সাল ২০১৪। শীর্ষ দুই স্মার্টফোন অপারেটিং সিস্টেম (ওএস) অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএসকে টেক্কা দিতে মজিলার প্রকৌশলীরা ব্যস্ত তাঁদের নতুন ওএস নিয়ে। কিন্তু হঠাৎ করেই খবর এল, কম্পিউটারের জন্য মজিলা ফায়ারফক্স ব্রাউজারের ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুতই কমতে শুরু করেছে। আর তার মূলে ছিল গুগল ক্রোম ব্রাউজার। ‘এর চেয়ে বাজে কিছু হতে পারে না’ এমনটা যখন ভাবছিলেন মজিলার কর্মকর্তারা, তখনই পদত্যাগ করে বসেন মজিলার সহপ্রতিষ্ঠাতা ও তৎকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ব্র্যান্ডন আইচ। সব মিলিয়ে ভীষণ সংকটে পড়ে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান মজিলা করপোরেশন।
মজিলার এমন সংকটময় মুহূর্তে ২০১৪ সালের জুলাইয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদে দায়িত্ব পান এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ক্রিস বিয়ার্ড। অথচ এক বছর আগে মজিলা ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন তিনি। তবে মজিলার দুঃসময়ে হাল ধরতে ফিরে আসেন। কারণ হিসেবে বিয়ার্ড বলেন, ‘আমি জানতাম, ইন্টারনেট জগতে মজিলা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এর সম্ভাবনাময় দিকগুলোও বুঝতে পেরেছিলাম।’ মজিলার অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে ক্রিস বিয়ার্ড সম্প্রতি কথা বলেছেন অনলাইন সংবাদমাধ্যম সিনেট-এর সঙ্গে।
মজিলা এমন কী ভুল করেছিল, যে কারণে হঠাৎ করে জনপ্রিয়তা হারিয়ে ফেলে? এমন প্রশ্নের জবাবে সাক্ষাৎকারটিতে বিয়ার্ড বলেন, শুধু একটা ব্রাউজার দিয়ে গুগল, অ্যাপল বা ফেসবুকের ওপরে ওঠার চিন্তা করাটা মজিলার বোকামি ছিল। এখন আমরা অনেক সমস্যা কাটিয়ে উঠেছি। মানুষের ভালোবাসা আবারও ফিরে পাচ্ছে মজিলা ফায়ারফক্স।
ব্রাউজারের বাইরে মজিলা নাকি নতুন করে আর কিছু ভাবছে না। নতুন কিছু ভাবাকে বিপজ্জনক বলছেন বিয়ার্ড। প্রতিষ্ঠানটি কাজ করছে ফায়ারফক্সকে আরও উন্নত করতে। ফায়ারফক্স দীর্ঘদিন ধরে হালানাগাদ হলেও সর্বাধুনিক প্রযুক্তির নতুন কোনো সংস্করণ আনেনি। আর তা করা হচ্ছে নতুন ফায়ারফক্সে। সর্বশেষ প্রযুক্তির সফটওয়্যার ও ডিভাইসগুলোর সঙ্গে মিল রেখেই বানানো হচ্ছে ফায়ারফক্স ৫৭। এতে ফায়ারফক্সের গতি আরও বাড়বে।
বেশ কিছু সুবিধার জন্য ব্যবহারকারীরা একসময় ফায়ারফক্স পছন্দ করতেন, ব্রাউজারটিতে এখন তেমন কিছু কি রয়েছে? ‘আপনি চাইবেন, মানুষ স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুক। এ ক্ষেত্রে দুটি উপায় রয়েছে কেবল। জোর করে খাওয়ানো অথবা খাবারের স্বাদটাই এমন হতে হবে, মানুষ যেন তা স্বেচ্ছায় গ্রহণ করে। ফায়ারফক্সের বেলায় দ্বিতীয় কাজটাই করা হচ্ছে। ফায়ারফক্সের নতুন সংস্করণে এমন কিছুই থাকবে, যেটি ব্যবহারকারীরা চান এবং তা সবাই পছন্দও করবেন’, এমনটাই বললেন বিয়ার্ড।
ব্রাউজার নিয়ে যুদ্ধ থেমে গেছে, স্বাভাবিক প্রতিযোগিতা রয়েছে জানিয়ে বিয়ার্ড বলেন, ‘মজিলা কখনোই কারও সঙ্গে দ্বন্দ্বে যাওয়ার পক্ষে নয়। আমরা শুধুই ইন্টারনেট জগতে অবদান রাখার কথা ভেবেছি। ইন্টারনেটকে কীভাবে আরও সহজলভ্য করে তোলা যায়, সেটাই মজিলার উদ্দেশ্য।’
আরো পড়ুন:
0 responses on "দ্বন্দ্বে যাওয়ার পক্ষে নয়, ইন্টারনেট জগতে অবদান রাখায় উদ্দেশ্য মজিলার"