সুন্দরবন ও বঙ্গোপসাগরের দুর্লভ মূল্যবাস প্রাকৃতিক সম্পদের বিশাল ভান্ডার রয়েছে। সুন্দরবনে রয়েছে মূল্যবান কাঠ, মাছ, গোলপাতা, মধু, মোম, কার্বন, খনিজদ্রব্য। তাছাড়া সুন্দরবন রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণ, বানর, শুকোর, কুমির, ডলফিনসহ নানাপ্রজাতির ফুল ও পাখির আবাসস্থল। বঙ্গোপসাগার স্বর্ণ, হিরক, তেল, গ্যাস, ইউরোনিয়ামসহ দুর্লভ মূল্যবান সম্পদের বিশাল ভান্ডার। বিশেষ ইলিশ, রূপচাঁদাসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ ও লবণ বঙ্গোপসাগরের মূল্যবান সম্পদ। প্রতি বছর সমুদ্র থেকে ১৫ লাখ টন লবণ সংগ্রহ করা হয়। বঙ্গোপসাগরের অন্যতম প্রধান সম্পদ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস ও পলিমেটিক ম্যাগনেস নোডলস।৫ প্রজাতির কচ্ছপ, ১৩ প্রজাতির প্রবাল এবং আরো রয়েছে কস্ত্তরা শামুক, ঝিনুক প্রভৃতি। সাগরে মাছ ব্যবসার সাথে জড়িতরা জানান, বঙ্গোপাগরে ভারতীয় ফিশিং ট্রলার বাংলাদেশের জলীমায় ঢুকে পড়েছে। তারা বর্তমানে সমুদ্রসীমার উপকূলীয় এলাকা বাগেরহাট, বরগুনা, পটুয়াখালী ও পিরোজপুরের প্রায় দেড়শ’ কিলোমিটার ভেতরে প্রবেশ করে মাছ ধরছে। বাংলাদেশের জেলেরা সেখানে গেলে তারা হামলা চালাচ্ছে। শুধু তাই নয়, তারা ভারত থেকে বিভিন্ন ধরণের চোরাই পণ্যও দেশে আনছে।
এই উপসাগরের তীরে রয়েছে ঐতিহাসিক বেশ কিছু বন্দর যেটি বিশ্বের নৌশক্তিসম্পন্ন দেশের কৌশলগত বন্দর বলে চিহ্নিত রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, ভারতের ভিসাখাপত্তম, কলকাতা, পন্ডিচেরী, মাছলিপটনাম, শ্রীলঙ্কার ট্রিঙ্কোমালি, মিয়ানমারের ইয়াংগুন (রেঙ্গুন) এবং সিতাওয়ে।বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্বে রয়েছে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার।বঙ্গোপসাগর বাংলাদেশের বিশাল সম্ভাবনাময় মৎস্য সম্পদের সূতিকাগার। এ সম্পদ অফুরন্ত নয় বরং নবায়নযোগ্য। এ সম্পদ যদি সুষ্ঠুভাবে রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সহনশীলভাবে আহরণ নিশ্চিত না করা হয় তবে এক সময় আমাদের বঙ্গোপসাগর হয়ে যাবে থাই উপসাগরের মত মৎস্য শূন্য। আমাদের দেশে সরকার যখন সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ রাখে তখন জেলেরা নদীতে নামে না। কিন্তু ভারতীয় জেলেরা হাতগুটিয়ে বসে থাকেনা। তারা নিষিদ্ধকালীন সময় পুরোদমে মাছ শিকার করে।
বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী প্রধান তিনটি দেশ ছাড়াও হিমালয়ের দক্ষিণে স্থলবেষ্টিত দেশ নেপাল এবং ভুটান বঙ্গোপসাগরের ওপর নির্ভরশীল। তেমনি চীনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জন্য দক্ষিণে মহাসাগরে নির্গমনের সহজ পথও এই বঙ্গোপসাগর।ভারত মহাসাগরের অন্তর্গত বঙ্গোপসাগর একটি লোনা পানির সমুদ্র। বাংলাদেশ নৌবাহিনী তাদের বাৎসরিক মহড়া এই সাগরেই করে থাকে। ১৯৭১ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে নৌবাহিনীর বেশির ভাগ আক্রমনই হয়েছিল বঙ্গোপসারগরে।বঙ্গোপসাগরে প্রায় ৫ লক্ষ মৎস্যজীবী প্রত্যক্ষভাবে মাছ ধরার পেশায় নিয়োজিত। বঙ্গোপসাগর এলাকায় শিকার করা ইলিশ দেদার পাচার হচ্ছে ভারতে। সাগরের বাংলাদেশ অংশে প্রচুর মাছ থাকলেও ভিনদেশী জেলেদের কারণে তা কমে যাচ্ছে।বঙ্গোপসাগরে মাছ এবং চিংড়ির পরেই কাঁকড়ার অবস্থান। এসব কাঁকড়া মোহনা বা মোহনা সংলগ্ন প্যারাবনে প্রচুর পাওয়া যায়। ১৫টিরও অধিক প্রজাতির কাঁকড়া নোনা পানিতে পাওয়া যায়, তার মধ্যে তিন প্রজাতির কাঁকড়া বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
এই লেকচারের পরের পেইজে যেতে নিচের …. তে ক্লিক কর।