বিসিএস প্রিলিমিনারি সাধারণ বিজ্ঞান ইলেকট্রিক্যাল টেকনোলজি

ট্যাংকারে জ্বালানি ভরা : যে সকল ট্যাংকার লরী পেট্রোল, ডিজেল ইত্যাদি জ্বালানি নিয়ে রাস্তা দিয়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করে তাদের বেলায়ও স্ফুলিঙ্গ সৃষ্টি ও বিস্ফোরণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য জ্বালানি স্থানান্তরের আগে ভূ-সংযুক্ত করে নিতে হয়।
টেলিভিশন ও কম্পিউটারের মনিটর : ব্যবহারকালে টেলিভিশনের পর্দা ও কম্পিউটারের মনিটর স্থির তড়িতে আহিত হয়। এই আধানগুলো অনাহিত কণা যেমন ধুলো বালি ইত্যাদি আকর্ষণ করে, ফলে এগুলো তাড়াতাড়ি ময়লা হয়ে যায়।
কাপড় পাল্টানো : আমাদের পরিধেয় কাপড় চোপড় অনেক সময় নিজেদের মধ্যকার ঘর্ষণের ফলে আহিত হয়ে যেতে পারে। যখন আমরা কাপড় বদলাই তখন তখন আধান ভূমিতে চলে যাওয়ার সময় আমাদের অল্প শক্ খাওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকে
অপারেশন থিয়েটার : যেহেতু ধুলোবালি ও জীবাণু আহিত বস্তু দ্বারা আকৃষ্ট হয়, কাজেই হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে সাবধনতা অবলম্বন করা হয় যেন সার্জন, সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ এবং চিকিৎিসাসামগ্রী আধানমুক্ত থাকে। এ জন্য তাদেরকে ভূ-সংযুক্ত রাখার জন্য পরিবাহক রাবারের জুতা পরতে হয় এবং হাতে রাবারের গ্লাভস ব্যবহার করতে হয়, যাতে ভূমি থেকে সহজে ইলেকট্রন আসা যাওয়া করতে পারে।
পেট্রোলবাহী ট্রাকের সাথে ধাতব শিকল ঝুলানো থাকে : পেট্রোল, ডিজেল বা অন্য তরল জ্বালানিবাহী ট্যাংকার বা ট্রাকের সাথে একটি ধাতব শিকল লাগানো থাকে যেটি ট্রাক চলার সময় রাস্তা ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায়। যখন রাস্তা দিয়ে ট্রাক চলে তখন পেট্রোল ট্যাংকের গায়ে বারবার ধাক্কা খায় এবং এদিক ওদিক দুলতে থাকে। ট্যাংকের সাথে পেট্রোলের এই ঘর্ষণের ফলে আধান সঞ্চিত হয়। যদি ট্যাংকের কিনারা থেকে একটা স্ফুলিঙ্গ সৃষ্টি হয় তাহলে মর্মান্তিক দূর্ঘটনা ঘটতে পারে এবং পেট্রোলে আগুন ধরে যাবে। কাজেই পেট্রোল আধানের জন্য নিরাপদ স্থান নয়। ট্যাংকের পেছনে শিকল লাগিয়ে এই তড়িৎ ভূমিতে চলে যাবার পথ তৈরি করা হয়। যেহেতু ধাতু খুব ভালো পরিবাহী, তাই তড়িৎ ধীরে ধীরে ধাতব শিকলের মধ্য দিয়ে মাটিতে চলে যায়।
বিদ্যুৎ লাইনের সাথে ধাতব খুটির সরাসরি সংযোগ থাকে না : রাস্তায় বিদ্যুৎ লাইনের তার খাটাবার সময় ধাতব খুটির সাথে সরাসরি সংযুক্ত করা হয় না। ধাতু তড়িতের সুপরিবাহী। ধাতব খুটির সাথে সরাসরি সংযোগ করা হলে তারের তড়িৎ খুটির মধ্য দিয়ে মাটিতে চলে যেত। কেউ ঐ খুটি স্পর্শ করলে সাথে সাথে তড়িৎস্পৃষ্ট হতো এবং মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতো। তাই অপরিবাহী পোর্সেলিনের কাপের মধ্য দিয়ে তারকে খুটির সাথে সংযোগ দেওয়া হয়।
বজ্রপাত ও বজ্র নিরোধক : আমরা জানি বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প থাকে। এই জলীয় বাষ্প বায়ুমণ্ডলের আহিত আয়নগুলোর উপর ঘনীভূত হয়ে পানি কণার সৃষ্টি করে এবং তড়িতাহিত হয়। এই ধরণের পানির কণাগুলো একত্রিত হলেই মেঘের উৎপত্তি হয়। মেঘ ধনাত্মক বা ঋণাত্মক যে কোনো ভাবেই আহিত হতে পারে। তড়িতাহিত দুটি মেঘ কাছাকাছি এলে তাদের মধ্যে তড়িৎক্ষরণ হয়, তখন বিরাট অগিড়বস্ফুলিঙ্গের সৃষ্টি হয়। একে বিদ্যুচ্চমক বলা হয়। বিদ্যুচ্চমকের সময় মেঘের চারপাশের বায়ুমণ্ডল হঠাৎ তাপ পেয়ে প্রসারিত হয়। হঠাৎ প্রসারণের ফলে বায়ুমণ্ডলের চাপকমে যায়। তখন আশে-পাশের বেশি চাপের বায়ু এসে এই প্রসারিত বায়ুকে সংকুচিত করে। খুব তাড়াতাড়ি এ ধরণের সংকোচন ও প্রসারণ হয় বলে প্রচণ্ড শব্দের সৃষ্টি হয়। একেই মেঘ গর্জন বলে। তড়িতাহিত মেঘে যদি তড়িতের পরিমাণ বেশি হয়, তাহলে তা তড়িৎক্ষরণের মাধ্যমে পৃথিবীতে চলে আসে। একে বলে বজ্রপাত। বজ্রপাতের সাথে সাথে যে শব্দ শোনা যায় তাকে বলে বজ্রনাদ।
বজ্র নিরোধক : বজ্রপাতের ফলে যাতে বাড়িÑঘরের ক্ষতি না হয় তার জন্য বজ্র নিরোধক ব্যবহার করা হয়। একটি ধাতব দণ্ড  কে  বাড়ির গা ঘেষে এমনভাবে স্থাপন করা হয় যেন এর উপরিভাগ ছাদের চেয়েও বেশি উঁচুতে থাকে এবং  ভালোভাবে
মাটিতে পুতে রাখা হয়। দণ্ডের উপরিভাগে কয়েকটি সূচিমুখ থাকে। যখন তড়িৎগ্রস্থ মেঘ বাড়ির উপরে আসে, তখন এটি জ দণ্ডে বিপরীত আধান আবিষ্ট করে।। বায়কণাগুলো এই আধান নিয়ে আহিত হয় এবং মেঘের বিপরীত আধান কতৃর্ক আকষ্টৃ হয়ে মেঘের দিকে চলে যায় এবং মেঘকে নিস্তড়িত করে। ফলে বজ্রপাতের সম্ভাবনা কম থাকে। তড়িৎ সবসময় পরিবাহীর মধ্য দিয়ে সংক্ষিপ্ততম পথে চলে। মেঘে মেঘে সৃষ্ট তড়িৎ উঁচু বস্তুর ভিতর দিয়ে পৃথিবীতে আসতে চায়। ঝড় বৃষ্টির সময় তাই ছাতার নিচে, কোনো গাছের নিচে, তড়িৎ পরিবাহী ধাতুর কাছে, লোহার তৈরি পুল কিংবা কাঁটা তারের বেড়া দেওয়ালের কাছাকাছি দাঁড়ানোর চেয়ে বৃষ্টিতে ভেজা অনেক ভালো।

তুল্যরোধ এবং বর্তনীতে তুল্যরোধের ব্যবহার
Equivalent resistance and its uses in circuit
অনেক সময় বিভিন্ন প্রয়োজনে একাধিক রোধকে একত্রে ব্যবহার করতে হয়। একাধিক রোধকে একত্রে সংযোগ করাকেই রোধের সন্নিবেশ বলে।
তুল্যরোধ: রোধের কোনো সন্নিবেশের পরিবর্তে যে একটি মাত্র রোধ ব্যবহার করলে বর্তনীর প্রবাহমাত্রা ও বিভব পার্থক্যের কোনো পরিবর্তন হয় না, তাকে ঐ সন্নিবেশের তুল্য রোধ বলে। রোধের সন্নিবেশ দু’ধরনের হতে পারে, যথা- শ্রেণি সন্নিবেশ ও সমান্তরাল সন্নিবেশ।

শ্রেণি সন্নিবেশে সংযুক্ত রোধগুলোর তুল্যরোধের মান সন্নিবেশে অন্তর্ভূক্ত বিভিন্ন রোধের মানের যোগফলের সমান। শ্রেণি সন্নিবেশে তুল্যরোধের মান আলাদা আলাদা প্রত্যেকটি রোধের মানের চেয়ে বড়।

আপেক্ষিক রোধ এবং পরিবাহকত্ব
Resitivity and conductivity
নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট উপাদানের পরিবাহীর রোধ তার দৈর্ঘ্যের সমানুপাতে এবং প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলের ব্যস্তানুপাতে পরিবর্তিত হয়।

যে সকল পদার্থের রোধকত্ব কম সেগুলো তড়িতের জন্য সুপরিবাহক হিসেবে কাজ করে। যেমন, তামা নাইক্রোমের তুলনায় তড়িৎ সুপরিবাহী। এ কারণেই বৈদ্যুতিক বর্তনীতে সংযোগ তার হিসেবে তামার ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। তাছাড়া যে সকল পদার্থের রোধকত্বের মান তূলনামূলকভাবে বেশি তাদেরও বহুবিধ ব্যবহার রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে নাইক্রোমের তারের কথাই ধরা যাক। নাইক্রোমের রোধকত্ব এবং গলনাঙ্ক তামার তুলনায় অনেক বেশি। উচ্চ রোধকত্বের কারণেই নাইক্রোমের তারের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হলে প্রচুর তাপ উৎপনড়ব হয়। নাইক্রোমের এ ধর্মের কারণেই বৈদ্যুতিক কেটলীতে পানি খুব দ্রুত গরম হয়। আমরা বাড়িতে যে সকল বৈদ্যুতিক বাল্ব ব্যবহার করি তাদের ফিলামেন্ট টাংস্টেন দ্বারা তৈরি হয়। টাংস্টেনের উচ্চ রোধকত্ব ও গলনাঙ্কের কারণে এটি বৈদ্যুতিক শক্তিকে খুব সহজে আলোকশক্তিতে রূপান্তরিত করতে পারে। পরিবাহকত্ব রোধের বিপরীত রাশি হলো পরিবাহিতা, তেমনি আপেক্ষিক রোধের বিপরীত রাশিকে পরিবাহকত্ব বলে। পরিবাহকত্বকে Ω অক্ষর দ্বারা প্রকাশ করা হয়। এর মান পরিবাহীর উপাদান ও তাপমাত্রার উপর নির্ভরশীল।

এই লেকচারের পরের পেইজে যেতে নিচের …. তে ক্লিক কর।

মন্তব্য করুন

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline