ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের চতুর্থ বর্ষের (স্নাতক) পরীক্ষায় ভয়াবহ ফল বিপর্যয় হয়েছে। পরীক্ষায় অংশ নেয়া ৪০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৮ জনই অনুত্তীর্ণ হয়েছেন। যেটি শতকরা হিসাবে ৭০ শতাংশ। আর উত্তীর্ণ হয়েছেন মাত্র ১২ জন। শিক্ষার্থীরা বলছেন ‘নিউট্রিশন প্রবলেম’ নামে ৪০৯ নম্বর কোর্সে তারা অনুত্তীর্ণ হয়েছেন। কারণ ওই কোর্সের শিক্ষক পরীক্ষার আগেই বিভিন্নভাবে তাদের বুঝিয়ে দিয়েছেন যে তারা এ কোর্সে ভালো করতে পারবেন না। কারণ তিনি মিডটার্ম না নিয়ে প্রেজেন্টেশন ও রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে নম্বর দিতে চেয়েছেন।
এটি নিয়ে তীব্র সমালোচনাও হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও শিক্ষক-পরীক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করেছেন।`যারা শিক্ষার্থীদের জীবন ধ্বংস করেছে, তাদের শিক্ষক নামের কীট’ বলেও প্রতিবাদ জানায় এক শিক্ষক।
গত ১০ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত ফলাফলের একটি কপি রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের নোটিশ বোর্ডে প্রকাশ করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ৪০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৮ জন অনুত্তীর্ণ হয়েছেন।এছাড়া উত্তীর্ণ ১২ পরীক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ৩ পরীক্ষার্থী সাড়ে তিন পয়েন্টের ওপরে পেয়েছেন। বাকি ৭০ শতাংশই ফেল করেছে বলে ফলাফলের কপিতে দেখানো হয়। আর উত্তীর্ণ ১২ পরীক্ষার্থীর ১১ জনই মেয়ে।
এ বিষয়ে চতুর্থ বর্ষের কোর্স কোর্ডিনেটর ইনস্টিটিউটের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর আলী আব্বাস মো. খোরশেদ বলেন, আসলে আমাদের কিছুই করার নেই। আমরা শুধু টেবুলেশন শিট তৈরি করি। সুতরাং যারা ফেল করেছে তারা ফেল, আর যারা পাশ করেছে তারা পাশ। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই। তিনি জানান, ৪০৯ নম্বর কোর্সে সব থেকে বেশি ফেল করেছে। তাছাড়া আরো দু-তিনটি কোর্সেও ফেল করেছে কয়েকজন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘চতুর্থ বর্ষের শুরুতে নাজমুল হাসান স্যার আমাদের একটা টপিক্স দিয়ে বলেছেন, ‘এর ওপর ভিত্তি করে তোমরা একটা রিপোর্ট তৈরি করবে। ওই রিপোর্টের ওপর প্রেজেন্টেশন দেবে। আমি তোমাদের দুটি মিডটার্ম না নিয়ে প্রেজেন্টেশন ও রিপোর্টের ওপর ৩৫ নম্বর দিয়ে দিব।
এ নম্বর আমার হাতে পুরোপুরি থাকবে। তখন আমরা এর প্রতিবাদ জানিয়ে ইনস্টিটিউটের পরিচালকের কাছে অভিযোগ করেছি। ইনস্টিটিউটের পরিচালক মিডটার্মের সিদ্ধান্ত নিলে স্যার বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে আমরা এ কোর্সে ভালো ফলাফল করতে পারব না। তাই তিনি আমাদের দুটি মিডটার্ম এর প্রশ্ন এতো কঠিন করেছেন যে অধিকাংশই পরীক্ষার্থী খারাপ ফলাফল করেছে। পরীক্ষায় অংশ নেয়াদের বেশির ভাগই দুটি মিডটার্মে সাড়ে ১৭ করে ৩৫-এ ১০ এর নিচে পেয়েছে। মাত্র কয়েকজন এর বেশি পেয়েছে।’
এ বিষয়ে ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর নাজমা শাহীনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ৭০ শতাংশ ফেল আমি এমন বিষয় শুনিনি। যদি অভিযোগ আসে তাহলে আমরা এটি খতিয়ে দেখব।
আরো পড়ুন:
1 responses on "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষায় ভয়াবহ ফল বিপর্যয় হয়েছে"