
মূল্যবোধের শিক্ষার অভাবজনিত ফল
মূল্যবোধের অভাব বা অনুপস্থিতিকে বলা হয় মূল্যবোধের অবক্ষয়। মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটলে সমাজে এর অনেক বিরূপ প্রভাব পড়ে। যেটি ব্যক্তি সমাজ ও রাষ্ট্রের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। ফলে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অগ্রগতি বাধাপ্রাপ্ত হয়। নিচে মূল্যবোধের শিক্ষার অভাবজনিত ফল তুলে ধরা হলÑ
মূল্যবোধের শিক্ষার অভাবে ব্যক্তির জীবন হয়ে পড়ে বিশৃঙ্খল। ফলে ব্যক্তির বিশৃঙ্খল আচরণের প্রভাব পড়ে সমাজ ও রাষ্ট্রের উপর। ফলে সমাজ ও রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
কেউ সমাজের প্রচলিত রীতিনীতি তথা মূল্যবোধ সমূহ ভঙ্গ করলে সমাজে অস্থিরতা দেখা দেয়।
মূল্যবোধের শিক্ষার অভাবে তরুণ সমাজের মাঝে দেখা দেয় নৈতিকতার অবক্ষয়। ফলে দেশের মূল্যবান জনশক্তি ও তরুণ সমাজ দেশ ও জাতির মঙ্গলের জন্য কোন অবদান রাখতে পারে না।
মূল্যবোধের শিক্ষার অভাব আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে কাজ করে।
মানুষ দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ সম্পর্ক উদাসীন হয়ে যায় এবং তারা তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সার্বিকভাবে পালন করতে পারে না।
কাকে নির্বাচিত করলে দেশের মঙ্গল হতে পারে তা নির্ধারণ করতে অক্ষম হয়ে পড়ে।
মূল্যবোধ একটি দেশের নৈতিক শক্তি। এর অভাবে অতীতে অনেক জাতি ধ্বংসের সম্মুখীন হয়েছে।
মূল্যবোধের অনুপস্থিতি পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের মধ্যে যে সম্পর্ক তা নষ্ট করে ফেলে।
মূল্যবোধের অভাবে মানুষ আত্মপরিচয় বিস্মৃত হয় এবং নিজের আত্ম-মর্যাদাবোধ হারিয়ে ফেলে, ফলে জাতি দিকভ্রান্ত হয়।
মূল্যবোধের অভাবে জনগণ জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতার শিক্ষা বঞ্চিত। ফলে দেশে দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রকোপ বেড়ে যায়।
মূল্যবোধের অভাবে মানুষের নৈতিকতা ও ঔচিত্যবোধের বিলুপ্তি ঘটে যেটি সমাজের প্রভূত ক্ষতির কার হয়ে দাড়ায়।
মূল্যবোধের অভাবে সমাজ অপরাধ বৃদ্ধি পায়। যেমন- ইভ-টিজিং, পর্নোগ্রাফি, মাদকাসক্তি ইত্যাদি।
ধর্মীয় মূল্যবোধের অভাবে মানুষের মধ্যে উগ্র সাম্প্রদায়িকতা দেখা দেয় এবং বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে পারস্পরিক বন্ধন শিথিল হয়ে পড়ে।
মূল্যবোধের শিক্ষার উপকারিতা
মূল্যবোধ সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত হলে সমাজ ও রাষ্ট্র এর সুফল লাভ করে। আবার মূল্যবোধের অভাবে রাষ্ট্রকে চরম মূল্য দিতে হয়। নিচে মূল্যবোধের সুফল তুলে দরা হয় :
মূল্যবোধের শিক্ষা মানুষের মধ্যে নৈতিক ও ঔচিত্যবোধের বিকাশ ঘটায় বা মানুষকে ন্যায়-অন্যায়, ভালো-মন্দ উচিত অনুচিতের মধ্যে পার্থক্য করতে শেখায়। যার ফলে ব্যক্তি নিজের ভালো বা মঙ্গল করার চেষ্টা করে।
গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা অন্যতম রক্ষাকবচ ন্যায়বিচারকে প্রতিষ্ঠা করে মূল্যবোধ।
মূল্যবোধের শিক্ষা মানুষকে শৃঙ্খলাবোধের শিক্ষা দেয় যেটি মানুষের মানবিক মূল্যবোধগুলোকে সুদৃঢ় করে সমাজজীবনকে উন্নতি ও প্রগতির পথে নিয়ে যায়।
মূল্যবোধের শিক্ষার প্রভাবে মানুষ সৃজনশীলতা ও সহমর্মিতার শিক্ষা লাভ করে যেটি সমাজের ভিত্তি সুন্দর করে ও উত্তেজনা প্রশমিত করে সুখী ও সুন্দর সমাজগঠনে সাহায্যে করে।
যে কোন জাতির উন্নতির চাবিকাঠি হচ্ছে শ্রমকে মর্যাদা দান করা। মূল্যবোধের শিক্ষা শ্রমের মর্যাদাকে মূল্যবোধ দ্বারা প্রতিষ্ঠা করে সমাজের অগ্রগতি ত্বরান্বিত করে।
মূল্যবোধের মূল্যবোধ দ্বারা প্রতিষ্ঠা করে সমাজের অগ্রগতি ত্বরান্বিত করে।
মূল্যবোধের শিক্ষা মানুষের সচেতনতা ও কর্তব্যবোধ জাগ্রত করে, যেটি তাদেরকে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন সাহায্যে করে।
আইনের শাসন মূল্যবোধের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যেটি প্রতিষ্ঠিত হলে সমাজে ও রাষ্ট্রে সুশাসন বিরাজ করে।
মূল্যবোধের উপস্থিতি সরকার ও রাষ্ট্রকে জনকল্যাণমুখী করে।
জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতা মূল্যবোধের উপাদান। মূল্যবোধের উপস্থিতিতে রাষ্ট্রের জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতা সৃষ্টি হয় যেটি সুশাসনের জন্য অপরিহার্য।
এই লেকচারের পরের পেইজে যেতে নিচের …. তে ক্লিক কর।