পুরনো পদ্ধতিতেই শিক্ষা বোর্ডগুলো ভিন্ন ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেবে

পুরনো পদ্ধতিতেই শিক্ষা বোর্ডগুলো ভিন্ন ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেবে ফের, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত

পুরনো পদ্ধতিতেই শিক্ষা বোর্ডগুলো ভিন্ন ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেবে ফের, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত।

ফের বোর্ডভিত্তিক আলাদা প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রায় ১৫ বছর এই পদ্ধতি অবলম্বনের পর হঠাৎই চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষা নেয়া হয় অভিন্ন প্রশ্নপত্রে। অর্থাৎ আটটি সাধারণ শিক্ষাবোর্ডের অধীনস্ত শিক্ষার্থীদের জন্য একই প্রশ্নপত্র। কিন্তু ফের পুরনো পদ্ধতিতেই অর্থাৎ শিক্ষা বোর্ডগুলো ভিন্ন ভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেবে। এ ছাড়া কোন সেটের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, তা নির্ধারণ করা হবে পরীক্ষার ঠিক আগে। কোনও শিক্ষক বা পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাও এ বিষয়ে আগে থেকে কিছুই জানতে পারবেন না।

এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় ব্যাপকভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠার পরিপ্রেক্ষিতে আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষাতেই এই পরিবর্তনগুলো আনতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে আধা ঘণ্টা আগে পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্রে প্রবেশ করা বা কেন্দ্রে মোবাইল ব্যবহার বিষয়ে আগের সিদ্ধান্তগুলো বহাল থাকবে।

বুধবার (৭ মার্চ) সচিবালয়ে মন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যামিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন এ তথ্য জানান।

সচিব বলেন, ‘সারাদেশে একই প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে আমরা সরে আসছি। বোর্ডগুলো নিজেদের মতো করে প্রশ্নপত্র তৈরি করতে পারবে। তবে প্রশ্নপত্রের কোন সেটে পরীক্ষা নেওয়া হবে, তা পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষার রুমে ঢোকার আগে নির্ধারিত হবে না। তারা রুমে ঢোকার পরে নির্ধারণ করা হবে কোন সেটে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সব বোর্ডের জন্যই এটা করা হবে। দেখা যাবে একেক বোর্ডে একেক সেটের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হচ্ছে।’

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে

পুরনো পদ্ধতিতেই এবার আগের চেয়ে বেশি সেট প্রশ্ন ছাপানো হবে। আর কেন্দ্র সচিবকে প্রশ্নের সেট কোড জানানো হবে পরীক্ষা শুরুর মাত্র ২০ মিনিট আগে। এ ছাড়া, বিজি প্রেস থেকে প্রশ্নপত্র ছাপিয়ে বিশেষ প্যাকেটে কেন্দ্রে পৌঁছানোর সিদ্ধান্তসহ আরও বেশকিছু সিদ্বান্ত নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ২ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া এইচএসসি পরীক্ষার জন্য বেশকিছু প্রশ্নপত্র ছাপাও হয়েছে। পর্যায়ক্রমে তিন থেকে চার সেট প্রশ্নপত্র শিগগিরই ছাপা হবে।

প্রশ্নপত্র ছাপার বিষয়ে জানতে চাইলে মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘কিছু প্রশ্নপত্র ছাপানো হয়েছে। আগামী কয়েক দিনে ধীরে ধীরে বাকি প্রশ্নপত্রগুলোও ছাপানো হবে। ২০/২৫ লাখ প্রশ্নপত্র একসঙ্গে ছাপানো বাংলাদেশের কোনও প্রেসের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই পর্যায়ক্রমে এগুলো ছাপানো হচ্ছে।’

প্রশ্নপত্র ফাঁস প্রতিরোধের বিষয়ে শিক্ষা বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে পুরনো পদ্ধতিতেই এবারের এইচএসসি পরীক্ষায়।

এ বিষয়ে মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা থেকে সার্টিফিকেট দেওয়া পর্যন্ত সব কাজ করে শিক্ষা বোর্ড। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব এই কাজে সমর্থন দেওয়া। এ ছাড়া, পুলিশের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ম্যাজিস্ট্রেটের জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবালয় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে একটি পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত করতে সবার সম্মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন। এখানে সবাই সৎ না হলে অনিয়ম ঠেকানো সম্ভব না। কোথাও হয়তো সামান্য নকল হচ্ছে। সেটি ছোটখাটো বিষয় হলেও ইন্টারনেটের যুগে একটি প্রশ্নপত্রও যদি বাইরে চলে যায়, তাহলে সব শেষ। একজন ব্যক্তি এই কাজ করলেও ২৫ হাজার মানুষের সততার কোনও মূল্য থাকবে না।’

পরীক্ষা পদ্ধতি প্রসঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের এই সচিব বলেন

বর্তমান পরীক্ষা পদ্ধতি চালু হয়েছিল ১৯৬০ সালে। তখন ইন্টারনেট ছিল না। তবে তখনও প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। সবসময়ই কমবেশি হয়ে আসছে। আর সে কারণেই পুরনো পদ্ধতিতেই পরিবর্তন আনতে হবে।’

পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে কত সময় লাগবে, জানতে চাইলে সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘পরীক্ষা পদ্ধতি বা কারিকুলামে পরিবর্তন আনতে হলে বিষয়গুলোকে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা, যাচাই-বাছাই করতে হবে। তারপর সবার মতামত নিয়ে পরিবর্তনগুলো প্রয়োগযোগ্য হলে তখনই তা বাস্তবায়ন করা হবে।’

এবার এইচএসসি পরীক্ষাতেও এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন নেওয়া কয়েকটি সিদ্ধান্তে অটল থাকবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টা আগেই পরীক্ষার্থীকে কেন্দ্রে প্রবেশ করে তার আসনে বসতে হবে। কেন্দ্রের ২০০ মিটারের মধ্যে কাউকে মোবাইলসহ পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গেই তাকে গ্রেফতার বা আটক করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নেবে। তবে ক্যামেরাবিহীন একটি মোবাইল ফোন থাকবে কেন্দ্র সচিবের হাতে।

এ বিষয়ে সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘পরীক্ষার আধা ঘণ্টা আগে হলে প্রবেশ না করলে তাকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। মোবাইল ফোনের সিদ্ধান্তও কঠোরভাবে বাস্তবায়ন হবে।’

 

আরো পড়ুন:

সারাদেশে শিক্ষার মান এক রাখার জন্যই সব বোর্ডে অভিন্ন প্রশ্নে এসএসসি পরীক্ষা

Leave a Reply

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline