পাকস্থলী বা Stomach
গ্রাসনালির পরে যে ইংরেজী J অক্ষরের মত দেখতে পেশী ও গ্রন্থী যুক্ত স্ফীত থলির মত অংশকে পাকস্থলি বলে । এটি কার্ডিয়াক স্ফিংটার দ্বারা উপরের দিকে গ্রাসনালীর সঙ্গে এবং পাইলোরিক স্ফিংটার দ্বারা নীচের দিকের ক্ষুদ্রান্ত্রের সঙ্গে যুক্ত ।স্ফিংটার আর কিছুই নয় স্ফীত পেসী বলয় যেটি অনেকটা খাদ্যের একমুখী প্রবাহ নিয়ন্ত্রনের কাজ বা এক অঙ্গ থেকে আর এক অঙ্গে খাদ্য কতটা যাবে তার হারকে নিয়ন্ত্রণ করে । পাকস্থলীর দুটি বক্র পার্শ্ব রয়েছে –গ্রাস নালির পশ্চাদ প্রাচীর পাকস্থলীর বদ্ধপ্রান্তের দিকে যে ছোট অবতল বক্র আকৃতি সৃষ্টি করে তাকে বলে ক্ষুদ্রতর বক্রতা বা Lesser Curvature , অপরদিকে পাকস্থলীর মুক্ত বাম প্রান্ত যে চওড়া উত্তল বক্র আকৃতি সৃষ্টি করে তাকে বলে বৃহত্তর বক্রতা বা Greater Curvature . মানুষের পাকস্থলীতে মূলত তিনটি অংশ দেখা যায় –
(i) হৃদপ্রান্ত বা কার্ডিয়াক এন্ড- গ্রাসনালীর সগ্লগ্ন অংশ(এই অংশের সঙ্গে লেগে থেকে- হৃৎপিন্ডের অবস্থানের কারনে এই নাম)
(ii) ফানডাস- কার্ডিয়াক স্ফিংটার সনলগ্ন উর্ধ বাম দিকে থলির মত অংশটি হল ফান্ডাস
(iii) দেহ –ফানডাস ও অ্যান্ট্রাম মধ্যবর্তী পাকস্থলীর মূল অংশটি হল দেহ বা বডি
(iv) পাইলোরিক এন্ড বা প্রণালিকা প্রান্ত (বা অনেকে একে অ্যানট্রাম বলে )- ক্ষুদ্রান্ত্র এর ডিওডেনাম এর দিকে পাকস্থলীর পাইলোরিক স্ফিংটার সংলগ্ন পাকস্থলীর নীচের দিকের সরু অংশটি হল অ্যান্ট্রাম।
পাকস্থলীর মিউকাস বা শ্লেষ্মা স্তরে –পাকস্থলী যখন খালি থাকে তখন যে অনুদৈর্ঘ্য খাঁজগুলি দেখা যায় তাদের বলে রুগি (rugae) বলে । পাকস্থলী খাদ্যদ্বারা পূর্ণ থাকলে এই খাঁজগুলি আর দেখা যায় না ।
পাকস্থলীর গ্রন্থী সমুহ-
কার্ডিয়াক গ্রন্থী-হৃদ আপকস্থলীতে অবস্থিত এবং মিউকাস ক্ষরণ করে
পাইলোরিক গ্রন্থী-প্রণালিকা পাকস্থলীতে অবস্থিত এবং মিউকাস ক্ষরণ করে
গ্যাস্ট্রিক গ্রন্থী বা পাচক গ্রন্থী-এরা পাকস্থলির মিউকাস স্তরের অধিকাংশ স্থান জুড়ে অবস্থান করে । পাচক গ্রন্থীতে বিভিন্ন ক্ষরণকারী কোষ বর্তমান-
(i) পেপটিক কোষ-নিষ্ক্রিয় পেপসিন বা পেপসিনোজেন ক্ষরণ করে
(ii) প্যারাইটাল বা অক্সিনটিক কোষ- হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড ক্ষরণ করে
(iii) আরজেন্টাফিন কোষ-কিছু স্থানীয় হরমোন যেমন গ্যাস্ট্রিন, এন্টারোগ্যাস্ট্রোন ইত্যাদি ক্ষরণ করে
পাকস্থলীর কাজ-
-গৃহীত খাদ্যবস্তুকে সাময়িক ভাবে সঞ্চিত রাখে এবং বিচলনের দ্বারা পাকরসের সঙ্গে মিশ্রিত হতে সাহায্য করে ।
–পাকস্থলীর অন্তঃপ্রাচীরের কোষগুলি বিভিন্ন পাচক রস ক্ষরণ করে ।
-পাচকরসের HCl খাদ্যবস্তুর সঙ্গে মিশে থাকা বিভিন্ন জীবানু ধ্বংস করে
-পাকস্থলীতে অবস্থিত পেপসিন ও গ্যাস্ট্রিক লাইপেজ উৎসেচক এর প্রভাবে যথাক্রমে প্রোটিন ও ফ্যাট জাতীয় খাদ্যের আংশিক পরিপাক সম্ভব হয়।
-সামান্য পরিমান জল , লবন ওগ্লুকোজ এবং কয়েকপ্রকার ওষুধ পাকস্থলীতে শোষিত হয়
-পাকস্থলী থেকে কিছু অধিবিষ (toxin) এবং উপক্ষার রেচিত হয়।
-পাকস্থলীথেকে ক্ষরিত গ্যাস্ট্রিন ও এন্টারোগ্যাস্ট্রোন নামক হরমোনের প্রভাবে পাচকরসের ক্ষরন বৃদ্ধি পায় ।
এই লেকচারের পরের পেইজে যেতে নিচের …. তে ক্লিক কর।