
হালকা শীতের এমন দিনে ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে একটু অসাবধান হলেই। এ সময়ে আর ঠাণ্ডা লাগলেই হলো, বেশ কয়েকটা দিন যাবে যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে। ঠাণ্ডা লাগলে অনেকেই ওষুধ খাওয়া শুরু করেন, কেউ বা বেশ করে কমলা, চিকেন স্যুপ স্টক করে রাখেন বাড়িতে। এগুলোর চাইতেও কার্যকরী একটি উপায় আছে যাতে আপনার কষ্ট কম হবে, ঠাণ্ডাও চলে যাবে দ্রুত। সেই উপায়টি হলো বেশি করে পানি পান।
গলা খুসখুস করছে, নাক দিয়ে পানি পড়া শুরু করেছে সদ্যই। এমন সময়েই আপনার পানি পানের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। প্রতি ১-২ ঘণ্টায় এক গ্লাস করে পানি পান করতে ভুলবেন না। একবারে বেশি করে পানি পান করে পরে আবার ভুলে গেলে কিন্তু হবে না।
কারণ কী?
জিঙ্ক সাপ্লিমেন্ট, চিকেন স্যুপ, নাসাল স্প্রে- এগুলোর চাইতেও পানি পানের গুরুত্ব বেশি হবার কারণ কী? কারণটা শুনলে কারও কারও অস্বস্তি লাগতে পারে। আমাদের শরীর ঠাণ্ডার ভাইরাস দূর করার জন্য তৈরি করে সর্দি বা মিউকাস। শ্বাসনালী থেকে এই মিউকাস ভাইরাস মুখ দিয়ে বাইরে বের করে দেবার কাজটি করে। আমার পানি পান না করলে এই মিউকাস উৎপাদন যথেষ্ট হয় না। এক্ষেত্রে একটি উপদেশ হলো, ততটুকুই পানি পাঙ্কর যাতে আপনার মুত্র একটি হালকা হলদেটে রঙ হয়ে থাকে। রংটা গাড় হলে বুঝতে হবে আপনার আরও বেশি পানি পান জরুরী, Huffington Post কে বলেন Mayo Clinic এর ডক্টর প্রিটিশ টশ।
Daily Mail থেকে জানা যায়, গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে পানি যথেষ্ট পান করলে ঠাণ্ডা সেরে যায় দ্রুত। দিনে আট গ্লাস পানি পান না করলে ঠাণ্ডা, সর্দি এবং গলাব্যাথা বেড়ে যায়। পানি পান অব্যহত রাখলে নাকের ভেতর দিকটা আর্দ্র থাকে, ফুসফুসের ভেতরে খুব বেশি জার্ম, ধুলাবালি ঢুকতে পারে না। বেশি করে পানি পান করার ফলে ইনফেকশন কম হয়, মাথাব্যাথা এবং ত্বকের সমস্যাও কম হয়। এই গবেষণার সাথে সংশ্লিষ্ট ডক্টর লুইস জানান, একেবারে বিশুদ্ধ পানি আট গ্লাস পান করা উচিৎ দৈনিক। ফলের পাতলা রসও চলবে, তবে এটা বেশি পান করা উচিৎ নয় কারণ এগুলোতে চিনি থাকে অনেকটা। ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল শরীর থেকে পানি বের করে দেয় তাই এগুলোও খুব একটা কাজের নয় এক্ষেত্রে।
ঠাণ্ডা কমাতে আরও একটি কাজ উপকারী, আর তা হলো ঘুম। ঘুম আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। রাত্রে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানোটা ঠাণ্ডা কমানোর জন্য কাজে আসে। যারা সাধারণত কম ঘুমান তাদের ঠাণ্ডা বেশি লাগে। আর ঘুমানোর সময়ে মিউকাস শরীর থেকে ভাইরাস এবং ইনফেকশন বের করে দিতে সাহায্য করে।
দেখে নিন ঠাণ্ডা কমাতে কার্যকরী আরও কিছু উপায়:
– লবণপানি দিয়ে গার্গল করে গলা পরিষ্কার
– নাসাল স্যালাইন ড্রপ দিয়ে নাক পরিষ্কার
– কুসুম গরম পানি, স্যুপ, চা, আপেলের জুস পান
– ভিটামিন সি
– গরম পানিতে শাওয়ার
– স্বাস্থ্যকর খাবার খান
– ঠাণ্ডা লাগার পর অন্যদের থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকুন, এটি ৫ দিন পর্যন্ত ছোঁয়াচে থাকে