সাধারন জ্ঞান প্রিলি নিয়ে কিছু কথা ——

সাধারন জ্ঞান বিষয়টা স্মরণাতীত কাল থেকেই একটু অসাধারণ । এর শুরু আছে কিন্তু শেষ টা নেই বললেই চলে । অনেকের কাছেই সাধারন জ্ঞান প্রস্তুতি বিদঘুটে একটা বিষয় । প্রিলির জন্য অন্যান্য সকল বিষয় স্টাডি মোটামুটি শেষ করার পর সাধারন জ্ঞান প্রস্তুতি নেয়া শুরু করবেন এবং নির্দিষ্ট সময় নিয়ে এর মাঝে যেটি পারবেন দেখবেন । সাধারন জ্ঞানের জন্য বাজারে অনেক বইই পাওয়া যায় । আমার কাছে কোন বইই খুব একটা খারাপ লাগেনি , কারন এসব বই এর তথ্য তো কোথাও না কোথাও থেকে সংগ্রহই করা তাইনা ? মোটামুটি একটা সাধারন জ্ঞান প্রস্তুতির জন্য আপনারা যেভাবে শুরু করতে পারেন ——-

১– শুরুতে আজকের বিশ্ব বা নতুন বিশ্ব এই টাইপ যেকোনো একটা গাইড সংগ্রহ করতে পারেন , সাথে যেকোনো একটা প্রিলির ডাইজেস্ট টাইপ বই রাখতে পারেন এবং কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এর বিগত ৫-৬ মাসের সংখ্যা, একটা ছোট পকেট সংবিধান এবং প্রিলির আগে যে কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এর সালতামামি বই বের হয় সেটাও রাখতে পারেন । সাথে বিগত বছরের প্রিলির প্রশ্নগুলো ।

২– আগে বিগত বছরের প্রিলির সাধারন জ্ঞান প্রশ্নগুলো দেখে ধারনা নিন প্রশ্ন কেমন হয়, তারপর স্টাডি শুরু কর । প্রথমেই বলে নেই চেষ্টা করবেন কমন আর আসার মত বিষয়গুলো আগে স্টাডি করার, uncommon প্রশ্ন নিয়ে মাথা কম ঘামানোর । যারা খুবে বেশি uncommon প্রশ্ন নিয়ে মাথা ঘামান সাধারনত দেখা যায় তাদের পরীক্ষা তাও uncommon হয় , মানে পরীক্ষায় শুধু কঠিন প্রশ্নের উত্তর করতে পেরেছেন কিন্তু সহজগুলোতে খবর নেই । অথচ তুলনামুলক সহজ বা মোটামুটি টাইপ প্রশ্নের সংখ্যাই বেশি থাকে ।

৩– যেকোনো ডাইজেস্ট বই এর সাধারন জ্ঞান অংশটুকু দেখে নিন , কোন কিছু মনে রাখার টার্গেট নিয়ে পড়বেন না , জাস্ট মনোযোগের সাথে রিডিং দিয়ে যান ।

৪– এরপর প্রতি মাসের কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এর MCQ গুলো দেখে ফেলুন , তাছাড়া এই বইগুলোতে বাংলাদেশ বিষয়াবলী এবং আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী নামে ২ টা page থাকে যেখানে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য দেয়া থাকে সেগুলো দেখে নিন

৫– এরপর আজকের বিশ্ব বা নতুন বিশ্ব এই টাইপ বই থেকে বাংলাদেশ বিষয় থেকে টুকটাক যেসব স্টাডি করতে পারেন তা হোল সাম্প্রতিক বাংলাদেশ , ভুগলিক বিষয়, খনিজ সম্পদ , বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ , প্রাচীন বাংলা , লোকসাহিত্য , সংবিধানের উল্লেখযোগ্য অনুচ্ছেদ যেটি দৈনিক ২-৩ টি করে দেখুন , পুরাকীর্তি গুলোর অবস্থান , উপজাতি, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র , উপমহাদেশের একদম basic ইতিহাস ইত্যাদি

৬– আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো থেকে সাম্প্রতিক অংশটি আগে দেখে নিন, পরে বিভিন্ন দেশের রাজধানী, মুদ্রা, নামকরা দেশগুলোর পার্লামেন্ট এর নাম, বিভিন্ন দেশের ভুগলিক উপনাম , সীমারেখা , বিখ্যাত চুক্তি , বিভিন্ন সংস্থার সদর দপ্তর ও পুরো নাম , বিখ্যাত বই এর নাম, বিভিন্ন পুরষ্কার, খেলাধুলা নিয়ে basic,বিখ্যাত জায়গার নাম ও অবস্থান, বিভিন্ন কিছু উৎপাদনে শীর্ষ দেশ, সাম্প্রতিক বাংলাদেশ ও বিশ্বের আলোড়নকারী ঘটনা ইত্যাদি দেখতে পারেন, সব স্টাডি করতে যাবেন না , মোটামুটি কি কি স্টাডি করবেন সেটার ভালো ধারণার জন্যই তো বিগত বছরের প্রশ্নগুলো নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করবেন ।

৭– সাধারন জ্ঞান স্টাডি করার সময় ২-৩ জন বন্ধু মিলে স্টাডি শেষে আলোচনা কর , স্টাডিটা মনে থাকবে, একসাথেও স্টাডি করতে পারেন , যেমন ২-৩ ঘণ্টা স্টাডি শেষে একজন অন্যজনকে প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলেন । পরীক্ষার আগে কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এর সালতামামি টাইপ যে ছোট বই বাজারে বের হয় সেগুলো একবার রিডিং দিন সবশেষে । সাধারন জ্ঞান প্রস্তুতি নিয়ে আপনি কখনোই satisfied হতে পারবেন না , তাই নির্দিষ্ট একটা সময় যেমন ৭ দিন এর মধ্যে যেটি পারবেন দেখে নিবেন । বি সি এস এ ভালো করার জন্য সব বিষয়েই সমান পারদর্শী হতে পারলে ভালো । আগেও বলেছি ইংরেজী, গনিত ও বুদ্ধিমত্তা আর বিজ্ঞান এই ৩ বিষয়ে ভালো করতে পারলে লিখিত আর প্রিলি ২ পরীক্ষাতেই pressure অনেক কমে যায় । আর পরীক্ষাতে সব উত্তর করতে চাওয়াটা বা সব কমন ফেলার চেষ্টা করা বিশাল বোকামি কারন সাধারণত প্রিলিতে ২০০ তে ১২০ পেলে মোটামুটি confirm যে আপনার চান্স হচ্ছে , তারমানে আপনি ৮০ টি প্রশ্ন বাদ দেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন , ৮০ টি প্রশ্ন তো অনেক । তারমানে আপনি যেকোনো ৩-৪ টা টপিক পুরো বাদ দিলেও সমস্যা নেই । তো এতো সিরিয়াস হয়ে পরীক্ষাতে ডুবানোর কোন দরকার নেই কি বলুন ? যে যাই স্টাডি কর না কেন পরীক্ষার সময় যে যত easy থাকতে পারবে তার পরীক্ষা তত ভালো হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে ।

৮– প্রিলির সময় যারা একটু আগে থেকে স্টাডি শুরু করেন তারা একটু details স্টাডি করতে পারলে ভালো হয় , কারন প্রিলির সময় আপনার অর্জিত জ্ঞান আর কিছু চাপা দিয়েই আপনি লিখিত পরীক্ষা পার করতে পারবেন । যে যত ভালো বানিয়ে লিখতে পারবে তার লিখিত পরীক্ষায় ভালো নাম্বার পাওয়ার সম্ভাবনা তত বেড়ে যাবে । লিখিত পরীক্ষায় হাল্কা চাপা-মারা খারাপ না কিন্তু খেয়াল রাখবেন সবই যেন আবার হাওয়া থেকে download করে খাতায় ভরে না দিয়ে আসেন ।

৯– নিজের মত করে স্টাডি করে যান , সময় নষ্ট করবেন না, আপনি নিজেকে জিজ্ঞেস কর তো আপনি কি আসলেই ভালো একটা পজিশনে যেতে চান, আপনি কি আদৌ ভালো কিছু করতে চান ? তাহলে বসে আছেন কেন বা সময় নষ্ট কেন করছেন ? যারা এই পৃথিবীতে ভালো কিছু করেছে তারা কেউই বসে বসে কিছু পায়নি । নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস রেখে এগিয়ে যান , ধৈর্য রাখুন , আপনি তো আপনার ভেতরের মানুষের দিকে কখনো তাকানই নি , সেই সময়টা হয়ত হয়নি বা সেভাবে ভাবেনই নি, তাকালে দেখতেন সেখানে এক দৃঢ়চিত্তের কেউ বাস করছে যে যেকোনো মুহূর্তে বেরিয়ে এসে দুর্দান্ত কিছু করার জন্য অপেক্ষা করছে । নিজের quality কে কাজে লাগান, কে বলেছে আপনাকে দিয়ে কিছু হবেনা বা আপনি পারবেন না , আপনি একবার খালি নিজের দিকে তাকিয়ে বলেই দেখুন না যে আপনি পারবেন that means আপনি আসলেই পারবেন । সবাই জীবনে একভাবে চলে বা একই রাস্তায় হেঁটে ভালো কিছু করেনা । একেকজনের style, pattern , vision, mission একেকরকম । জাস্ট এগিয়ে যান , শুধু নিজের প্রতি এই আত্মবিশ্বাস তা রাখুন যে – যাই হোকনা কেন জীবনে ভালো কিছু আপনি করবেনই । শ্রম দিতে থাকুন, কখন কিভাবে সুযোগ আপনার সামনে এসে যাবে এটা কি আপনি জানেন নাকি ?? তাহলে আগেই এতো অল্পতেই হতাশ হন কেন ? কখনোই হতাশ হবেন না । যারা হতাশ না হয়ে এগিয়ে যাবেন তারা ভালো কিছু ঠিকই করবেন , হয় আজ নাহয় কিছুদিন পর , পার্থক্য এই যেটি । আমি জাস্ট একটু গাইড দেয়ার চেষ্টা করছি মাত্র , আপনারা অনেকেই এসব জানেনই । ভালো থাকবেন সবাই । good luck guys.

আরো পড়ুন:

বিসিএস – প্রিলিমিনারি – বাংলা ভাষা ও সাহিত্য – ভাষা

মন্তব্য করুন

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline