৩৮ তম বিসিএস প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা প্রস্তুতি
—-
সত্যিই কি ইইউ ছাড়বে ব্রিটেন?
===
ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) থাকা না থাকা নিয়ে সরব যুক্তরাজ্যের জনগণ। আগামী ২৩ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া গণভোটের সম্পর্কে আগাম একটা ধারণা পেতে একের পর এক জনমত জরিপ চালানো হচ্ছে। ইইউ ছাড়ার পক্ষের লোকজন জনগণকে নিজেদের দলে ভেড়াতে রীতিমতো নাওয়া-খাওয়া ত্যাগ করার পথে। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন চাইছেন জনগণকে সাথে নিয়ে ইইউ-তে থেকে যেতে। এক্ষেত্রে বিরোধীদের থেকে যতটা না বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন মি.ক্যামেরন তার থেকে বেশি বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন নিজ দলের এমপিদের দ্বারা।
.
ইইউতে থাকার জিদ বজায় রাখায় এখন ক্যামেরনের ক্ষমতায় টিকে থাকাটাই অনেকটা চ্যালেঞ্জের মুখে। গণভোটকে সামনে রেখে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলে বিভক্তি চরমে পৌঁছেছে। সরকারে থাকা মন্ত্রী-এমপিরা পর্যন্ত একে অন্যের বিরোধিতা করতে শুরু করেছে।
..
মন্ত্রিসভার বেশিরভাগ সদস্যই চান ইইউতে থেকে যেতে। তবে এমপিদের একটা বিশাল অংশ চাইছেন ইইউ থেকে বেরিয়ে যেতে। ক্ষমতাসীন দলের এমপি পর্যন্ত ক্যামেরনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। অন্যদিকে ক্যামেরন বারবার হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলছেন, ইইউ ছাড়লে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ধসে পড়বে, নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। তার মতে, পুরো ইউরোপের শান্তি হুমকির মুখে পড়তে পারে। অতীতে ইইউর বিভিন্ন ইস্যু থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার জন্য যুক্তরাজ্যকে অনুশোচনা করতে হয়েছে। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি এবং শান্তিরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে ইইউ। অন্যদিকে বিরোধীদের কথা, ইইউ নয় বরং যুক্তরাজ্যকে নিরাপদ রেখেছে ন্যাটো। বিদ্রোহীরা অভিযোগ করছেন, যুক্তরাজ্যকে ইইউ জোটে রাখার জন্য ষড়যন্ত্রে নেমেছেন ক্যামেরন। শুধু ক্যামেরনই না, কিছুদিন আগে জি-৭ সম্মেলনে যোগ দেয়া বিশ্ব নেতারাও যুক্তরাজ্যের ইইতে থাকার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেছিলেন। জি-৭ সম্মেলনের ঘোষণায় বিশ্ব নেতৃবৃন্দ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার এটি নিয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ মনে করেন, যুক্তরাজ্য জি-৭ থেকে বেরিয়ে গেলে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে সারাবিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। জি-৭ সম্মেলনের প্রথম দিন শেষে আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় যুক্তরাজ্যের ইইউ থেকে বের হয়ে যাওয়ার এটি নিয়ে সতর্ক করে বলা হয়, যুক্তরাজ্য সত্যি সত্যি ইইউ থেকে বের হয়ে গেলে অগ্রসর প্রবৃদ্ধি উল্টোদিকে ঘুরে যাবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিশ্ব বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও চাকরির বাজার। শীর্ষ সম্মেলনের এক সপ্তাহ আগে জি-৭ দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকেও যুক্তরাজ্যের ইইউ-তে থাকা না থাকার পরিণতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী পর্যায়ের ঐ বৈঠকেও যুক্তরাজ্যের ইইউ থেকে বের হওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
.
যুক্তরাজ্যের বেশিরভাগ মানুষই ইইউতে থাকা না থাকা নিয়ে কোন মাথাব্যথা ছিলো না। কিন্তু বেক্সিট বা ব্রিটেন এক্সিট মতাবলম্বীরা যখন থেকে বিষয়টা নিয়ে জনমত গঠন করতে শুরু করেছে তখন থেকে মানুষের মধ্যে এই ইস্যুটা দানা বাঁধতে শুরু করেছে। বিরোধীদের দাবি, ইইউতে থাকতে গিয়ে যে পরিমাণ সুবিধা তাদের পাওয়ার কথা তা পাচ্ছে না যুক্তরাজ্যের জনগণ। ইইউ-এর সদস্য হিসাবে যে পরিমাণ অর্থ গুনতে হয় তার উপযুক্ত প্রতিদান ইইউ থেকে পাওয়া যায় না বলে অভিমত তাদের। তবে এখনো বেশিরভাগ মানুষই ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষেই অবস্থান করছে। বিভিন্ন জনমত জরিপ থেকে এমনটাই আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
অলক বিশ্বাস, ইত্তেফাক