৩৮ তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা নিয়ে কিছু কথা—-
১- বিগত বছরের লিখিত পরীক্ষার প্রতিটি বিষয়ের প্রশ্নগুলো আগে একবার দেখে নিন । প্রতিটা বিষয়ের প্রশ্নগুলো আলাদাভাবে দেখুন , analysis কর যে সাধারনত কেমন প্রশ্ন হয় , আপনার ধারনা হবে যে কোন বিষয়গুলোতে আপনার কেমন প্রস্তুতি নিতে হবে ।
২- একটি খাতায় প্রতিটি বিষয় নিয়ে নোট কর যে solid নম্বর কত আছে ,সেগুলো মিস করা যাবেনা এমন চেষ্টা করবেন । এই নম্বর গুলোর দিকে মাস্ট আপনাকে বিশেষ নজর দিতে হবে ।
৩- প্রতিটা বিষয়ের পরীক্ষা সমান পরিমান ভালো দেয়া হয়তোবা সম্ভব না,তাই চেষ্টা করবেন average এ যেন একটা ভালো পরীক্ষা হয় ,কোন বিষয় যেন খুব খারাপ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন ,বিশেষ নজর দিতে হবে বিজ্ঞান,গনিত,মানসিক দক্ষতা ,ইংরেজী ১ম পত্র এবং বাংলা প্রথম পত্রের দিকে ।যাদের গনিত এবং বিজ্ঞান ভালো হবে তাদের অন্যান্য পরীক্ষার উপর load অনেকটা কমে যাবে । বেশি বেশি গনিত চর্চা কর ।
৪- বর্ণনামূলক প্রশ্নগুলো traditional ভাবে না লিখে একটু হলেও special ভাবে লেখার চেষ্টা কর । আপনার খাতাটা দেখে যেন ভালো একটা ধারনা হয় স্যারদের ।প্রচুর reference দেয়ার চেষ্টা কর ,এর জন্য যে খুব স্টাডি প্রয়োজন তা কিন্তু না । দরকার একটা ভালো প্লানিং ,যেমন আপনি আগেই ঠিক করে রাখবেন যে কি টাইপ প্রশ্ন কিভাবে উত্তর করা শুরু করবেন ,যেমন প্রশ্নের উত্তরের শুরুতে একটা বিখ্যাত মানুষের দেয়া সংজ্ঞা বা উক্তি বা কবিতার লাইন বা সংবিধানের অনুচ্ছেদের reference দিয়ে শুরু করতে পারেন ইত্যাদি । common কিছু topic গুলো একটা খাতায় লিখে ফেলুন যেমন মুক্তিযুদ্ধ, দুর্নীতি, পরিবেশ, অপরাধ,বিশ্ব অস্থিরতা, যুদ্ধ, চুক্তি, নারীর অধিকার /স্বাধীনতা,সংবিধান ইত্যাদি ।পরে গুছিয়ে ফেলুন যে এই টাইপ প্রশ্ন যাই আসুক না কেন আপনি আপনার প্ল্যান অনুযায়ী নিজের মত স্পেশালি শুরু করবেন । খেয়াল রাখবেন আপনার খাতা দেখে যেন গতানুগতিক মনে না হয় , অযথা পাতাভরা লেখার চেয়ে informative লিখলে মার্ক বেশি আসার সম্ভাবনা বেশি । স্টাডি যাই করেন না কেন লিখবেন গুছিয়ে, বেশি স্টাডি করার চেয়ে লিখিত পরীক্ষায় সুন্দর তথ্যবহুল লেখার দিকে মনোযোগ বেশি দিন । প্রয়োজন হলে ইন্টারনেট থেকে আপনার প্ল্যান মত কিছু ডাটা নামিয়ে নোট করে রাখুন ।
৫- বিখ্যাত উক্তি,বই এর refrence ,সংবিধানের অনুচ্ছেদ ,মানচিত্র, ছক,গ্রাফ, পত্রিকার নাম তারিখসহ reference বিভিন্ন topic ভিত্তিক,ওয়েবসাইট এর ঠিকানা ইত্যাদি প্রশ্ন ভিত্তিক লিখে আসার চেষ্টা কর , ঐ যে বললাম আপনিই ঠিক করবেন কোন প্রশ্নের উত্তরে কি কি লিখে আসবেন, তাহলে আপনার জন্য পরীক্ষা দেয়াটা সহজ হবে, এমনটা নয় যে আপনাকে এক প্রশ্নেই সব লিখতে হবে,আপনি আগে থেকেই প্ল্যান করে রাখবেন যে কি টাইপের প্রশ্নের উত্তরে কোন reference দিবেন ।কিছু ছক তৈরি করে রাখুন যে আপনি সেগুলো অবশ্যই দিয়ে আসবেন,যেকোনো উত্তরে লেখার মাধ্যমে কিন্তু যেকোনো topic নিয়ে আসা সম্ভব,এটা অভ্যাস কর তাহলে আপনার reference দেয়াটা অনেক সহজ হবে,পাতা পাতা ভরে লিখে আসলেই যে নম্বর বেশি আসবে ধারনাটা ঠিক নয়,এমন ভাবে উত্তর করে আসবেন যেন আপনার খাতার একটা আলাদা weight থাকে ( এই weight মানে খাতার ওজন নয় ),বাংলা লাইন লেখার সময় একটু সাহিত্য টাইপের লেখার অভ্যাস কর,আপনার বাংলা লেখার মানটা উন্নত করার চেষ্টা কর । কি টাইপ প্রশ্নের উত্তরে কি reference দিবেন তা একটা খাতায় নোট করে ফেলুন,অযথা প্ল্যান ছাড়া random স্টাডি করে random লিখে আসলে তেমন ভালো কিছু হবার সম্ভাবনা কম, স্টাডি করার চেয়ে যেটি স্টাডি করবেন তা apply করার দিকে খেয়াল রাখুন, special reference গুলো নীল কালিতে উত্তর করতে পারেন । বিজ্ঞানে যেখানে সম্ভব না চাইলেও একটা চিত্র দিয়ে আসুন, সেটা অবশ্যই প্রাসঙ্গিক হতে হবে । বাংলাদেশ এবং বিশ্বের মানচিত্র নিয়ে ভালো ধারনা রাখুন এবং পারলে দৈনিক একটু করে মানচিত্র দেখতে থাকুন, একেক দিন একেক region দেখুন । মধ্যপ্রাচ্য, উপমহাদেশ , আমেরিকা মহাদেশ, আফ্রিকা ইত্যাদি জায়গার ম্যাপ হাল্কা ধারনা নিয়ে রাখুন, সুযোগ বুঝে এঁকে দিয়ে আসবেন ।
৬- মনে রাখবেন বি সি এস এর মেইন পরীক্ষা হল লিখিত পরীক্ষা ।বাস্তবিকভাবে লিখিত পরীক্ষা যাদের ভালো হয় তারাই সফল হয়, আপনারা খেয়াল করবেন অনেকের ভাইভা খুব ভালো হবার পরও তাদের চাকুরী হয়না,সাধারনত তাদের লিখিত পরীক্ষার নম্বর কম থাকার কারনে এটা হয়, যেহেতু রেজাল্ট লিখিত আর ভাইভার নম্বর মিলিয়ে সম্মিলিতভাবে দেয়া হয়, যেমন কেউ লিখিত পরীক্ষায় ৯০০ এর মধ্যে ৫৭০ পেল আর ভাইভা তে ১০০= ৬৭০,আবার কেউ লিখিত পরীক্ষায় ৫২০ পেল এবং ভাইভা তে পেল ১৪০=৬৬০,তাহলে চাকুরীটা কার হবার সম্ভাবনা বেশি?আমি just একটা তুলনামুলক কথা বললাম ।
*** মূলকথা প্ল্যান করে স্টাডি কর, অযথা অনেক বেশি স্টাডি করে মাথা খারাপ করার দরকার নেই, প্রতিটা বিষয় ৭ দিন করে সময় নিয়ে যেটি পারবেন স্টাডি করে ফেলুন তারপর আরেকটি বিষয় শুরু কর ,ইংরেজীতে অবশ্যই যেকোনো ভালো গ্রামার বই থেকে অনুবাদ প্র্যাকটিস কর । ইংরেজীতে translation, vocabulary, idioms phrase, appropriate prepostion , proverb, group verb এগুলো দৈনিক অল্প করে স্টাডি করে যান , গনিতের সকল সূত্রগুলো একটি খাতায় লিখে পড়ে ফেলুন । বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দরকার হলে আপনার সায়েন্সের বন্ধুদের সাথে আলোচনা করে স্টাডি করতে পারেন, নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস রাখবেন । অন্য কারও দিকে না তাকিয়ে নিজের মত করে স্টাডি করে যান , যারা ঠিকভাবে পরিশ্রম করে তাদের একটা ভাল output আসবেই, হয় আজ না হয় কাল । যারা খুব অল্পে ধৈর্যহারা হয় তাদের জন্য সফল হওয়াটা একটু কঠিনই বৈকি । কোন গুজবে কান দেবেন না,নিজের মত নিজেকে তৈরি কর, সফল আপনি হবেনই ।
আরো পড়ুন: