একদিনও বিদ্যালয় ও ক্লাসে না গিয়ে জেএসসি পরীক্ষায় বৃত্তি পেয়েছে সখিপুর উপজেলার ৩৮ জন শিক্ষার্থী।
সাব্বির হাসান জয়, উপজেলার কাহারতা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এবার ট্যালেন্টপুলে ছেলেদের মধ্যে প্রথম হয়েছে। সাব্বিরের বাড়ি ওই বিদ্যালয় থেকে চার কি.মি দূরে। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে শুরু তিন বছর ওই বিদ্যালয়ে কাগজ-কলমে পড়াশোনা করলেও সাব্বির একদিনও ওই বিদ্যালয় দেখেনি। ফলে ক্লাস তো দূরের কথা কোনো শিক্ষক ও সহপাঠী কারও সঙ্গে তার পরিচয় নেই। সাব্বিরের মতো বিদ্যালয়ে না গিয়েই ও ক্লাস না করেও উপজেলার তিনটি উচ্চবিদ্যালয় থেকে এ রকম ১৭ শিক্ষার্থী টেলেন্টপুলে ও ২১ শিক্ষার্থী সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি লাভ করেছে বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। প্রকৃতপক্ষে ওই ৩৮ শিক্ষার্থী অখ্যাত তিনটি বিদ্যালয়ের নামে পরীক্ষা দিলেও তারা উপজেলা ও জেলার বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের আবাসিকে থেকে পড়াশোনা করছে বলে জানা গেছে।
ওই তিন বিদ্যালয়ের মধ্যে উপজেলার কাহারতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম বলেন, সত্যি হচ্ছে, আমাদের বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী নেই। তাই কোচিং থেকে ভালো শিক্ষার্থীদের আমাদের বিদ্যালয়ের নামে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে কাগজ-কলমে আমরা বৃত্তিতে উপজেলার সেরা হয়েছি।
এদিকে উপজেলার উদয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান মিয়া ও জমশের নগর ভিএসআই উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হাশেম বলেন, কোচিং সেন্টারের ছেলে-মেয়ে না পেলে স্কুল চালানোই কষ্ট হতো।
অপরদিকে কাহারতা উচ্চ বিদ্যালয়ের হয়ে বৃত্তি পাওয়া সাব্বির হাসান জয়ের বাবা শাহীনুজ্জামান বলেন, আমার ছেলে শাহীন কোচিং থেকে বৃত্তি পেয়েছে। পরে সে কাহারতা স্কুলের নাম শুনে আশ্চর্য হয়ে বলেন, আমার ছেলেতো কখনো ওই স্কুল দেখেইনি।
টেলেন্টপুলে বৃত্তি পাওয়া তানভীর আহমেদ বলেন, শুনেছি কাগজ-কলমে আমি কাহারতা থেকে বৃত্তি পেয়েছি। তবে ওই বিদ্যালয়ে আমি একদিনও ক্লাস করিনি। সখীপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম বলেন, উপজেলার নামকরা বিদ্যালয়ের চেয়ে অচেনা-অজানা ও অখ্যাত বিদ্যালয়ে বৃত্তির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমি প্রথমে দ্বিধায় পড়ে যাই। পরে শুনেছি ওইসব বিদ্যালয়ে তারা পড়াশোনা করেনি। শুধু বিদ্যালয়ের নাম ব্যবহার করেছে। ওইসব বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
0 responses on "বিদ্যালয় ও ক্লাসে না গিয়েও বৃত্তি পেলো ৩৮ শিক্ষার্থী"