কলাস্থানিক গঠন-
অগ্নয়াশয়ের বহিঃক্ষরা অংশ গঠিত হয় কতগুলি যৌগিক নলাকার গ্রন্থির সহযোগে । এই গ্রন্থির প্রান্তীয় ক্ষরণ কারী অংশ গুলিকে বলে অ্যাসিনি । ক্ষরণ কারীকোষগুলির শীর্ষে জাইমোজেন দানা থাকে ।এদের থাকে অগ্ন্যাশয় রস নিঃসৃত হয়। অগ্নয়াশয়ের অভ্যন্তরে কিছু দ্বীপের ন্যায় কোশপুঞ্জ দেখা যায় যাদের কোষগুলি বহিঃক্ষরা অ্যাসিনির কোষ গুলির থেকে ভিন্ন আকৃতির এবং রঞ্জক বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন ।
এই কোষ গুলি নালিবিহীন এবং প্রচুর রক্তজালক সমৃদ্ধ । কোষগুলি সমগ্র অগ্ন্যাশয়ের ২-৩% স্থান দখল করে মাত্রএবং অগ্ন্যাশয়ের পুচ্ছ অংশে এদের অধিক পরিমানে দেখা যায় । আবিষ্কারকের নামানুসারে এই কোষগুলির নাম –ল্যাঙ্গারহানস এর দ্বীপ্পুঞ্জ কোষ । এরা অগ্ন্যাশয়ের অন্তঃক্ষরা অংশ । দ্বীপ্পুঞ্জের অভ্যন্তরে প্রধানতঃ তিন ধরনের কোষ দেখা যায় –
বিটা কোষ (ইনসুলিন হরমোন ক্ষরণ করে )। Alpha Cell (গ্লুকাগণ হরমোন ক্ষরণ করে) এবং ডেল্টা কোষ (সোম্যাটোস্ট্যাটিন নামক হরমোন ক্ষরণ করে)
মানবদেহের রেচন ক্রিয়া [Excretion in Man]:– মানব দেহের রেচন অঙ্গ হল বৃক্ক । তাছাড়া চর্ম, ফুসফুস, যকৃৎ ইত্যাদি রেচনে সাহায্য করে বলে এদের সহায়ককারী রেচন অঙ্গ বলে ।
মানবদেহের রেচন তন্ত্র [Excretory system of Man]:- মানবদেহের রেচন তন্ত্র এক জোড়া বৃক্ক, এক জোড়া গবিনী, একটি মুত্রাশায়, এবং একটি মুত্রনালী নিয়ে গঠিত । মানুষের বৃক্ক দুটি দেখতে শিমের বীজের মতো এবং ওজনে প্রায় 125-170 gm. । বৃক্ক দুটি মানবদেহের উদর গহ্বরের কটি অঞ্চলে (lumber region), মেরুদন্ডের উভয় পাশে ও পেরিটোনিয়ামের নীচে পৃষ্ঠপ্রাচীর সংলগ্ন অবস্থায় অবস্থিত । প্রতিটি বৃক্ক থেকে একটি করে সরু নালী নির্গত হয়ে মেরুদন্ডের দু’পাশ দিয়ে নীচের দিকে বিস্তৃত থাকে, এই নালী দু’টিকে গবিনী বাইউরেটার (Ureter) বলে । এদের মাধ্যমে বৃক্ক থেকে নিঃসৃত মুত্র নির্গত হয় । গবিনী দুটি বস্তি গহ্বরে বা শ্রোণি গহ্বরে অবস্থিত একটি পেশিময় থলির সঙ্গে যুক্ত থাকে । এই থলিকে মুত্রথলি (urinary bludder) বলে । মুত্রথলির মধ্যে মুত্র সাময়িকভাবে সঞ্চিত থাকে । মুত্র থলিটি একটি মুত্রনালীর (urethra) সাহায্যে দেহের বাইরে উন্মুক্ত থাকে । মুত্রথলি ও মুত্রনালীর সংযোগ স্থলে একটি স্ফিংটার পেশি(sphincter muscle) থাকে, যার ফলে আমরা ইচ্ছানুযায়ী মুত্রত্যাগ করতে পারি ।
►বৃক্কের গঠন ও কাজ [Structure and function of kidney]:-
মানবদেহের বৃক্কের গঠন : গঠন অনুযায়ী মানব দেহের বৃক্ককে দু’ভাগে ভাগ করা যায়, যথা: বহির্গঠন ও অন্তর্গঠন ।
[i] বহির্গঠন:-
মানুষের বৃক্ক দেখতে অনেকটা শিম বীজের মতো । পরিণত মানুষের ক্ষেত্রে এটি লম্বায় 11 cm. প্রস্থে 5 cm. এবং 3 cm. পুরু হয়ে থাকে ।
প্রতিটি বৃক্ক তন্তুময় যোগকলা নিয়ে গঠিত ‘ক্যাপসুল’ দিয়ে ঢাকা থাকে ।
বৃক্কের পিঠের দিকটি উত্তল এবং ভিতরের দিকটি অবতল । বৃক্কের অবতল খাঁজটিকে বৃক্কীয় নাভী বা হাইলাম বলে ।
হাইলাম অংশটি বৃক্কীয় ধমনী, বৃক্কীয় শিরা ও গাবিনীর সঙ্গে যুক্ত থাকে ।
[ii] অন্তর্গঠন:-
লম্বচ্ছেদ করলে প্রতিটি বৃক্কের দুটি অংশ লক্ষ করা যায় —বাইরের গাঢ় লাল রং -এর অংশটিকে বহিঃস্তর বা কর্টেক্স এবং ভিতরের অপেক্ষাকৃত হালকা লাল অংশটিকে অন্তঃস্তর বা মেডালা বলে ।
বৃক্কের কর্টেক্স অংশটি স্থানে স্থানে মেডালার গভীরে প্রবেশ করে পিরামিডের মতো গঠন রচনা করে, এগুলিকে বৃক্কীয় পিরামিড বলে ।
বৃক্কের কর্টেক্স ও মেডালা প্রায় সম্পূর্ণভাবে একটি গহ্বরকে ঘিরে অবস্থান করে । এই গহ্বরটিকে বৃক্কীয় পেলভিস বলে ।
ফানেলের মতো দেখতে এই অংশ থেকে গবিনী উত্পন্ন হয়েছে । গবিনী পেলভিসে ঢোকার পর কয়েকটি মেজর ক্যালিক্স বা প্রধান বৃতি গঠন করে । প্রতিটি মেজর ক্যালিক্স আবার কিছু মাইনর ক্যালিক্স বা শাখা বৃতিতে বিভক্ত হয় ।
মাইনর ক্যালিক্স যে অংশে বৃক্কীয় পিরামিডের সঙ্গে যুক্ত হয় তাকে বিক্কীয় পীড়কা বলে ।
প্রতিটি বৃক্ক অসংখ্য সুক্ষ্ম চুলের মতো কুণ্ডলীকৃত নালিকা নিয়ে গঠিত, এদের নেফ্রন বলে । এই নেফ্রনই হল বৃক্কের গঠনগত ওকার্যগত একক ।এক একটি বৃক্কে প্রায় দশ লক্ষ নেফ্রন থাকে ।
এই লেকচারের পরের পেইজে যেতে নিচের …. তে ক্লিক কর।