তড়িচ্চালক শক্তি
কোনো বর্তনীতে তড়িৎ প্রবাহ চালনা করার জন্য তড়িৎশক্তির প্রয়োজন হয়। কোনো তড়িৎ উৎস একক ধনাত্মক আধানকে বর্তনীর এক বিন্দু থেকে উৎসসহ সম্পূর্ণ বর্তনী ঘুরিয়ে আবার ঐ বিন্দুতে আনতে যে পরিমাণ কাজ সম্পন্ন করে, তথা উৎস যে তড়িৎশক্তি ব্যয় করে, তাকে ঐ উৎসের তড়িচ্চালক শক্তি বলে।
তড়িতের নিরাপদ ও কার্যকর ব্যবহার
Safe and effective use of electricity
তড়িতের বিপজ্জনক দিকসমূহ: তড়িৎ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তড়িৎ আমাদের যেমন অনেক উপকারে আসে তেমনি এর অসতর্ক ব্যবহার অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে। বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি এবং বর্তনীতে যে কোনো ধরনের ত্রুটি বৈদ্যুতিক শক্ দিতে পারে এবং অগিড়বকাণ্ড ঘটতে পারে। শরীরের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহের ফলে মানুষের মৃত্যুরও ঝুঁকি রয়েছে। তড়িৎশক্তির ব্যবহার নি¤ড়ববর্ণিত তিনটি কারণে বিপজ্জনক হতে পারে।
১. অন্তরকের ক্ষতিসাধন;
২. ক্যাবলের অতি উত্তপ্ত হওয়া;
৩. আর্দ্র অবস্থা।
তড়িতের নিরাপদ ব্যবহার
বাড়িতে তড়িৎ ব্যবহারের সময় যে সকল নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন এগুলো হলো:
১. সার্কিট ব্রেকার
২. ফিউজ
৩. সুইচের সঠিক সংযোগ
৪. ভূ-সংযোগ তার
এ ছাড়াও আজকাল বিভিনড়ব বহনযোগ্য যন্ত্রপাতিতে থ্রি পিন প্লাগ ব্যবহার করা হয়। এগুলোতে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ফিউজ সংযুক্ত থাকে। ফিউজটি তড়িৎ যন্ত্রটিকে নিরাপদ রাখে।
লোড শেডিং
প্রত্যেকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদন করে। সবগুলো বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হয়। বিভিন্ন এলাকার চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র গ্রাহক পর্যায়ে এ বিদ্যুৎকে পৌঁছে দেয় বা বিতরণ করে। কোনো নির্দিষ্ট এলাকার বিদ্যুতের চাহিদা উৎপাদন বা সরবরাহের তুলনায় বেশি হলে তখন বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের পক্ষে চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়ে উঠে না।তখন বাধ্য হয়ে উপকেন্দ্র কর্তৃপক্ষবিতরণ ব্যবস্থার নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় কিছু সময়ের জন্য বিদ্যুৎ বিতরণ বন্ধ করে দেয় বা বিদ্যুৎ সংযোগ বিভিন্ন করে। একে লোড শেডিং বলে। আবার উপকেন্দ্র যখন প্রয়োজনীয় চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ পায় তখন পুনরায় ঐ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। যদি লোড শেডিং এক নাগাড়ে কয়েক ঘন্টা স্থায়ী হয় তখন গ্রাহক পর্যায়ে লোডশেডিংকে সহনীয় করতে কর্তৃপক্ষচক্রাকারে বিভিন্ন এলাকায় লোড শেডিং করে থাকে।
১. পরিবাহী: যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে খুব সহজেই তড়িৎ প্রবাহ চলতে পারে তাদেরকে পরিবাহী বলে। এসকল পদার্থের মধ্য দিয়ে ইলেকট্রন মুক্তভাবে চলাচল করতে পারে। ধাতব তারের মধ্য দিয়ে আধান ইলেকট্রন দ্বারা পরিবাহিত হয়। এ কারণে ধাতব পদার্থগুলো তড়িৎ সুপরিবাহী। তামা, রুপা, অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি সুপরিবাহী পদার্থ। যে কারণে বৈদ্যুতিক সংযোজকে ধাতব তার ব্যবহার করা হয়।
২. অপরিবাহী: যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ চলতে পারে না তাদেরকে অপরিবাহী বা অন্তরক পদার্থ বলে। অর্থাৎ যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে ইলেকট্রন চলাচল করতে পারে না সেগুলো হলো অপরিবাহী পদার্থ। যেমন- প্লাষ্টিক, রাবার, কাঠ, কাচ ইত্যাদি। অপরিবাহী পদার্থের মধ্যে মুক্ত ইলেকট্রন থাকে না। প্লাষ্টিক জাতীয় পদার্থের মধ্য দিয়ে সহজে ইলেকট্রন প্রবাহিত হতে পারে না। যার ফলে প্লাষ্টিক হলো বিদ্যুতের জন্য অপরিবাহী পদার্থ। এ কারণেই বৈদ্যুতিক মিস্ত্রিগণ যে সকল স্ক্রু ড্রাইভার এবং প্লায়ার ব্যবহার করেন তাদের হাতল প্লাষ্টিক জাতীয় পদার্থ দ্বারা মোড়ানো থাকে। এ ছাড়া আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনে যে সকল তামার তার বৈদ্যুতিক তার ব্যাবহার করি সেগুলো প্লাষ্টিক দ্বারা আবৃত থাকে।
৩. অর্ধপরিবাহী: যে সকল পদার্থের তড়িৎ পরিবহন ক্ষমতা সাধারণ তাপমাত্রায় পরিবাহী এবং অপরিবাহী পদার্থের মাঝামাঝি, সে সকল পদার্থকে অর্ধপরিবাহী বলে। যেমন- জার্মেনিয়াম, সিলিকন ইত্যাদি। সুবিধামত অপদ্রব্য মিশিয়ে অর্ধপরিবাহী পদার্থের তড়িৎ পরিবাহকত্ব বৃদ্ধি করা যায়
প্রতিটি লেকচারে নতুন নতুন লিখা যুক্ত হচ্ছে, তাই কাঙ্খিত কোন লিখা না পেলে দয়া করে কিছুদিন পর আবার ভিজিট করে দেখবেন।
লিখাতে কিংবা লেকচারে কোন ভুলত্রুটি থাকলে অথবা আপনার কাঙ্খিত লিখা খুঁজে না পেলেইশিখন.কম এর ফ্যানপেইজ অথবা নিচে কমেন্ট কর