বাংলাদেশ ভারত সম্পর্কঃ প্রেক্ষাপটঃ স্থলসীমান্ত চুক্তি (পর্ব ১)

৩৮ তম বিসিএস প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা প্রস্তুতি

—————
বাংলাদেশ ভারত সম্পর্কঃ
প্রেক্ষাপটঃস্থলসীমান­্ত চুক্তি (পর্ব ১)
শুভেচ্ছান্তেঃ সত্যজিৎ চক্রবর্ত্তী

এ টপিকটা বিসিএস সহ আগামী যেকোন সরকারি নিয়োগ পরীক্ষার লিখিত অংশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন। আপনারা যারা নিয়মিত আমার লেখা পড়ছেন,তারা হয়তো খেয়াল করেছেন আমি সাধারনত পরীক্ষায় আসার খুব বেশি সম্ভাবনা যেগুলো, শুধু সেগুলো নিয়েই আমার আলোচনা থাকে। যেহেতু গুরুত্বপুর্ন টপিক, তাই এটিকে ৩ পর্বে ভাগ করেছি যেন সব তথ্য দেয়া যায়। ইন্টারনেট, পত্রিকা,বিভিন্ন বই ও বাংলা একাডেমির বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক বই থেকে তথ্যগুলো নিয়ে ধারাবাহিকভাবে সাজিয়েছি।আশা করছি লিখিত পরীক্ষায় বাজিমাৎ করতে পারবেন এ লেখা দিয়ে।
——–
দেশ বিভাগের আগে স্যার রেডক্লিপের নেতৃত্বে যে স্থলসীমান্ত কমিশন গঠন করা হয়েছিল,তাদের নির্ধারিত সীমানা নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক দেখা দেয় তৎকালীন পাকিস্থান ও ভারতে।বিশেষ করে ছিটমহলগুলো নিয়েই বড় সমস্যা দেখা দেয়। এসব সমস্যা সমাধানে ১৯৫৮ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ফিরোজ খান নুনের মধ্যে চুক্তি সই হয়। যদিও সেটি কার্যকর হতে পারেনি দুই দেশের সংঘাতময় পরিস্থিতির কারনে। ঐ চুক্তিতে ভারতের মধ্যে থাকা বেরুবাড়ি ছিটমহল পাকিস্তানের অংশ হিসেবে স্বীকার করে নেওয়া হয়। কিন্তু ভারতের ভূ-খন্ড বেষ্টিত ২টি ছিটমহল -দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতার ভাগ্য অমীমাংসিত থেকে যায়।১৯৭৪ সালে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তিতে বেরুবাড়ি ভারতের হাতে প্রত্যর্পণ করা হয় এবং দহগ্রাম আঙ্গরপোতাকে বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ করার জন্য ঐ ২টি ছিটমহল সংযুক্ত করতে কুচলিবাড়ির ৩ বিঘা জমি (দৈর্ঘ্য ১৭৮মিটার ও প্রস্থ ৮৬মিটার) ভারতের কাছ থেকে স্থায়ী লিজের ব্যবস্থা করা হয়। এ কারণেই এটি ৩ বিঘা করিডোর নামে পরিচিত।
উল্লেখ্য,বাংলাদেশের সীমান্ত ৩দিকে ভারতের ৫টি রাজ্যের সাথে সংযুক্ত রয়েছে ৪হাজার ৯৫কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। এর মধ্যে রয়েছে পশ্চিমঙ্গের সঙ্গে ২হাজার ২১৬ কিলোমিটার। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের ১১১টি ও ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল ছিল। এসব ছিটমহল অন্য রাষ্ট্র দ্বারা বেষ্টিত থাকায় এর বাসিন্দারা যে দেশের নাগরিক হিসেবে আইনত স্বীকৃত, সেই দেশ থেকে ছিল সম্পুর্ন বিচ্ছিন্ন। রাষ্ট্রের সকল নাগরিক সুবিধা থেকে ও তারা বঞ্চিত ছিল।

পাকিস্তান আমলে এর পরিস্থিতিঃ ১৯৪৯ সালের ডিসেম্বরে বিশেষ চুক্তির মাধ্যমে সুইডেনের সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি এলগট বেগিকে চেয়ারম্যান করে বাউন্ডারি ডিসপুটস ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ১৯৫৮ সালে নেহেরু-নূন চুক্তি সইয়ের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু লোকসভায় বলেছিলেন, “”ভূ-খন্ড (ছিটমহল) বিনিময়ের মাধ্যমে আমরা চাইনা,সেসব এলাকার মানুষ অভিবাসী হয়ে থাক। যে দেশের মধ্যে তারা আছে, সে দেশেই তারা থাকবে।

স্বাধীনতার পর এর পরিস্থিতিঃ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর দুই দেশই সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয় এবং ১৯৭৪ সালের ১৬ মে নয়াদিল্লীতে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরাগান্ধী ও বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখু মুজিবুর রহমানএর মধ্যে আরেকটি সীমান্ত চুক্তি হয়। এ চুক্তি অনুযায়ী ভারতের ভেতরে থাকা দক্ষিন বেরুবাড়ি ভারতের দখলে চলে যায় এবং দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা বাংলাদেশেরর অধিকারে আসে। ছিটমহল ২টি বাংলাদেশের মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন থাকায় পানবাড়ি মৌজার সাথে যুক্ত করার জন্য তিনবিঘা জমি ভারত বাংলাদেশের অনুকুলে স্থায়ী ইজারা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। চুক্তি সইয়ের পরপরই বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ এটি অনুমোদন করে। কিন্তু ভারত তখন সেটি অনুমোদন করেনি।

Leave a Reply

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline