৩৮ তম বিসিএস প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা প্রস্তুতি
.
আন্তজার্তিক রাজনীতি ও ভূ-রাজনীতিতে কাজে দেবে
ছায়াযুদ্ধের কৌশল নিয়েছে আমেরিকা
==
বিশ্বের নানা প্রান্তে মার্কিন সামরিক বাহিনীর স্পেশাল ফোর্স মোতায়েন বাড়িয়ে চলেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। প্রকাশ্য যুদ্ধক্ষেত্রের তুলনায় গোপন বা ছায়াযুদ্ধকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে ওবামা প্রশাসন। যার কিছু নমুনা এখানে তুলে ধরা হলো।
,
সোমালিয়া:
স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সেখানে মিলেমিশে কাজ করছে মার্কিন স্পেশাল বাহিনী। বিশেষ প্রয়োজনে জঙ্গি বিরোধী অভিযানে নামার জন্য তাদের ডাক পড়ে। এক বছর ধরে সোমালিয়ায় সক্রিয় আছে মার্কিন বাহিনী। এ বছর মার্চে সোমালী বাহিনীর সহায়তায় ১৫ জন ইসলামপন্থি জঙ্গিকে হত্যা করে। তাছাড়া আলশাবাব বাহিনীকে কিভাবে পরাস্ত করতে হবে সে বিষয়ে সোমালী বাহিনীকে তারা প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
লিবিয়া:
সম্প্রতি জানা গেছে, গত বছর শেষের দিক থেকে দেশটিতে জনা পঞ্চাশেক মার্কিন স্পেশাল অপারেশন বাহিনীর সদস্য তত্পর রয়েছে। আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তারা সেখানে নির্ভরযোগ্য সহযোগী খুঁজছে। লিবিয়ায় আস্থাভাজন সহযোগী খুঁজে বের করাই মার্কিন বাহিনীর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। গত এক বছরে সেখানে যুক্তরাষ্ট্র বেশ কবার সামরিক অভিযানও চালিয়েছে। কিন্তু লিবিয়ার সরকারের কাছ থেকে আশানুরূপ সহযোগিতা ছাড়া এ ব্যাপারে খুব বেশিদূর অগ্রসর হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে অসম্ভব
..
ইয়েমেন:
মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা সম্প্রতি স্বীকার করেছেন যে, আলকায়েদা ইন অ্যারাবিয়ান পেনিনসুলা (একিউএপি) নামে পরিচিত আলকায়েদার স্থানীয় শাখার বিরুদ্ধে তারা ইয়েমেনে সক্রিয় রয়েছেন। পেন্টাগনের মুখপাত্র ক্যাপ্টেন জেফ ডেভিসের বক্তব্য অনুযায়ী এ বছর এপ্রিলে ইয়েমেনে একটি বিশেষ বাহিনী পাঠানো হয়েছে। এরা সংখ্যায় একশ’র কম। কিন্তু তাদের গোয়েন্দা, নজরদারি ও প্রয়োজনে ঝটিকা আক্রমণের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি দিয়েই পাঠানো হয়েছে। ইয়েমেনের মুলকালা বন্দরের অদূরে গালফ অব এডেনে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১২শ’ নাবিক ও মেরিন বহনকারী ক্ষুদ্র রণতরী ইউএসএস বক্সারকে।
.
দক্ষিণ চীন সাগর:
দক্ষিণ ও পূর্ব চীন সাগরকে ঘিরে চীনের সামরিক উচ্চাভিলাষ বেড়ে চলার পটভূমিতে বসে নেই যুক্তরাষ্ট্রও। খনিজ তেল সমৃদ্ধ দক্ষিণ চীন সাগরের কয়েকটি প্রবাল প্রাচীরের ওপর বালু কংক্রিট ফেলে চীন কয়েকটি কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করে হালকা সামরিক স্থাপনা বসিয়েছে। এ নিয়ে আঞ্চলিক রাজনীতি বর্তমানে বেশ সরগরম। মার্কিন রণতরী এর ধারে কাছে টহল দিতে শুরু করেছে। ভিয়েতনামের সঙ্গে দেশটির যুদ্ধকালীন পুরনো একটি নৌবন্দর ব্যবহার করার জন্য চুক্তি করেছে ওয়াশিংটন। তাছাড়া চীনের প্রতিবেশী মিত্র দেশগুলোকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র নিয়মিতই চালিয়ে যাচ্ছে সামরিক মহড়া। উল্লেখ্য সাগরের এই রুট দিয়ে বছরে পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্যিক সামগ্রী পরিবাহিত হয়ে থাকে। এর বেশির ভাগ অংশের ওপর এখন চীন মালিকানা দাবি করছে। পেন্টাগন যেভাবে চীনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সামরিক ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়ে চলেছে তা নিয়ে বেইজিংয়ের নীতি নির্ধারক মহলেও উদ্বেগ বাড়ছে।
.
পারস্য উপসাগর:
মার্কিন নৌবাহিনীর পঞ্চম নৌ বহর দীর্ঘদিন ধরে চষে বেড়াচ্ছে পারস্য উপসাগর। ওয়াশিংটনের দৃষ্টিতে যুদ্ধবিগ্রহ প্রবণ অঞ্চলটিতে বাণিজ্যিক নৌ চলাচল স্বাভাবিক রাখার একটি নৈতিক দায়িত্ব তাদের রয়েছে। হরমুজ প্রণালী দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১ কোটি ৭০ লাখ ব্যারেল তেল বহন করা হয়ে থাকে। বিশ্বের মোট তেল বাণিজ্যের এক-পঞ্চমাংশ এই পথে হয়ে থাকে। পারস্য উপসাগর ছাড়াও হরমুজ প্রণালী, লোহিত সাগর, বাব আল মান্দিব ও আরব সাগরের নিরাপত্তা দেখভাল করছে পঞ্চম নৌবহর। দ্বিতীয় যুদ্ধকালে গঠিত নৌবহরটি ৪০ এর দশকে প্রশান্ত মহাসাগরে যুদ্ধে নিয়োজিত থাকলেও যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত একে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছিল। মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সবদেশে প্রকাশ্যে অথবা গোপনে সামরিক মিশন চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত ১৯৯১ সালে প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধের পর থেকেই এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
.
ইউরোপ ও বাল্টিক অঞ্চল:
বাল্টিক অঞ্চলে রুশ নজরদারি বিমানগুলোর সঙ্গে ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোর বিমান প্রায়ই মুখোমুখি অবস্থানে চলে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের নর্দার্ন কমান্ড এক্ষেত্রে সক্রিয় থেকে ‘রুশ আগ্রাসন’ প্রতিরোধে নেতৃত্ব দিচ্ছে। পূর্ব ইউরোপে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যূহ গড়ে তোলা যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখার প্রচেষ্টা মাত্র। যুক্তরাষ্ট্র এক্ষেত্রে রাশিয়ার নাম উল্লেখ করে দেশটিকে টার্গেট করেনি। কেবল বলেছে উত্তর কোরিয়া বা ইরানের মতো দেশের সম্ভাব্য ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে ইউরোপকে রক্ষা করাই এসবের উদ্দেশ্য। কিন্তু মস্কো ওয়াশিংটনের অনুচ্চারিত ইঙ্গিত ঠিকই পড়ে নিয়েছে। ফলে অর্থনীতির অবস্থা ভালো না থাকার পরও রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ন্যাটোর সঙ্গে অসম অস্ত্র প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সামরিক কর্মসূচিতে যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক ৬শ’ বিলিয়ন ডলারের বেশি খরচ হয় বলে সম্প্রতি কংগ্রেসে জানান হয়েছে।
.
িইত্তেফাক ১৩জুন।