মানুষের পরিপাক তন্ত্র বা পৌষ্টিক তন্ত্র
মানুষের পরিপাক তন্ত্রের দুটি অংশ –
পৌষ্টিক নালী বা Alimentary Canal
আনুষঙ্গিক পরিপাক গ্রন্থী
1. মুখগহ্বর (Mouth Cavity / Oral Cavity)পৌষ্টিক নালীর প্রথম অংশ হলো মুখগহ্বর। এটি দুটি অংশে বিভক্ত।বাইরের তুলনা মূলক ছোট অংশ হল ভেস্টিবিঊল এবং ভেতরের তুলনামূলক বড় অংশ হল প্রকৃত মুখ গহ্বর ।ভেস্টিবিঊল অংশটি মুখছিদ্র দ্বারা বাইরে উন্মুক্ত হয় । মুখগহ্বরের ছাদ টিকে বলে বলে তালু(Palate) – তালুর সামনের দিকের অংশ টি অস্থি দিয়ে গঠিত একে বলে শক্ত তালু(hard palate) এবং তালুর পিছনের দিকের পেশিময় অংশকে বলে নরম তালু(soft palate)
দাঁত (Teeth) উপরের এবং নীচের চোয়ালে অর্ধবৃত্তাকারে সারিতে সজ্জিত অবস্থায় দাঁত গুলি অবস্থান করে।প্রতি চোয়ালের প্রতি অর্ধাংশে দাঁতের সংখ্যা ও বিন্যাস একই প্রকারের। মানুষের ক্ষেত্রে দাঁত দুই প্রকারের –অস্থায়ী বা deciduous ও স্থায়ী বা permanent .।শিশুদের ক্ষেত্রে অস্থায়ী দাঁত থাকে কিন্তু বয়স বৃধির সঙ্গে সঙ্গে এই দাঁত গুলি স্থায়ী দাঁত দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়।শিশুদের ক্ষেত্রে সর্বমোট দাঁতের সংখ্যা ২০ টি কিন্তু প্রাপ্ত বস্কদের ক্ষেত্রে সর্বমোট ৩২ টি দাঁত থাকে ।জীবন কালে দুইবার দাঁত ওঠার জন্য এই প্রকার দাঁত কে ডাইফায়োডন্ট (diphiodont) দাঁত বলে দাঁতগুলি চোয়ালের গর্তে গাঁথা থাকে বলে এই প্রকার দাঁতকে থেকোডন্ট(Thecodont) বলে। মানূষের চার ধরনের ভিন্ন ভিন্ন দাঁত থাকে বলে একে হেটারোডন্ট বলে । প্রতি চোয়ালের অর্ধাংশে উপস্থিত দাঁত গুলি হল –কামড়ানোর জন্য দুটি কৃন্তক(Incisor =I) , তার পাশে ছেঁড়ার জন্য একটি ছেদক বা শ্বাদন্ত (Canine=C) , এরপরে পেষাই এর জন্য দুটি দুটি পুরঃ পেষক( Premolar=PM) , এবং একেবারে শেষের দিকের তিনটি পেষক (Molar=M) প্রাপ্ত বয়স্ক মানূষের দন্ত সংকেত হল I
দাঁতের গঠন –
দাঁত গুলি চোয়ালের গর্তে প্রোথিত থাকে ।এই প্রকার দাঁতকে থেকোডন্ট বলে ।
প্রতিটি দাঁতের ৩ টি অংশ থাকে যথা –দন্তচূড়া বা ক্রাঊন ,গ্রীবা বা নেক এবং দন্তমূল বা রূট দাতের মূল গাঁথা থাকে চোয়ালের গর্তে এবং এবং যে অংশ টি বাইরে বেরিয়ে থাকে সেটি হল ক্রাঊন । । ক্রাঊন ও মূলের মধ্যবর্তী সরু গ্রীবা অংশ টি মাড়ির মধ্যে অবস্থান করে ।
দাঁতের কেন্দ্রস্থলে একটি গহ্বর থাকে যাকে বলে দন্তমজ্জা বা টুথ ক্যাভিটি বা পাল্প ক্যাভিটি ।এই গহ্বরের মধ্যে শিথিল যোগ কলা , রক্তনালী এবং স্নায়ু রজ্জু থাকে । দন্তমজ্জা টি দন্তমূলের শেষ ভাগে অবস্থিত একটি ছিদ্র দ্বারা উন্মুক্ত হয় যাকে দন্তমূল রন্ধ্র বা অগ্রছিদ্র বা apical foramen বলে। দাঁতের কঠিন প্রাচীরটি গঠিত হয় তিনটি অংশ দ্বারা –যথা , ডেন্টিন , এনামেল এবং সিমেন্ট । দেন্টিন বা ডেণতাঈণ হোলো ডাঁটেড় পুরু হাড়ের মোট অংশ ,এনামেল দ্বারা দাঁতের দাঁতের ক্রাউনের উপর একটি পাতলা অথচ প্রচন্ড রকম শক্ত আবরনী গঠিত হয়।সিমেন্ট অংশ দন্তমূলকে বাইরের থেকে আবৃত করে রাখে ।এনামেল আমাদের দেহের সবচেয়ে শক্ত অংশ ।
জিভ বা জিহ্বা-
মুখগহ্বরের মেঝেতে ঐচ্ছিক পেশী নির্মিত পরিপাকে সাহায্যকারী সঞ্চরন ক্ষম সংবেদ অঙ্গটিকে জিভ বলে। এটি সরেখ পেশী সলগ্ন শ্লৈষ্মিক স্তর ও গ্রন্থি দিয়ে তৈরী হয়। জিহ্বার উপরিভাগ স্তরী ভূত আঁইশাকার আবরনী কলা দ্বারা আবৃত থাকে । এতে ছোট ছোট গুটি বিন্যস্ত থাকে , যাদের প্যাপিলা বা পীড়কা বলে।
প্যাপিলাতে অসংখ্য স্বাদ কোরোক বা টেস্ট বাড বিন্যস্ত থাকে যাতে স্বাদ সংবেদ কারী গ্রাহক বিন্যস্ত থাকে । জিহ্বায় তিন প্রকার প্যাপিলা বা পীড়কা দেখা যায় –
(i) সুত্রাকৃতি বা ফিলিফর্ম (filiform)- এদের শীর্ষাংশ সূচালো – জিভের সম্মুখ ভাগে ২/৩ অঞ্জশ জুড়ে এরা অবস্থান করে – আকারে এরা সবচেয়ে ছোট – সংখ্যায় এরা সবচেয়ে বেশী ।
(ii) ছত্রাকৃতি বা ফাঞ্জিফর্ম (fungiform) –এদের শীর্ষাংশ সামান্য চ্যাপ্টা , অনেকটা ছাতার মত । জিহ্বার সামনের দিকে এদের অবস্থান ।
(iii) সারকামভ্যালেট (Circumvallate) – জিভের পেছন দিকে V আকারে সজ্জিত থেকে জিভের পিছনের দিকের এক তৃতীয়াংশ কে সামনের দিকের দুই তৃতীয়াংশ থেকে আলাদা রাখে । –সংখ্যা -৮-১২ টি । এরা সবচেয়ে বড় প্যাপিলা ।
এই লেকচারের পরের পেইজে যেতে নিচের …. তে ক্লিক কর।