
প্রাথমিক পরীক্ষায় বহু নির্বাচনী প্রশ্ন (এমসিকিউ)বাদ দিয়ে পূর্বের মত পুরোটাই লিখিত পরীক্ষা পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়ার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। রবিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয় বলে সংসদ সচিবালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
বৈঠকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন এবং প্রশ্নফাঁস নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
জানা গেছে, বৈঠকে কমিটির সদস্যরা বলেন, এমসিকিউ প্রশ্নপদ্ধতির কারণে শিক্ষার্থীরা থেকে শুরু করে অভিভাবকেরা প্রশ্নফাঁসের দিকে বেশি ঝুঁকেছেন। এছাড়া এই পদ্ধতি শিক্ষার প্রকৃত মান অনেকক্ষেত্রে যাচাই করা সম্ভব হয় না। এমসিকিউ এর উত্তর দিতে কম সময় লাগে বিধায় অনেক সময় পরীক্ষা হলে দায়িত্ব পালনকারী শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের উত্তর বলে দেন। যার কারণে জিপিএ-৫ এর সংখ্যাসহ পাসের হার বাড়লেও শিক্ষার মান বাড়ছে না। ফলে অনেক গোল্ডেন পেয়েও ভালো ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষাও উত্তীর্ণ হতে পারছে না। এসব সর্বিক বিবেচনা করে এমসিকিউ বাদ দিয়ে পূর্বের মত পুরোটাই লিখিত পরীক্ষা পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়ার সুপারিশ করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সদস্য উম্মে রাজিয়া কাজল বলেন, সার্বিকভাবে আমাদের শিক্ষার পাসের হার বাড়ছে কিন্তু এই অনুযায়ী শিক্ষার মান বাড়ছে না। আমরা মনে করি এমসিকিউ এর কারণেই মান কিছুটা কমে গেছে। এজন্য আমরা এমসিকিউ বাদ দিয়ে আগের পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়ার সুপারিশ করেছি।
কমিটির সভাপতি মোতাহার হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান, কমিটির সদস্য মোঃ নজুরুল ইসলাম বাবু, মোঃ আবুল কালাম, আলী আজম, মোহাম্মদ ইলিয়াছ এবং উম্মে রাজিয়া কাজল অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকে কমিটির শিক্ষা সফর নিয়ে আলোচনা হয়। এক্ষেত্রে সংসদীয় কমিটির বিদেশ ভ্রমনের ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়কে বলা হয়। এ বিষয়ে কমিটির সদস্য কাজল বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নত দেশের সঙ্গে তালমিলিয়ে চলতে হলে ওইসব দেশের অভিজ্ঞতা আমাদের দরকার। অনেক সংসদীয় কমিটি বিদেশ গিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করে, তা আমাদের এখানে কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়েছে। এতে কাজও হয়েছে। এজন্য আমরা কমিটির পক্ষ থেকে বিদেশে শিক্ষা সফরের ব্যবস্থা করতে সুপারিশ করেছি।
এদিকে কমিটি সামগ্রিক শিক্ষার মান এবং শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে প্রশ্ন পত্রেরকাঠামোগত পরিবর্তনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে সোচ্চার হওয়ার তাগিদ দেয়।
বৈঠকে প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ, শিক্ষকদের তথ্য প্রযুক্তিভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য সুপারিশ করে।