।
১৯। ২০২১ সালে গড় আয়ুষ্কাল ৭০ এর কোঠায় উন্নীত করা।
২০। ২০২১ সালে শিশু মৃত্যুর হার বর্তমান হাজারে ৫৪ থেকে কমিয়ে ১৫ করা।
২১। ২০২১ সালে মাতৃমৃত্যুর হার ৩.৮ থেকে কমে ১.৫ শতাংশ হবে।
২২। ২০২১ সালে প্রজনন নিয়ন্ত্রণ ব্যবহারের হার ৮০ শতাংশে উন্নীত করা।
এই ২২টি লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন সম্ভব হলে সত্যিকার অর্থে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নে সোনার বাংলা গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
.
:: ডিজিটাল বাংলাদেশ :
ইংরেজী ডিজিট শব্দের বিশেষণ হলো ডিজিটাল। ডিজিটের বাংলা অর্থ অঙ্ক; এখানে অঙ্ক অর্থ গণিত শাস্ত্র নয়। ব্যাপকভাবে ব্যবহার হওয়া দশমিক পদ্ধতির গণনার দশটি অঙ্ক : ০ হতে ৯; এই দশটি অঙ্কের ভিত্তিতে ডিজিটাল যন্ত্রপাতির বাস্তবায়ন প্রায় অসম্ভব। বস্ত্তত কমপিউটার, ক্যালকুলেটর, মোবাইল-ফোন” target=”_blank”>মোবাইল ফোনসেটসহ সব ধরনের ডিজিটাল যন্ত্রপাতি ০ এবং ১ এই দুটি অঙ্কের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়।
.
আধুনিক সভ্যতা ডিজিটাল যন্ত্রপাতির ওপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। আর ডিজিটাল যন্ত্রপাতির ব্যবহার বাড়িয়ে দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টাই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’। অর্থাৎ ডিজিটাল বাংলাদেশ বলতে বুঝায় দেশের সর্ব স্তরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার, অর্থাৎ কমপিউটার, ফোন ও ইন্টারনেটের সঠিক ও বহুল ব্যবহার নিশ্চিতকরণ।
.
:: ভিশন ২০২১ এর সাথে ডিজিটাল বাংলাদেশ কিভাবে সম্পর্কযুক্ত?
‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ শব্দযুগলের সাথে ‘ভিশন ২০২১’ শব্দযুগলের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। ইংরেজী ভিশন শব্দের অর্থ দূরদৃষ্টি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তির বছর ২০২১ সাল। ডিজিটাল যন্ত্রপাতি এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি, অর্থাৎ আইসিটির বহুল ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ২০২১ সালে সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্রে পরিণত করা এর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। সরকার ২০২১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধশালী ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্য স্থির করেছে। কমপিউটার ও ইন্টারনেটের বহুল ব্যবহার এ দেশের জনগণের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা। জনসাধারণের প্রত্যাশার সাথে সরকারের প্রত্যাশার মিলনের ফলে সমৃদ্ধশালী ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন সম্ভব হবে বলে সবাই আশাবাদী।
.
বর্তমান সভ্যতা ডিজিটাল প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল। কমপিউটার, মোবাইল-ফোন” target=”_blank”>মোবাইল ফোন, ক্যামেরা, প্রিন্টার, ইন্টারনেট ইত্যাদি ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর যন্ত্র ও ব্যবস্থার উদাহরণ। ডিজিটাল প্রযুক্তি, ডিজিটাল যন্ত্রপাতি ও তাদের সঠিক ব্যবহার দ্রুত উন্নয়নের চালিকাশক্তি। তাই রূপকল্প ২০২১-এর সাথে রয়েছে ডিজিটাল প্রযুক্তির গভীর সম্পর্ক। ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে দেশকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দেয়া রূপকল্প ২০২১-এর উদ্দেশ্য। ২০২১ সালের বাংলাদেশ হবে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, সুশিক্ষিত, সুদক্ষ এবং সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ।
.
ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশন ২০২১-এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ‘নগদ অর্থের চেয়ে উত্তম জোটে’র (Better than cash Allign) সাথে অংশিদারিত্ব খুলে বাংলাদেশ—জনগণকে আর্থিক সেবাদানের ক্ষেত্রে কয়েক ধাপ এগিয়ে গেছে। বস্তুত, সরকার সামাজিক সুরক্ষার জন্যে জনগণকে প্রদেয় অর্থ এবং সেবা গ্রহণের বিনিময়ে জনগণের কাছ থেকে গৃহীতব্য সকল অর্থ লেনদেনের প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজ করে ডিজিটাল অর্থনীতির নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে। এই প্রক্রিয়া সকল প্রকার অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেন এবং রেমিট্যান্স বিনিময়ের ক্ষেত্রকে সুগম ও সম্প্রসারিত করে ই-কমার্সকে শক্তিশালী করবে। ব্যয় সংকোচন, স্বচ্ছতাবর্ধন, সময় বাঁচানো প্রভৃতির সহায়ক হওয়ায় ডিজিটাল আর্থিক সেবাপ্রদানের এই পদ্ধতি বিশ্বের বহু সরকারের মতো বাংলাদেশ সরকারও গ্রহণ করেছে। দেশে গ্রামের এবং শহরের মিলে ৫০০০-এর অধিক ডিজিটাল সেন্টার খোলায় গড়ে ৪.৫ মিলিয়ন মানুষকে সম্প্রতি ৬০টি ডিজিটাল সেবা-সুযোগের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে। এ সকল ডিজিটাল সেন্টারে দুজন উদ্যোক্তার মধ্যে একজন নারী নিযুক্তির বিধানকে বাধ্যতামূলক করায় নারী সংবেদনশীল সেবা প্রদানের পরিবেশও নিশ্চিত হচ্ছে।
.
:: ডিজিটাল বাংলাদেশের বাস্তবায়নের রূপরেখা :
২০২১ সালে বাংলাদেশের সমৃদ্ধির রূপরেখা বা অবস্থা স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হয়নি। বিভিন্ন আলোচনা, টকশো, পত্রপত্রিকার লেখালেখি থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের জন্য নানারকম আয়োজন ও কার্যক্রমের বর্ণনা পাওয়া যায়। তবে এজন্য স্পষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করে পর্যায়ক্রমে সে লক্ষ্য বাস্তবায়নের কার্যক্রম গ্রহণ করা প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে মালয়েশিয়ার সুপারকরিডরের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন কৌশল হতে পারে একটি অনুসরণীয় উদাহরণ। ১৯৯১ সালে গৃহীত এই দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২০ সালে মালয়েশিয়া পরিণত হবে একটি উন্নত রাষ্ট্রে।
.
এ প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয় হলো : ই-গভর্নেন্স, ই-কমার্স, ই-এডুকেশন, ই-মেডিসিন, ই-অ্যাগ্রিকালচার ইত্যাদি। অর্থাৎ ডিজিটালপ্রযুক্তি বা আইসিটিনির্ভর প্রশাসনব্যবস্থা, ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিক্ষাব্যবস্থা, চিকিৎসাব্যবস্থা, কৃষি ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি। ডিজিটালপ্রযুক্তির ব্যাপক প্রসার ছাড়া পশ্চাৎপদ বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে সমৃদ্ধশালী মাঝারী আয়ের দেশে পরিণত করা সম্ভব হবে না।
.
ডিজিটালপ্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্রুতগতিতে সরকারের সেবামূলক কার্যক্রম জনগণের মধ্যে পৌঁছে দেয়া সম্ভব। মোবাইল-ফোন” target=”_blank”>মোবাইল ফোন অথবা ইন্টারনেটের মাধ্যমে দ্রুত তথ্য বিনিময় সম্ভব। ইন্টারনেট ব্যবহার করে ঘরে বসে অফিস ও ব্যবসায় বাণিজ্য পরিচালনা উন্নত দেশে একটি বিবর্ধমান ট্রেন্ড, এবং এর ফলে প্রচলিত নয়টা-পাঁচটা অফিস-সময়ের গুরুত্ব ক্রমাগত কমে আসছে। এই ব্যবস্থা পরিবহন ব্যয় ও সময় সাশ্রয়ে সহায়ক এবং বড় বড় শহরে জানজট কমাতে সহায়ক। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তথ্যের স্বচ্ছতা বিধানের মাধ্যমে দুর্নীতি ও অদক্ষতা নির্ণয় করা সহজ হয়। ২০২১ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ হবে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, সুশিক্ষিত, সুদক্ষ এবং সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়ন কৌশল ছাড়া কল্পনার এই ‘সোনার বাংলা’ বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না।
.
:: ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন কৌশল :
বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে। ডিজিটাল বাংলাদেশে এই বিপুল জনগোষ্ঠী উপকৃত হবে, এটাই স্বাভাবিক। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের জন্য গ্রাম, ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা এবং রাজধানী এই পাঁচ স্তরবিশিষ্ট উন্নয়ন প্রকল্প চালু করতে হবে। এই প্রচেষ্টার কেন্দ্রবিন্দু হবে উপজেলা। উপজেলা সদরের সব অফিসকে দ্রুত ডিজিটাল অফিসে রূপান্তর করে ইউনিয়ন ও জেলা সদরের সাথে ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করা দরকার। এজন্য উপজেলা সদরে অবস্থিত সব অফিসে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামসহ জনবল সৃষ্টি করা প্রয়োজন। মোবাইল ইন্টারনেটপ্রযুক্তি ব্যবহার করে এ কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব।
.
উপজেলা সদরে কেন্দ্রীয় তথ্যকেন্দ্রসহ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন অফিসে তথ্য সেবাকেন্দ্র স্থাপন করা প্রয়োজন। এমনকি হাইস্কুল ও কলেজ হতেও এ ধরনের তথ্যকেন্দ্র পরিচালনা করা যায়। এ ধরনের তথ্যকেন্দ্রে মুদ্রণ ও মুভি প্রদর্শনসহ বিভিন্ন ধরনের ইন্টারনেট সেবার ব্যবস্থা থাকবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, উৎসব অথবা অনুষ্ঠানের ছবি স্ক্যান করে অথবা মোবাইল-ফোন” target=”_blank”>মোবাইল ফোনে গৃহীত ছবি দেশ-বিদেশ দ্রুত পাঠানোর ব্যবস্থা থাকতে পারে এসব তথ্যকেন্দ্রে।
.
:: ডিজিটাল বাংলাদেশ – এর তাৎপর্য :
ডিজিটাল যন্ত্রপাতির ব্যবহার বাড়িয়ে দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়াই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এর অন্তর্নিহিত তাৎপর্য। পৃথিবীর আর দশটি দেশের তুলনায় এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জন নৈরাশ্যজনক। বর্তমানে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা শতকরা ১২ ভাগের মতো। বিশাল জনগোষ্ঠী এখনো পার্সোনাল কমপিউটার ছুঁয়ে দেখেনি। এখনো এক-তৃতীয়াংশ জনগণ সাধারণ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। ডিজিটাল বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উপাদান ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের ব্যবহার উল্লেখ করার মতো নয়। মোবাইল-ফোন” target=”_blank”>মোবাইল ফোনের অগ্রগতি সমেত্মাষজনক মনে হলেও বিশ্ব পরিস্থিতির তুলনায় অনেক পেছনে। বর্তমানে ১৬ কোটি জনসংখ্যার জন্য ফোনের সংখ্যা প্রায় পাঁচ কোটি, অর্থৎ টেলিফোনের ঘনত্ব প্রায় শতকরা তেত্রিশ ভাগ। পৃথিবীর অনেক দেশে এই ঘনত্ব শতকরা একশ’ ভাগের উপরে এবং কয়েকটি দেশে শতকরা দুইশ’ ভাগের বেশি। পার্শ্ববর্তী থাইল্যান্ডে এই ঘনত্ব শতকরা সোয়াশ’ ভাগ। উন্নয়নশীল দেশে মোবাইল-ফোন” target=”_blank”>মোবাইল ফোনের গুরুত্ব অনেক। কথা বলা ও টিভি দেখা ছাড়াও SMS, ই-মেইল ও ওয়েব ব্রাউজিংয়ের জন্য মোবাইল-ফোন” target=”_blank”>মোবাইল ফোনের ব্যবহার দ্রুত বেড়ে চলেছে। এমতবস্তায় দেশের সর্ব ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহারের বিকল্প নেই।
.
:: ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে করণীয় :
ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের জন্য উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বিষয় হলো : গ্রাম, ইউনিয়ন ও উপজেলাসহ দেশব্যাপী ইন্টারনেট ও টেলিফোনের ব্যাপক সম্প্রসারণ, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে সক্ষম জনবল সৃষ্টি এবং সে জন্য শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন। আরো প্রয়োজন ওয়েবের ব্যবহার সম্প্রসারণসহ ই-গভর্নেন্সের ব্যাপক সম্প্রসারণ এবং ইন্টারনেট তথ্যভান্ডারের জন্য বাংলা ভাষার বহুল ব্যবহার। দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর প্রয়োজনে দেশে মোবাইল-ফোন” target=”_blank”>মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপ কমপিউটার উৎপাদনের প্রচেষ্টা নেয়া দরকার। আশার কথা যে, এসব বিষয় নিয়ে বর্তমানে সরকারের উদ্যোগ লক্ষণীয়। তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষাসহ শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর প্রচেষ্টা চলছে। তাছাড়া ই-মেইল, ভিডিও কনফারেন্সিং ও ই-গভর্নেন্সসহ প্রশাসনে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের প্রচেষ্টা চলছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া নিয়ে বর্তমান অস্বস্তিকর অবস্থা কার না অজানা। ইন্টারনেটের মাধ্যমে টেন্ডার প্রক্রিয়া পরিচালনা এই অস্বস্তিকর অবস্থা হতে দেশকে কিছুটা হলেও মুক্তি দিতে পারে।
.
সরকারি সেবা জনসাধারণের নিকট দ্রুত পৌঁছে দেয়ার জন্য প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ অফিস ও প্রতিষ্ঠানে উপযুক্ত জনবল ও যন্ত্রপাতি সজ্জিত তথ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। মোবাইল-ফোন” target=”_blank”>মোবাইল ফোন, SMS, ই-মেইল ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে এসব কেন্দ্র থেকে দ্রুত রাষ্ট্রীয় সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়া সম্ভব। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একজন কৃষক মোবাইল-ফোন” target=”_blank”>মোবাইল ফোনে কথা বলে অথবা SMS করে ফসলের রোগবালাই সম্পর্কে দ্রুত বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নিতে পারেন। এভাবে সেবা যোগানোর জন্য নির্ভরযোগ্য কৃষি তথ্যকেন্দ্র, চিকিৎসা তথ্যকেন্দ্র, কর তথ্যকেন্দ্র, শিক্ষা তথ্যকেন্দ্র, আবহাওয়া তথ্যকেন্দ্র, পরিবহন তথ্যকেন্দ্র এবং এ ধরনের অন্যান্য তথ্যকেন্দ্র চালু করার ব্যবস্থা করা দরকার।
.
ডিজিটালপ্রযুক্তি ও বিদ্যুতের ব্যবহার, প্রযুক্তিগত শিক্ষার অবস্থা প্রভৃতির বিবেচনায় ২০২১ সালে সমৃদ্ধশালী ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন মোটেই সহজ কাজ নয়। শুধু সরকারি প্রচেষ্টায় সোনার বাংলা, অর্থাৎ ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। সরকারের সহায়তায় এবং জনসাধারণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করতে হবে। দৃঢ়প্রত্যয় এবং সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়ন কৌশল এই লক্ষ্য অর্জনে জাতিকে সক্ষম করবে।
.
:: তথ্যপ্রযুক্তি (ICT) :
যুগে যুগে পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রস্তরযুগ, কৃষিযুগ, যন্ত্রযুগ পেরিয়ে মানবসভ্যতা এখন তথ্যযুগে। বর্তমান তথ্যযুগে দ্রুত এবং সময় মতো কর্ম সম্পাদন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্ণ হবে। অনেক ত্যাগ, তিতিক্ষা ও লাখ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশ কেমন হবে ২০২১ সালে। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির বহুমুখী ব্যবহারের মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্য আয়ের দেশে এবং আগামী ত্রিশ বছরের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্য স্থির করেছে বাংলাদেশ সরকার। মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করার জন্য আমাদের জিডিপি বর্তমান ছয়শত ডলার থেকে অন্তত দ্বিগুণ হতে হবে। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য বাংলাদেশ সরকার তৈরি করেছে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি নীতিমালা ২০০৯।
.
:: তথ্যপ্রযুক্তি সেবা এবং রূপকল্প ২০২১ :
বর্তমানে দৈনন্দিন ও রাষ্ট্রীয় কর্মকান্ড তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়েছে এবং বাংলাদেশ সরকার এজন্য অনেক রকম কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে এবং অনেক রকম কার্যক্রম চলছে। আগামী দিনের বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয় হলো : ই-গভর্নেন্স, ই-কমার্স, ই-এডুকেশন, ই-মেডিসিন, ই-অ্যাগ্রিকালচার, অর্থাৎ তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর প্রশাসন, ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিক্ষা, কৃষি, চিকিৎসা ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে প্রযুক্তির বহুল ব্যবহার ছাড়া ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করা সম্ভব হবে না।
.
রূপকল্পের বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় বা অন্যান্য সেবা পাওয়ার জন্য জনসাধারণকে অফিস-আদালতে দৌড়াতে হবে না। বাড়িতে বসে ইলেকট্রনিক যোগাযোগের মাধ্যমে জনসাধারণ অনেক ধরনের কাজ করতে পারবেন এবং অনেক তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন। এ ধরনের কয়েকটি উদাহরণ হতে পারে : ট্যাক্স বা কর পরিশোধ, বিভিন্ন ধরনের বিল পরিশোধ, বাস বা ট্রেনের টিকেট সংগ্রহ, সংবাদপত্র পঠন, বিভিন্ন ধরনের আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা দেয়া, কৃষির জন্য বালাই দমন, বাজারদর, সার ব্যবহার ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ, পরীক্ষার ফল সংগ্রহ এবং আরও অনেক কিছু।
.
সরকারি এবং অন্যান্য সেবা জনসাধারণের কাছে দ্রুত পৌঁছে দেয়ার জন্য প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ অফিস ও প্রতিষ্ঠানে উপযুক্ত জনবল ও যন্ত্রপাতি সজ্জিত তথ্যকেন্দ্র থাকবে। মোবাইল-ফোন” target=”_blank”>মোবাইল ফোন, SMS, ই-মেইল ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে এসব কেন্দ্র থেকে দ্রুত রাষ্ট্রীয় এবং অন্যান্য সেবা জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একজন কৃষক মোবাইল-ফোন” target=”_blank”>মোবাইল ফোনে কথা বলে, SMS করে অথবা ই-মেইলের মাধ্যমে আবহাওয়া, বাজারদর, ফসলের বালাই দমন ইত্যাদি অনেক বিষয়ে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নিতে পারেন। এভাবে সেবা দেয়ার জন্য থাকবে নির্ভরযোগ্য কৃষি তথ্যকেন্দ্র, চিকিৎসা তথ্যকেন্দ্র, কর তথ্যকেন্দ্র, শিক্ষা তথ্যকেন্দ্র, আবহাওয়া তথ্যকেন্দ্র, পরিবহন তথ্যকেন্দ্র এবং এ ধরনের অনেক অনেক তথ্যকেন্দ্র। উল্লেখ্য যে, রূপকল্প ২০২১-এর স্বল্পমেয়াদী অনেক করণীয় বিষয়ের অগ্রগতি সমেত্মাষজনক। প্রশাসনিক কাজের গতি বাড়ানো ও গুণগত মান উন্নয়নের জন্য সরকার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক অনেক কার্যক্রম শুরু করেছে।
.
:: যোগাযোগ ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সেবাসমূহ :
১. মোবাইল ফোনের মাধ্যমে রেলওয়ের টিকেট ক্রয়।
২. স্টেশনভিত্তিক অনলাইন যাত্রীসেবা।
৩. ওয়েবসাইটভিত্তিক ট্রেন ও বাসের ভাড়া ও সময়সূচি সংক্রান্ত তথ্যাবলি।
৪. ডিটিসিবি কর্তৃক ঢাকা মহানগরীর বাসে ই-টিকেটিং সিস্টেম ও IC Card এর মাধ্যমে যাত্রীসেবা প্রদান।
৫.ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দরপত্র বিজ্ঞপ্তিসমূহ অবলোকন।
৬. ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিভিন্ন ফর্ম ডাউনলোড পদ্ধতি।
৭. ওয়েবসাইটভিত্তিক বিভিন্ন ট্যাক্স ও ফিস্ সংক্রান্ত তথ্যাবলি।
৮. অনলাইনে মতামত প্রদান।
৯.মোটরযানের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ফিটনেস, রুট পারমিট, ট্যাক্স টোকেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু/নবায়ন এবং এ সংক্রান্ত ফি নির্ধারণ, আদায় ও সরকারি খাতে জমাকরণ পদ্ধতি অনলাইনভিত্তিক করা।
.
:: তথ্যপ্রযুক্তি জনবল :
ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় জনবলকে প্রধানত দুইভাগে ভাগ করা যায়। এদের এক ভাগ ই-সেবা দেবে এবং অন্য ভাগ ই-সেবা নেবে। স্বয়ংক্রিয় উপায়ে জনসাধারণকে দ্রুত ই-সেবা বা ই-সার্ভিস দেয়ার জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত তথ্য অবকাঠামো। কমপিউটারপ্রযুক্তি, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি, টেলিযোগাযোগপ্রযুক্তি, ইন্টারনেট এবং সংশ্লিষ্ট হার্ডওয়্যার-সফটওয়্যার ইত্যাদি এই অবকাঠামোর অন্তর্ভুক্ত। তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামো স্থাপন, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও সম্প্রসারণের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ জনবল থাকতে হবে। সব ধরনের সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের জনবল প্রয়োজন হবে।
.
বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ গ্রামে বসবাস করে। ডিজিটাল বাংলাদেশে এই বিপুল জনগোষ্ঠী উপকৃত হবে, এটাই স্বাভাবিক। তাই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে গড়তে হবে ডিজিটাল গ্রাম। এ জন্য গ্রামে তথ্যপ্রযুক্তি সাক্ষরতা সম্প্রসারণ এবং তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
.
:: তথ্যপ্রযুক্তি জনবল সৃষ্টির কৌশল :
১। বাংলাদেশের সব মানুষ হবে শিক্ষিত এবং তাদের থাকবে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে জানা-শোনা। এ ধরনের সমাজকে বলা হয় জ্ঞানভিত্তিক সমাজ। ডিজিটাল বাংলাদেশের জ্ঞানভিত্তিক সমাজের জন্য প্রয়োজন হবে তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন জনবল। ডিজিটাল অবকাঠামো স্থাপন, পরিচালনা এবং তথ্যসেবা দেয়ার জন্য প্রয়োজন দক্ষ তথ্যপ্রযুক্তিবিদ এবং তথ্যসেবা নেয়ার উপযুক্ত জ্ঞানসম্পন্ন মানুষ। শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে না। প্রাতিষ্ঠানিক এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীকে তথ্যপ্রযুক্তি সেবা নেয়ার উপযুক্ত করে তুলতে হবে।
.
২। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সব স্তরে তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। প্রাথমিক ও নিম্নমাধ্যমিক পর্যন্ত পাঠ্যক্রমে সহজ উপায়ে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে সাধারণ জ্ঞান অর্জনের সুযোগ রাখতে হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তর সম্পন্ন করার পর অনেক শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষা স্তরে প্রবেশ করে না। তাই সব ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষার সম্প্রসারণ ঘটাতে হবে। আশার কথা, এ যে এসব বিষয়ে বর্তমান সরকার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে।
.
৩। তথ্যসমাজের প্রতিটি স্নাতক সনদপ্রাপ্ত ব্যক্তি অবশ্যই তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানে সমৃদ্ধ হবেন। এজন্য সব বিষয়ের স্নাতক পর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে অন্তত একটি কোর্স থাকতে হবে। তাছাড়া পঠন-পাঠনের জন্য তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। দেশের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব প্রচেষ্টা শুরু হলেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কলেজসমূহে এ সুযোগ সৃষ্টি করার পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
.
৪। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশের সব বয়স্ক জনগণকে তথ্যসমাজের উপযোগী করে গড়ে তোলা প্রয়োজন। কমপিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণের জন্য অনেক প্রতিষ্ঠান এ ধরনের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে। গ্রামে-গঞ্জে ও অফিস-আদালতে এ ধরনের প্রশিক্ষণের প্রসার ঘটান প্রয়োজন।
.
৫। ডিজিটাল গ্রাম গড়তে না পারলে ডিজিটাল বাংলাদেশ অসম্ভব ডিজিটাল বাংলাদেশে গ্রাম ও শহরের মধ্যে তথ্যসেবা এবং তথ্য সুযোগ-সুবিধার কোনো পার্থক্য থাকবে না। এজন্য গ্রামে তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। উপজেলা ও ইউনিয়ন প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিটি গ্রামে তথ্যসেল বা তথ্যকেন্দ্র স্থাপন করা প্রয়োজন। এই সেলের মাধ্যমে গ্রামবাসী ডিজিটাল বাংলাদেশ সরকারের সব ধরনের কর্মকান্ড সম্পর্কে সরাসরি অবহিত হবেন। এ সেলের মাধ্যমে মোবাইল-ফোন” target=”_blank”>মোবাইল ফোন, SMS, ই-মেইল, ইন্টারনেট ইত্যাদি ব্যবহার করে জনসাধারণ কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আবহাওয়া, রাজনীতি প্রভৃতি নানা বিষয়ে দ্রুত টাটকা খবর সংগ্রহ করবেন। বিনোদন ও প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার হবে এই সেল বা কেন্দ্র।

 

মন্তব্য করুন

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline