এসে গেছে শীতকাল। এ সময়ে সূর্যের তাপটা কমে আসবে, তাপমাত্রাও থাকবে কম আর আমাদের অজান্তেই শরীরে তৈরি হবে ভিটামিন ডি এর অভাব। অন্য যে কোনো ভিটামিনের অভাবে যেমন হয়, তেমনই ভিটামিন ডি এর অভাবেও দেখা দিতে পারে বেশ কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা।
এই সপ্তাহেই গবেষকেরা ভিটামিন ডি এর ওপর একটি গবেষণা শেষ করেছেন এবং এতে দেখা যায়, যথেষ্ট ভিটামিন ডি শরীরে থাকলে আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়, ভারি ব্যায়ামের ক্ষমতা বাড়ে এবং এর পাশাপাশি কমে ক্লান্তি। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, আপনি প্রচুর পরিশ্রম করেও ক্লান্ত হবেন না, ঠিক যেন সুপারম্যানের মতো।
ভিটামিন ডি একটা হরমোনের মতও কাজ করে। হাড় এবং দাঁতের গঠন, অন্যান্য পুষ্টি উপাদান শোষণ এবং এমন আরও অনেক খুব গুরুত্বপূর্ণ শারীরিক প্রক্রিয়ায় কাজে আসে ভিটামিন ডি। কিন্তু শুধু খাবার থেকে বেশিরভাগ মানুষ ভিটামিন ডি পান না। সূর্যের আলোয় সময় কাটালে আল্ট্রাভায়োলেট বি এর সংস্পর্শে শরীরে তৈরি হয় বেশ কিছুটা ভিটামিন ডি। শীতকালে সূর্যের আলো কমে গেলে আসলে এই ভিটামিন ডি পাওয়ার পরিমাণটাও কমে যায়। এই চিন্তা থেকেই ইংল্যান্ডের কুইন মার্গারেট ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা ভিটামিন ডি এর উপকারিতাগুলো নিয়ে কাজ করেন। এখানে যে উপকারিতাগুলো উঠে আসে, ভিটামিন ডি এর অভাব থাকলে সেসব উপকার পাওয়া যায় না।
এই গবেষণায় দুই সপ্তাহ ধরে ৫০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ডি খাওয়ার পর দেখা যায়, তাদের রক্তচাপ কমে এসেছে এবং এর পাশাপাশি তাদের শরীরে স্ট্রেস হরমোন কর্টিসোলের পরিমাণটাও কমে এসেছে। কিন্তু এর চাইতেও চমৎকার যে ফলাফল পাওয়া গেছে, তা হলো ফিটনেস টেস্টের ক্ষেত্রে। যারা এই পরিমাণ ভিটামিন ডি খেয়ে থাকেন তারা ২০ মিনিটে সাড়ে ছয় কিলোমিটার সাইকেল চালাতে পারেন যেখানে ভিটামিন ডি খাওয়ার আগে পারতেন ৫ কিলোমিটার। কিন্তু এতো বেশি দুরত্ব চালানোর পরেও তাদের ক্লান্তি কম হয়। এটা সম্ভব কর্টিসলের মাত্রা কমে যাবার জন্য হয়েছিলো।
এগুলো ছাড়াও, ভিটামিন ডি ক্যান্সার, হৃদরোগ, আলঝেইমার্স, ডায়াবেটিস, ডিপ্রেশন এবং ওজন বৃদ্ধির মতো জটিলতাগুলো রোধ করতে সাহায্য করে ভিটামিন ডি। এসব কারণে আপনিও ইচ্ছে করলে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন।
খুব বেশি রোদে থাকাটা যেমন স্কিন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়, তেমনই খুব কম রোদে থাকলেও শরীরে ভিটামিন ডি উৎপন্ন হতে পারে না। এ কারণে শরীরে রোদ মাখুন, থাকুন সুস্থ।