
ওয়ার্ডপ্রেস থিম কি?
প্রাথমিকভাবে ওয়ার্ডপ্রেস থিমকে শুধু সাইটের বা ওয়েবব্লগের বাহিরের রূপ/অবয়ব/চেহারা বলা হয়। ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের টেমপ্লেট পরিবর্তন করার পরেও এটিকে শুধুমাত্র আপনার ওয়েবব্লগের চেহারার পরিবর্তন হিসেবেই জানবেন। ওয়ার্ডপ্রেসের একটি টেমপ্লেট ব্যবহার করে আপনি আপনার সাইটের সব কনটেন্টকে আপনার ইচ্ছাধীন নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম হবেন। একটি ওয়ার্ডপ্রেস থিম অনেকগুলো ফাইল ব্যবহার করে তৈরী হয়, যেগুলোর সমন্বয়য়ে আপনার সাইটে ব্যবহৃত থিমটি গ্রাফিকাল চেহারা পায়। যেমনঃ টেম্পলেটের জন্য প্রয়োজনীয় ইমেজ ফাইল। থিমটির কাঠামোকে ধরে রাখতে স্টাইল সীট(style.css) ফাইল, এবং এইচটিএমএল (.html) এবং পিএইচপি(.php) এর সমন্বয়য়ে ফ্যাংশনাল ফাইল। এককথায়, ইমেজ, স্টাইল এবং ফ্যাংশনাল ফাইলের সমন্বয়য়ে আপনার ওয়েবসাইট/ওয়ে্বব্লগ এর কনটেন্টকে পাঠক বা গ্রাহকের সামনে দৃষ্টিনন্দন করে তুলে ধরার জন্য ওয়েবসাইট/ওয়েবব্লগ এর যে অবয়ব তৈরী করা হয় সেটাই থিম।
আরো দেখুন:ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজেশন
ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট শেখার আগে আপনাকে জানতে হবে-
ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট শুরু করা বা শেখার আগে থেকেই কিছু কাজ আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে।
- এইচটিএমএল।
- সিএসএস।
- জাভাস্ক্রিপ্ট।
- জেকুয়েরি।
- বুটস্ট্র্যাপ।
- পিএসডি টু এইচটিএমএল।
- বেসিক পিএইচপি।
- ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটলেশন।
আরো দেখুন: কোথা থেকে শিখবেন ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভলপমেন্ট
ওয়ার্ডপ্রেস থিমের বর্তমান চাহিদা-
ওয়ার্ডপ্রেসে সহজেই সবকিছু করা যায় বলে বিশ্বব্যাপী এই কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম(সিএমএস) এর চাহিদা অনেক বেশি। ছোট এবং মাঝারি ব্যবসা থেকে শুরু করে বড় বড় কর্পোরেট এবং বহুজাতিক কোম্পানিগুলোও এখন ওয়ার্ডপ্রেস (সিএমএস) দিয়ে নিজেদের ওয়েবসাইট তৈরি করছে। আর এ কারণেই ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপারদের চাহিদা বাড়ছে দিন দিন বাড়ছে! বাংলাদেশী অনেক ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার রয়েছেন যারা ফ্রিল্যান্সার এবং ওডেস্ক সহ বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে ঘন্টায় ৩০ থেকে ৪০ ডলার রেটে কাজ করে থাকেন। একজন ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার কাজ শুরু করতে পারেন ন্যূনতম ১০ থেকে ১২ ডলার প্রতি ঘন্টা রেটে। অর্থ্যাৎ দিনে যদি কেউ ৮ ঘন্টা কাজ করেন তবে একজন ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপারের প্রাথমিক আয় শুরু হবে প্রতি দিন ৮০ থেকে ১০০ ডলার, মাসে ৩ হাজার ডলার। এ তো গেল ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোর কথা, আবার একজন ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার চাইলে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ না করে নিজস্ব ওয়ার্ডপ্রেস প্রোডাক্ট তৈরি করেও বিশাল আন্তর্জাতিক বাজার তৈরি করে নিতে পারেন। যেমন ওয়ার্ডপ্রেস থিম তৈরি করেও সেগুলো বিক্রি করতে পারেন বিভিন্ন থিম মার্কেটপ্লেসে। থিম বিক্রির জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস থিমফরেস্টের কর্পোরেট ক্যাটেগরির শীর্ষ বিক্রি হওয়া থিমগুলোই একবার দেখুন, কি পরিমাণ রেভুন্যু এসেছে একেকটা থিম থেকে
আরো দেখুন: ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন কি?
এক ‘ইউ ডিজাইন’ থিম টা-ই বিক্রি হয়েছে ৮ কোটি টাকা!! এখনও প্রতিদিনই বিক্রি হচ্ছে এ থিমটি। এর পরের থিমগুলোও বিক্রি হয়েছে ৬ কোটি টাকা-৭ কোটি টাকা!! একবার ভেবে দেখুন, এক থিম ডেভেলপ করে ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপাররা কি পরিমাণ টাকা আয় করছে। থিম বিক্রির এ মার্কেটপ্লেসে থিম বিক্রির গড় হার ১০ লাখ টাকা করে। অর্থ্যাৎ সময় এবং নিজের ক্রিয়েটিভিটিকে কাজে লাগিয়ে থিম তৈরি করেও বিপুল পরিমাণ আয় করার সুযোগ আছে।
ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজেশন-
“Themes” সাবমেনুর পর “Customize” সাবমেনু থেকে নির্বাচিত থিমের রং, সার্চ বক্স কোথায় দেখাবে, বামে কি থাকবে, ক্যালেন্ডার থাকবে কিনা, থিমটিতে মেনু কিভাবে থাকবে, সম্প্রতি করা পোস্টগুলি কোথায় দেখাবে ইত্যাদি ২০/২৫ ধরনের জিনিসপত্র এখান থেকে ঠিক করে দেয়া যায়। নিচে কয়েকটির উদাহরন দেয়া হল: “Site Titile & Tagline” স্লাইডার থেকে ইনপুট বক্সদুটি পুরন করলে টেক্সক্টগুলি সাইটের টাইটেল হয়ে যাবে এবং ব্রাউজারে দেখাবে। আপনি যদি চান কোন টাইটেল না দেখাক তাহলে
- Site Title & Tagline” চেকবক্সটি আনচেক করে দিন।
- “Color” স্লাইডারটি খুলে সেখান থেকে পুরো সাইটের ব্যাকগ্রাউন্ড এর রং কেমন হবে সেটা ঠিক করা যায় এছাড়া টাইটেল এরও রং ঠিক করে দেয়া যায়, ব্রাউজারে তো টাইটেল এর রং দেখাবেনা তবে পেজে যখন দেখবে তখন রং দেখতে পাবে।
- “Header Image” এখান থেকে সাইটের ফ্রন্টইন্ডের উপরে (হেডারে) যেকোন ছবি যোগ করতে পারেন, ব্যানারের মত। ১২৬০ x ২৪০ এই রেজুলেশনের ছবি দিলে সবচেয়ে ভাল মানানসই হবে। “Add ne image” বাটনে ক্লিক করে নতুন ছবি যোগ করতে হয়।
- “Background Image” থেকে সাইটে চাইলে কোন ব্যাকগ্রাউন্ড ছবি দেখাতে পারেন। “Select Image” থেকে যে ছবি সিলেক্ট করে দিবেন সেটাই সাইটের ব্যাকগ্রাউন্ড হিসাবে দেখাবে।
- “Widgets” টা গুরত্বপূর্ন। সাইটের ডানে বামে যেসব সাইডবার কিংবা ফাংশনালিটি দেখছেন এগুলি এক একটি উইজেট। যেমন সার্চ বক্স, Categories, সাম্প্রতিক মন্তব্য, আর্কাইভ বা সংগ্রহশালা, সম্প্রতি যোগ করা পোস্টগুলি ইত্যাদি। “Widgets” এ ক্লিক কর আবার ৩টি স্লাইডার আসবে। বাই ডিফল্ট ওয়ার্ডপ্রেসে যেসব উইজেট আছে সেগুলি এই ৩টি স্লাইডারে ক্লিক করে কাংখিত স্থানে বসাতে পারবেন। ৩টিতেই একই উইজেট পাবেন, ৩টি স্লাইডার বানানোর উদ্দেশ্য হল ৩টি জায়গায় এগুলি বসানো যাবে। যেমন “Primary Sidebar” থেকে সিলেক্ট করলে সেই উইজেট টি বামেদিকে, “Content Sidebar” থেকে যোগ করলে সেটা কনটেন্টে এবং “Footer Widget Area” থেকে দিলে ডানের সাইডবারে স্থাপন হবে। এই ৩টি স্লাইডারের স্থান পরিবর্তন করে যেকোন জায়গায় নেয়া যায় এমনকি নতুন স্লাইডার বানানো যায় তবে এগুলি থিম ডেভেলপমেন্টের সময় দেখাবো।
ওয়ার্ডপ্রেস থিম ইনস্টল
ওয়ার্ডপ্রেসের হাজার হাজার ফ্রি থিম পাওয়া যায়। গুগলে এ সার্চ দিয়ে ইচ্ছেমত একটি থিম ডাউনলোড কর। ”Appearance” থেকে “Themes” সাবমেনুতে গেলে “Add New” তে ক্লিক করলে নতুন থিম যোগ করার উইন্ডো আসবে। এই উইন্ডো থেকে “Upload Theme” ক্লিক করে নিজের থিমটি সিলেক্ট করে দিন এবং “Install Now” তে ক্লিক করে নতুন থিম ইনস্টল কর। একবার থিম ইনস্টল করলেই ডিফল্ট থিমগুলির তালিকার সাথেই নতুন থিমটি দেখাবে এবং সেখানে মাউস নিয়ে গেলেই “Activate” লিংক পাবেন। ইচ্ছেমত অনেক থিম ইনস্টল এবং Activate করে সাইটের ফ্রন্টইন্ড দেখুন সম্পূর্ন পরিবর্তন হয়ে গেছে। ফ্রি থিমে যদি নিজের সব কাজ না হয় তখন নিজে নিজে তৈরী করতে হবে। এজন্য থিম ডেভলপমেন্ট শিখতে হবে। এইচটিএমএল, সিএসএস আর অল্প পিএইচপি জানলেই নিজে নিজে থিম তৈরী করা যায়। অথবা আপনি চাইলে থিমফরেস্ট থেকেও প্রিমিয়াম থিম কিনতে পারেন।
কোথা থেকে শিখবেন ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভলপমেন্ট-
বর্তমানে ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভলপমেন্ট শেখায় এরকম অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যেখান থেকে আপনি থিম ডেভলপমেন্ট কোর্সটি করতে পারেন। তবে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে সব ট্রেইনিং সেন্টার সঠিকভাবে টিকে থাকতে পারছে না। এক্ষেত্রে আপনি ইশিখন থেকে ঘরে বসে অনলাইনে লাইভ ক্লাসের মাধ্যমে থিম ডেভলপমেন্ট কোর্সটি করলে উপকৃত হবেন। কারণ- ইশিখনে রয়েছে দীর্ঘদিন বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস অথবা কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে এমন কিছু প্রফেশনাল ট্রেইনার। ইশিখন থেকে কোর্স করলে যারা হবে আপনার ট্রেইনার। এছাড়াও ইশিখন থেকে কোর্স করলে আপনি অন্যান্য যেসকল সুবিধাসমূহ পাবেন।
আরো দেখুন:ওয়ার্ডপ্রেস থিম কি?
কারা শিখতে পারবেন ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট-
- যারা ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চান।
- অনলাইন উদ্যোক্তা বা আইটি স্পেশালিস্ট হতে চান।
- যাদের কোডিং এ আগ্রহ রয়েছে।
- যারা পড়াশুনার পাশাপাশি পার্টটাইম কিছু করে পড়াশুনা চালিয়ে নিতে চান।
ইশিখনে ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট এর বিশেষ সুবিধা-
- লাইভ ক্লাস মিস করলে পরের দিন কোর্সের ভেতর উক্ত ক্লাসের ভিডিও রেকর্ডিং ও আলোচিত ফাইল সমুহ পাবেন।
আরো দেখুন:ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজেশন
- লাইভ ক্লাসের সম্পূর্ণ ফ্রি ভিডিও কোর্স, ( শুধুমাত্র এই ভিডিও কোর্সই অনেক প্রতিষ্ঠান হাজার হাজার টাকায় বিক্রি করে।)
- প্রতিটি ক্লাস শেষে এসাইনমেন্ট জমা দেওয়া। (প্রতিটি এসাইনমেন্ট এর জন্য ১০ মার্ক)
- ক্লাসের লাইভ ক্লাসের পাশাপাশি প্রাকটিজ ফাইল পাবেন এবং কনটেন্ট পাবেন।
- প্রতিটি ক্লাসের প্রথম ১৫ মিনিট আগের ক্লাসের সমস্যাগুলো সমাধান হবে, পরের ১ ঘন্টা মুল ক্লাস শেষ ১৫ মিনিট প্রশ্নোত্তর পর্ব প্রতিটি
- ক্লাসের শেষে ১০ নাম্বারের মডেল টেস্ট। এই মডেল টেস্ট মার্ক এবং এসাইমেন্ট মার্ক ও নিয়মিত উপস্থিতির উপর ভিত্তি করেই পরবর্তীতে আপনার সার্টিফিকেট এর মান নির্ধারণ হবে।
- কোর্স শেষে সার্টিফিকেট
- লাইভ ক্লাস সমুহের ডিভিডি ।
ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট শিখতে যা লাগবে-
- ইন্টারনেট কানেকশসহ একটি কম্পিউটার
- কম্পিউটার ও ইন্টারনেট এর প্রাথমিক ধারণা
- একটি হেডফোন (ল্যাপটপ হলে হেডফোন আবশ্যক নয়)।
আরো দেখুন:কোথা থেকে শিখবেন ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভলপমেন্ট
ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট কোর্স শেষ করার পর আয় করবেন যেভাবে:
- আপওয়ার্ক , ফাইভর এনভাটো মার্কেটে টেমপ্লেট বিক্রি।
- ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে যেকোন আইটি কম্পানিতে চাকরি।
- আপওয়ার্ক ও ফাইবারে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সর্ম্পকিত কাজ।