বাংলা প্রস্তুতিঃ প্রিলি ও লিখিত (প্রসঙ্গঃ প্রাচীন যুগ)

বাংলা প্রস্তুতিঃ প্রিলি ও লিখিত (প্রসঙ্গঃ প্রাচীন যুগ)

==
এই অংশটি এমনভাবে সাজালাম যেন প্রিলি ও লিখিত উভয় অংশেই কাজে লাগে। যারা প্রিলির প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাদের আগেই বলেছি, যেসব অংশ প্রিলি ও লিখিত একইরকম সেগুলোতে সর্বোচ্চ জোর দিতে। কারণ এসব অংশ প্রিলিতে শেষ হয়ে গেলে প্রিলিতে তো কাজে লাগবেই,সাথে প্রিলি শেষ হওয়ার পরপরই বলতে পারবেন লিখিত পরীক্ষার জন্য ও আপনার ৩০% প্রস্তুতি শেষ। মনে রাখবেন, প্রতিযোগিতায় শুধু মেধাবীরা নয়, কৌশলী মেধাবীরাই টিকে থাকে।

:
প্রশ্নঃ চর্যাপদে নারীদের সামাজিক অবস্থা বর্ণনা কর ।
উত্তরঃ চর্যাপদে নারী যেভাবে চিত্রিত হয়েছে,তাতে তার স্বাধীন সত্তা স্ফুটিত হয়েছে। চর্যাপদের একজন পদকর্তা কুক্কুরীপা তাঁর ২নং পদে বলেছেন -“”দিবসহি বহড়ী কাউহি ডর ভাই/ রাতি ভইলে কামরু জাই। “” অর্থাৎ গৃহবধুটি বেশ ছলনা জানে। সে দিনের বেলা কাকের ডাক শুনেই ভয় পায়, কিন্তু রাতে প্রেমিকের সাথে গোপন অভিসারে যায়। ৪নং পদে উল্লেখ আছে, অন্য এক বধু শাশুড়ির ঘরে চাবি দিয়ে বেরিয়ে এসে যোগী সাধন সাদিনী হয়। কাহ্নপা ১০ নং পদে বলেছেন, এক ডোমিনী পসরা নিয়ে নগরে তাত ও চেঙারি বিক্রি করে। তাছাড়া ডোম্বীপাদের ১৪ নং পদে নারীদের নৌকা চালানো, নৌকাত জলসিঞ্চন ও লোক পারাপারের কথা বলা আছে।
:
প্রশ্নঃ চর্যাপদে চিত্রিত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পরিচয় দিন।
উত্তরঃ চর্যাপদে যে সমাজের চিত্র পাওয়া যায় তা কেবল বাংলা বা বাঙালির নয় বরং সমগ্র পূর্বি ভারতের। এখানে আছে কাপালিক, যোগী, ডোম্বী, মাঝি, শিকারী, নৌকাবাহী ইত্যাদি। চর্যাপদের ৩৩ নং পদে ঢেন্ডনপা বলেছেন -“”টালত মোর ঘর নাহি পড়বেষি/ হাড়ীতে ভাত নাহি নিতি আবেশী। “” অর্থাৎ লোকশুন্য স্থানে আমার ঘর, কোনো প্রতিবেশি পর্যন্ত নেই। আমার ঘরে খাদ্য ও নেই,কিন্তু প্রতিদিন প্রেমিক এসে ভিড় করে। এসব পদকর্তাদের পদগুলো থেকেই বুঝা যায় তখনকার সময়ে দারিদ্র্য কতটা তীব্র ছিল, কি কষ্ঠেই না ছিল সে সমাজে!
:
প্রশ্নঃ কোন সময়কে অন্ধকার যুগ বলা হয়? কেন বলা হয়?
উত্তরঃ বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অন্ধকার যুগ বলতে এমন এক সময়কে বুঝায় যখন সাহিত্যিকের বা কোন পদকর্তার কোন উল্লেখযোগ্য সাহিত্য নিদর্শন পাওয়া যায়নি। এ সময়টি ১২০১ থেকে ১৩৫০ খ্রিস্টাব্দ। তুর্কি আক্রমণে বঙ্গীয় সমাজ ও জনজীবনে বিপর্যস্ত হওয়ার কারণে মানুষ সাহিত্য রচনায় আত্মনিয়োগ করতে পারেনি। এ সময় ২টি সাহিত্যকর্মের সন্ধান পাওয়া গেলেও এগুলো ছিল মূলত সংস্কৃত। এদু’টি সাহিত্যকর্ম হল শুণ্যপুরান ও সেকশুভদয়া। প্রাচীন ও মধ্যযুগের মধ্যবর্তী ১২০১ -১৩৫০ সাল পর্যন্ত শাসকদের তান্ডব ও অত্যাচারে জনজীবন ছিল বিপর্যস্ত। সমাজ ও অর্থনীতিতে এর কুপ্রভাব পড়ে। জ্ঞানী লোকেরা দেশত্যাগে বাধ্য হন। ফলে উল্লেখযোগ্য কোন সাহিত্য সে সময় রচিত হয়নি। এ কারণেই ঐ সময়কে বাংলা সাহিত্যের অন্ধকার যুগ বলা হয়।
:
প্রশ্নঃ মঙ্গলকাব্য কী? এ কাব্যের প্রধান শাখা কয়টি ও কি কি?
উত্তরঃ দেবদেবীর মাহাত্ম্য নির্ভর যে কাব্য রচনা, পাঠ ও শ্রবণ করলে সবার মঙ্গল হয় তাকেই মঙ্গলকাব্য বলে। মঙ্গলকাব্য বাংলা সাহিত্যে মধ্যযুগের এক অনন্য সৃষ্টি। মঙ্গলকাব্যের প্রধান শাখা ৩টি। যথাঃ-
মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম নিদর্শন মঙ্গল কাব্য। এ কাব্যের ৩টি প্রধান শাখা -মনসামঙ্গল, চন্ডীমঙ্গল ও অন্নদামঙ্গল।

=> মনসামঙ্গলঃ মনসামঙ্গল এর আদি কবি কানাহরি দত্ত। এ কাব্যের একমাত্র পশ্চিমবঙ্গীয় কবি কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ। তাঁর কাব্যের নাম কেতকাপূরান। মনসামঙ্গল কাব্যগুলোকে পদ্মপুরাণ ও বলা হয়।

=> চন্ডীমঙ্গলঃ চন্ডীমঙ্গল কাব্যের আদি কবি মানিকদত্ত,চতুর্দশ শতকের কবি। এ কাব্যের প্রধান কবি মুকুন্দরাম চক্রবর্ত্তী। এ কাব্যের কবি দ্বিজমাধবকে স্বভাব কবি ও বলা হয়।

=> অন্নদামঙ্গল : অন্নদামঙ্গল কাব্যের প্রধান কবি ভারতচন্দ্র রায় গুনাকর। তিনি নবদ্বীপের রাজা কৃষ্ণ চন্দ্রের সভাকবি। রাজা কৃষ্ণ চন্দ্র তাঁক্র “”রায় গুনাকর “”উপাধি দেন। ভারতচন্দ্রের কিছু বিখ্যাত উক্তিঃ
-মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পাতন।
-নগর পুড়িলে দেবালয় কি এড়ায়?
-বড়র পিরীতি বালির বাঁধ, ক্ষনে হাতে দড় ক্ষনেকে চাঁদ।
-কড়িতে বাঘের দুধ মেলে।
– জন্মভুমি জননী স্বর্গের গরিয়সী।
:
এখানে মুলত মূল বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে। যেগুলো আপনাকে মার্কস বাড়াতে সাহায্য করবে লিখিত পরীক্ষায়। বাকিটুকু আপনি নিজের ভাষায় লিখবেন। আর প্রিলি পরীক্ষার্থীরা এসব বিষয় ভালভাবে আত্তস্থ করবেন, কারণ প্রিলি প্রশ্নের জন্য এখানে অনেক তথ্য আছে।

Leave a Reply

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline