গ) স্মৃতিঃ
কম্পিউটার ছাড়া অন্যান্য কিছু ইলেকট্রনিক যন্ত্রে সীমিত স্মৃতি থাকে। কিন্তু কম্পিউটারের স্মৃতির ধারণ ক্ষমতার সঙ্গে এ সব ইলেকট্রনিক যন্ত্রের স্মৃতির তুলনা করা যায়না। কম্পিউটারের সহায়ক স্মৃতিতে বিপুল পরিমান তথ্য ধারণ করে রাখা যায়। বিপুল পরিমাণ লেখালেখির কাজ,
হিসেব-নিকেশের কাজ শব্দ ও ছবি, চলমান চিত্র বা ভিড়িও, কার্টুন ইত্যাদি কম্পিউটারের স্মৃতিতে ধারণ করে রাখা যায় বা জমা করে রাখা যায়। পরবর্তীতে সময়ে প্রযোজন অনুযায়ী স্মৃতিতে জমা করে রাখা এ সব বিষয় ব্যবহার করা যায়। স্মৃতিতে ধারন করে রাখা কোনো অসমাপ্ত
কাজ পরবর্তীতে স্মৃতি থেকে তুলে এনে সমাপ্ত করে আবার স্মৃতিতে রেখে দেওয়া যায়। কম্পিউটারের সঙ্গে স্মৃতি শক্তি যুক্ত হওয়ার পর অন্যান্য ইলেকটুনিক যন্ত্র থেকে কম্পিউটার বিশেষভাবে গুরুত্ব লাভ করে এবং মানুষের ব্যবহারিক জীবনে অপরিহার্য হয়ে উঠতে থাকে।
নির্বোধ যন্ত্রঃ
কম্পিউটার অবিশ্বাস্য দ্রুত গতিতে অনেক বড় এবং জটিল হিসেব নিকেশের কাজ নির্ভূলভাবে করতে পারলেও কম্পিউটারের নিজের কিন্তু কোনো বুদ্ধি নেই। কম্পিউটার নিজে বুদ্ধি খাটিয়ে কোনো কাজ করতে পারেনা। মানুষের তৈরি করে দেওয়া নির্দেশমালা অনুসরণ করেই
কম্পিউটার সবরকমের কাজ সম্পন্ন করে। নির্দিষ্ট করে দেওয়া নির্দেশমালার অতিরিক্ত একটি কাজও কম্পিউটার নিজের বুদ্ধি বিবেচনা খাটিয়ে করতে পারেনা। কম্পিউটারের কিছু কিছু কাজ দেখ মনে হতে পারে এ সব কম্পিউটার নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে করেছে। কিন্তু মোটও না। যে
সকল কাজ দেখে কম্পিউটারকে বুদ্ধিমান মনে হয় সেসব কাজের নির্দেশমালাও আসলে মানুষের তৈরি করে দেওয়া। একই রকম কাজ একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দিলেই কম্পিউটার আর করতে পারবে না। কারণ, মানুষের তৈরি করে দেওয়া যে সকল নির্দেশমালার ভিত্তিতে কাজ করে সে
সব নির্দেশমালা কম্পিউটারের স্মৃতিতে জমা থাকে। স্মৃতিতে জমা থাকা নির্দেশমালা র সঙ্গে মিল খুঁজে না পেলে কম্পিউটার কোনো তথ্য নিয়ে কাজ করতে পারেনা। কাজেই, অনেক গুণে গুণী হওয়া সত্ত্বেও কম্পিউটার অন্যান্য যন্ত্রের মতোই নির্বোধ।
কম্পিউটারের কাজ করার পদ্ধতিঃ
কম্পিউটার দিয়ে কাজ করানোর জন্য কম্পিউটারকে সেই কাজের তথ্য ও উপাত্ত প্রদান করতে হবে। তথ্য উপাত্ত দিয়ে কী করতে হবে সে বিষয়ে কম্পিউটারকে নির্দেশ দিতে হয়। প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তকে ব্যবহারকারীর নির্দেশ অনুয়ারী ব্যবহার করে কম্পিউটার ফল প্রদান করে। অর্থাৎ
কম্পিউটারেরকাজ করার ধাপ হচ্ছে ৩টি।
ক. ব্যবহারকারীর দেয়া তথ্য উপাত্ত ও নির্দেশ গ্রহণ করা (Input), খ. তথ্যের প্রক্রিয়াকরণ (Processing) করা এবং প্রক্রিয়াজাত তথ্য প্রদান করা বা প্রকাশ করা (output)।
ইনপুট ও আউটপুটের মধ্যবর্তী কাজ করার অংশকে কম্পিউটারের কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট (central processing unit=CPU) বলা হয়। CPU এর প্রধান দুটি অংশ হচ্ছে RAM (Random access memory) বা অস্থায়ী স্মৃতি এবং ROM(Read only memory) বা স্থায়ী স্মৃতি।
কম্পিউটারের প্রকারভেদ ও তার বৈশিষ্ট্যঃ
কাজ করার পদ্ধতির দিক থেকে কম্পিউটার মুলত তিন প্রকার। যথা- এনালগ কম্পিউটার, ডিজিটাল কম্পিউটার এবং হাইব্রিড কম্পিউটার।
এনালগ কম্পিউটার
যে কম্পিউটার একটি রাশিকে অন্য একটি রাশির সাপেক্ষে পরিমাপ করতে পারে,তাই এনালগ কম্পিউটার। এটি উষ্ণতা বা অন্যান্য পরিমাপ যেটি নিয়মিত পরিবর্তিত হয় তা রেকর্ড করতে পারে।মোটর গাড়ির বেগ নির্ণায়ক যন্ত্র এনালগ কম্পিউটারের একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
ডিজিটাল কম্পিউটার
ডিজিটাল কম্পিউটার দুই ধরনের বৈদ্যুতিক ভোল্টেজ দ্বারা সকল কিছু প্রকাশ করা হয়। ভোল্টেজের উপস্থিতিকে ১ এবং অনুপস্থিতিকে ০ দ্বারা প্রকাশ করা হয় এটি যে কোন গণিতের যোগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারে এবং বিয়োগ,গুণ ও ভাগের মতো অন্যান্য অপারেশন যোগের
সাহায্যে সম্পাদন করে। আধুনিক সকল কম্পিউটার ডিজিটাল কম্পিউটার।
হাইব্রিড কম্পিউটার
হাইব্রিড কম্পিউটার হলো এমন একটি কম্পিউটার যেটি এনালগ ও ডিজিটাল কম্পিউটারের সর্বোত্তম বৈশিষ্ট্যগুলোর সমন্বয়ে গঠিত। এটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ব্যবহার করা হয়। সুতরাং বলা যায়, প্রযুক্তি ও ভিত্তিগত দিক থেকে এনালগ ও ডিজিটাল কম্পিউটারের আংশিক সমন্বয়ই
হচ্ছে হাইব্রিড কম্পিউটার। সাধারণত হাইব্রিড কম্পিউটারে তথ্য সংগ্রহ করা হয় অ্যানালগ পদ্ধতিতে এবং গণনা করা হয় ডিজিটাল পদ্ধতিতে। যেমন আবহাওয়া দপ্তরে ব্যবহৃত হাইব্রিড কম্পিউটার অ্যানালগ পদ্ধতিতে বায়ুচাপ,তাপ ইত্যাদি পরিমাপ করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে গণনা
করে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিয়ে থাকে।
কাজের দক্ষতা ও আকারের ভিত্তিতে ডিজিটাল কম্পিউটারকে ৪ ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন- সুপার কম্পিউটার, মেইনফ্রেম কম্পিউটার, মিনিফ্রেম কম্পিউটার এবং মাইক্রোকম্পিউটার বা পার্সোনাল কম্পিউটার।
সুপার কম্পিউটার
অত্যন্ত শক্তিশালী ও দ্রুতগতি সম্পন্ন কম্পিউটারকে সুপার কম্পিউটার বলে।এ কম্পিউটারের গতি প্রায় প্রতি সেকেন্ডে ১ বিলিয়ন ক্যারেক্টর।সুপার কম্পিউটারের সাহায্যে কোনো দেশের আদমশুমারির মতো বিশাল তথ্য ব্যবস্হাপনা করার মতো স্মৃতিভান্ডার বিশিষ্ট কম্পিউটার হচ্ছে
সুপার কম্পিউটার। CRAY 1, supers xllএধরনেরকম্পিউটার।
মেইনফ্রেম কম্পিউটার
যে কম্পিউটার টার্মিনাললা গিয়ে প্রায় একসাথে অর্ধশতাধিক ব্যবহারকারী ব্যবহার করতে পারে তাই মেইনফ্রেম কম্পিউটার বা মিনি কম্পিউটার।এটা শিল্প-বাণিজ্য ওগবেষণাগারে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
ট্যাবলেট কম্পিউটার
ট্যাবলেট কম্পিউটার একধরণের মাইক্রো কম্পিউটার।যা পামটপ কম্পিউটার নামে পরিচিত।এটি স্পর্শ পর্দাসম্বলিত প্রযুক্তি।এটি এন্ড্রোয়েড এবং উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে চলে।
মাইক্রো কম্পিউটার
মাইক্রো কম্পিউটারকে পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসি বলেও অভিহিত করাহয়।ইন্টারফেসচিপ (Mother Board) , একটিমাইক্রোপ্রসেসরcpu, ram, rom, hard disk etc.সহযোগে মাইক্রো কম্পিউটার গঠিতহয়।দৈনন্দিন জীবনের সর্বক্ষেত্রে এ কম্পিউটারের ব্যবহারদেখা যায়।
ম্যকিনটোস আইবিএম পিসি এ ধরনের কম্পিউটার।
এই লেকচারের পরের পেইজে যেতে নিচের …. তে ক্লিক কর।
পরের পাতাসমুহ >>
0 responses on "কম্পিউটারের ইতিহাস"