
অনলাইন ভর্তির অনেক তথ্যই তোমরা জেনে গেছো। প্রথম ব্যাচ হিসেবে আমাদের জন্য নতুন হলেও তোমাদের জন্য সেরকম নয়। তাই ভয়, হতাশার কিছুই নেই। একটু ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এই যা।
আমাদের সময় প্রথম মেধাক্রমের জন্য চয়েসলিস্ট দিতে হতো ৫টি এবং দ্বিতীয় মেধাক্রমের জন্য ১০টি। তোমরা লাকি। কারণ তোমাদের প্রথম মেধাক্রমের জন্য পছন্দক্রমে ১০ টি কলেজ দেওয়ার সুযোগ আছে। যারা ঢাকা বা চট্টগ্রাম, কুমিল্লায় পড়তে চাও তারা অনায়াসে অনেকগুলো ভালো কলেজ চয়েস দিতে পারো।
তবে হ্যাঁ, তোমার জিপিএ যদি কম হয় তবে লিস্টটা এমন ভাবে করবে যেন দ্বিতীয় মেধাক্রমের জন্য হাপিত্যেশ করতে না হয়। আসলে ঝামেলা যত এড়ানো যায় ততই ভালো। কারণ যখন দেখবে তোমার বন্ধুরা সব মোটামুটি ভর্তির প্রিপারেশন নিচ্ছে সেখানে তোমার কলেজ নির্ধারণই হয়নি তখন একটা দুশ্চিন্তা, হতাশা আর অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। কি দরকার?
হায়ারম্যাথ, বায়োসহ জিপিএ ৫ না হলে দশটা চয়েসই নামকরা কলেজ দিতে যাবে না। ৬-৭ টা ভালো কলেজ দিয়ে বাকিগুলো মোটামুটি মানের বা স্থানীয় একটা কলেজ দিয়ে রাখবে। পরে প্রয়োজনে খোঁজখবর নিয়ে মাইগ্রেশনের আবেদন করবে।
আবারো বলি চয়েসলিস্ট দিতে সাবধান
তোমার প্রায়োরিটি অবশ্য থাকবে ভালো কলেজগুলো। যদিও ঢাকায় কাছাকাছি মানের অনেক কলেজ আছে। প্রত্যেক কলেজ একটা ন্যূনতম জিপিএ চাহিদা দিয়েছে। নিচে ইশিখন.কম এর লিস্ট দেখ। নেট থেকে কালেক্ট করবে। জিপিএ কম হলে ভিকারুননিসা চয়েস দিয়ে একটা চয়েস নষ্ট করার প্রয়োজন নেই। ওরা বাইরে থেকে স্টুডেন্ট নেয় নগন্য।
এখন কথা হলো মফস্বলের অনেকেরই ঢাকার কলেজ সম্পর্কে আইডিয়া নেই বললেই চলে। যেমন আমি নিজেই চয়েস দেওয়ার আগে আমার কলেজের নাম শুনিও নি নটরডেম, ভিকারুননিসা, হলিক্রস এসবই যেটি একটু জানতাম। তবে বর্তমানে ইশিখন.কম ও অনলাইনে সকল তথ্য সহজেই পাওয়া যাচ্ছে।
NDC, সেইন্ট জোসেফ, HCC তে যেহেতু ভর্তিপরীক্ষা হয়, আর VNC বহিরাগত স্টুডেন্ট খুবই কম নেয় তাই এগুলো বাদে ভালো কলেজ হলো (সাইন্স)- রেসিডেন্সিয়াল মডেল (বয়জ), সিটি কলেজ, নূর মোহাম্মদ রাইফেলস, মুন্সী আবদুর রউফ, আদমজী ক্যান্ট, শহীদ আনোয়ার (গার্লস), রাজুক, ঢাকা কলেজ (বয়জ), বিএএফ শাহীন, মতিঝিল আইডিয়াল, গভর্নমেন্ট ল্যাব (বয়জ), বিএন কলেজ ইত্যাদি।
মোটামুটি ভালো বিসিআইসি, মতিঝিল মডেল, ন্যাশনাল আইডিয়াল, সরকারি বিজ্ঞান, পুলিশস্মৃতি, মণিপুর, ধানমন্ডি আইডিয়াল, বদরুন্নেসা (গার্লস), অগ্রনী, (গার্লস) উদয়ন, আজিমপুর গার্লস, সামসুল হক খান প্রভৃতি।
কমার্স- ঢাকা কমার্স কলেজ, সিটি কলেজ, মতিঝিল আইডিয়াল, মণিপুর ইত্যাদি। আর্টস সম্পর্কে আপুর নাইডিয়া (দুঃখিত)। ঢাকার কোন কলেজে ভর্তিতে কত জিপিএ দরকার তার বিস্তারিত লিস্ট ইশিখন.কম এ রয়েছে।
ঢাকা বিভাগের সকল কলেজের ভর্তির সর্বনিম্ন জিপিএ দেখে নাও
চয়েসলিস্ট সম্পর্কে নিজের মনে কোনো খুঁতখুঁতে ভাব রাখবে না -ইশ ওটা করলে ভালো হতো, এটা দেইনি কেন ইত্যাদি। এই ভুলটা আমি করেছিলাম। ফার্স্ট চয়েস বাদে বাকিগুলো ওলটপালট করেছিলাম। সারারাত ভয়ে টেনশনে কেঁদে কেটে অস্থির হয়ে গিয়েছিলাম। তবে আল্লাহর রহমতে ফার্স্ট চয়েসই এসেছে।
এই পদ্ধতিতে প্রথমত সব কলেজই ভালো জিপিএধারী স্টুডেন্টদের দিকে ঝোঁকে। তবে এরপর আসন খালি থাকলে পুনরায় স্টুডেন্ট নেয় তাই চোখ কান খোলা রাখতে হবে, (ইশিখন.কম এর নিয়মিত আপডেট দেখতে হবে।) তাছাড়া দ্বিতীয় মেধাক্রম তো থাকছেই। কোনোভাবেই নার্ভাস হবে না। কোনো সমস্যা হলে এক্সপেরিয়েন্সড কারো কাছে পরামর্শ নিবে।
মোবাইলে ম্যাসেজ পাঠানোর চেয়ে অনলাইন আবেদন করা ভালো। টাকা সময় দুটোই বাঁচবে। ভুলের সম্ভাবনাও কম। ইশিখন.কম এ অনলাইন ভর্তির আবেদনের সকল নিয়ম স্ক্রিনশটসহ দেওয়া আছে। এখান থেকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নিয়ম দেখে নাও এছাড়াও ফর্ম নির্ভুলভাবে পুরণ করার জন্য ইশিখন.কম এ বছর থেকে নিজেরাই শিক্ষার্থীদের ফর্মপুরণ করে দিচ্ছে। এখানে যদি করতে না চাও তবে ভালো কোনো কম্পিউটারের দোকানে বড় কাউকে নিয়ে গিয়ে করবে। (দোকানদার বেটার পরামর্শ নিও না দেইখো) বেশি তাড়াহুড়ো করবে না। সময় নিয়ে ধীরে সুস্থে করবে। আবার কে কি করে দেখতে গিয়ে লাস্ট ডেটের জন্য ফেলে রেখো না।
নামজাদা কলেজে সবাই পড়তে চায়। ভালো টিচার, ল্যাব ফ্যাসিলিটিজ, ক্যাম্পাস, থাকার সুবিধা এসব দিক দিয়ে ভালো এমন কলেজ প্রায়োরিটি দিবে। তবে পছন্দসই কলেজ না এলে একেবারে হতাশ হয়ে পড়ার প্রয়োজন নেই।
কলেজের লাইব্রেরি চিনার আগেই কলেজ লাইফ শেষ হয়ে যায় (আমার হয়েছে)। কলেজ কলেজ করে মাথা নষ্ট করো না। ভালো কলেজ থেকেও ফেইলের রেকর্ড আছে, আবার সাধারণ কলেজ থেকেও ভালো করার নজির আছে। নিজের সর্বোচ্চ দেওয়ার চেষ্টা করবে যেখানেই থাকো। লক্ষ্য হবে অ্যাডমিশন।
All the best my juniors.
– Nur E Taj Jahan
ভর্তি পরীক্ষার্থী ২০১৭
বীরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ